সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড! বঙ্গোপসাগরে অবস্থিত পৃথিবীর অন্যতম গভীরতম খাদ। চাইলে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড। একসঙ্গে দেখে আসতে পারেন ইরাবতী ডলফিল, ইমপ্লাস ডলফিন ও ইন্দো-প্যাসিফিক ডলফিন। এমনকি দেখা মিলতে পারে তিমিরও।
ইতিহাস: বঙ্গোপসাগরের তলায় পাইটোসিন যুগে (প্রায় ১,২৫,০০০ বছর আগে) তৈরি হয় গভীর উপত্যকা বা মেরিন ভ্যালি। এর নাম সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড দেয় ব্রিটিশরা। বিশ্বের অন্যতম ১১টি গভীর খাদগুলোর মধ্যে সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড অন্যতম। গভীরতম এই উপত্যকার আয়তন প্রায় ১৩৪০ মিটার। এই ডুবো গিরিখাত বঙ্গ পাখার অংশ, যা বিশ্বের বৃহত্তম ডুবো গিরিখাত।
অবস্থান: সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড শুরুর স্থান থেকে পানির গভীরতা হঠাৎ করেই অনেক বেশি। এর অবস্থান সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে। বঙ্গোপসাগরে প্রায় ৩,৮০০ বর্গ কিলোমিলোমিটার এলাকা জুড়ে। এর তলদেশে রয়েছে কাদা মোশানো বালি যার ঘনত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। পানির রং সম্পূর্ণ আলাদা, যা দেখেই সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডের এলাকায় বুঝা যায়। এই জায়গাকে জেলেরা ‘নাই বাম’ বলেও ডাকে। কারন তারা বাঁশের হিসাব ‘বাম’ অনুযায়ী সাগরের হিসাব করে। এই স্থানের কোনো হিসাব তাদের কাছে না থাকায় ‘নাই বাম’ বলে ডাকে।
যা দেখবেন
সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ডে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। তবে, এটি সামুদ্রিক প্রাণীর অভয়ারণ্য। এখানে তিমি, ডলফিন, পপাস, ইরাবতী ডলফিল, ইমপাস ডলফিন , ইন্দো-প্যাসিফিক ডলফিন পাওয়া যায়। সোয়াচ অফ নো গ্রাউন্ড পৃথিবীর একমাত্র জায়গা যেখানে ইরাবতী ডলফিল, ইমপাস ডলফিন, ইন্দো-প্যাসিফিক ডলফিন একসঙ্গে দেখা যায়। কথিত আছে, ১৮৬৩ সালে গ্যাডফ্লাই নামে একটা ২১২ টন ওজন বিশিষ্ট গানবোট ভারত থেকে ইংল্যান্ডে বিপুল পরিমাণ ধনরত্ন নিয়ে যাওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি মংলা। সেখান থেকে প্রতিদিনই মাছ ধরার ট্রলার যায় সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে। জেলেদের সাথে কথা বলে ওঠে যেতে পারেন যে কোনো ট্রলারে। সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডের নির্দিষ্ট এলাকায় রাতে মাছ ধরার ট্রলারগুলো অবস্থান করে। চাইলে রাত কাটিয়ে আসতে পারেন। তবে ট্রলার ঠিক করার আগে বিস্তারিত কথা বলে নিতে ভুলবেন না।