ভূমিকম্পে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ৮০ মিলিয়ন মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও ময়মনসিংহ, সিলেট এবং রংপুর এলাকায় ২৮ মিলিয়ন মানুষের জীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরেই ১২টি ভূমিকম্প ফাটল আছে৷ এ সব জায়গায় ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে৷ ঢাকার অদূরে মধুপুর ফাটল খুব বিপজ্জনক৷ প্রতি ১০০ বছর পর পর ফাটল থেকে বড় আকারের ভূমিকম্প হয়৷ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্প হয়েছে৷ তাই আরেকটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বাংলাদেশ।
রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে আর তার কেন্দ্র ঢাকার চারপাশের এলাকা হলে রাজধানীর ৭২ হাজার ভবন পুরোপুরি ধসে পড়বে, ধারণা বিশেষজ্ঞদের৷ তাঁদের মতে, এমন ঝুঁকি থাকলেও ক্ষয়ক্ষতি মেকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেই৷ শুধু বিল্ডিং কোড মেনে ভবন করলেই হবে না, যেই মাটিতে ভবন নির্মাণ করা হবে সেই মাটিও সহনীয় হতে হবে। কারণ অনেকেই জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণ করে। এটা ঠিক নয়। কারণ ওই জলাশয়ের উপর ভবন নির্মাণ করলে ভূমিকম্প হলে এটি ঝুঁকির মধ্যে থেকে যায়। তাই প্রস্তুতি এবং বিল্ডি কোড মেনে ভবন নির্মাণ করলে অনেক ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ২০০৯ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে ভবনগুলো নিয়ে জরিপ করা হয়৷ তাতে দেখা যায় যে, আগামীতে যদি ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয় তাহলে তিন লাখ ২৬ হাজার ভবনের মধ্যে ৭২ হাজার ভবন তাৎক্ষণিকভাবে ধসে পড়ব৷ একেবারে অক্ষত থাকবে খুব কম সংখ্যক ভবন৷ এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির লাইনে বিস্ফোরণ ঘটে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে৷ ঘটবে মানবিক বিপর্যয়ও৷
২০১০ সালের জানুয়ারিতে হাইতি সাত দশমিক শূন্য মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তাতে তিন লাখ মানুষ প্রায় হারায়। একই বছরের ফেব্রুয়ারিতে চিলিতে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। কিন্তু সেখানে মাত্র ৫৬২ জন মানুষ প্রাণ হারায়। পরিকল্পিত ভবন নির্মাণের কারণেই চিলিতে মানুষ মুত্যু অনেক কম হয়। কারণ ১৯৬০ সালে চিলিতে ৮ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই থেকে তারা মাস্টার প্লান করে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করেছে। এ কারণে হাইতির চেয়ে অনেকগুণ কম মানুষ মারা গেছে। এভাবে আমরাও যদি প্রস্তুতি না নেই তাহলে ঝুঁকি থেকে যাবে।