হজবিষয়ক এই তথ্যগুলো জানেন কি? তিন প্রকারের হজের নিয়মকানুন

Author Topic: হজবিষয়ক এই তথ্যগুলো জানেন কি? তিন প্রকারের হজের নিয়মকানুন  (Read 1574 times)

Offline Md. Monir Hossain

  • Newbie
  • *
  • Posts: 22
  • Test
    • View Profile


* হজ ইসলামের পঞ্চম রুকন।
* হজ ফরজ হয় ষষ্ঠ হিজরিতে।

* হজ অর্থ ইচ্ছা বা সঙ্কল্প করা।

* হজের ফরজ তিনটি।

* ওমরাহর ফরজ দু’টি।

* হজের ওয়াজিব পাঁচটি।

* হজের মিকাত পাঁচটি।

* মিকাত হলো- যে স্থান থেকে হজ ও ওমরাহর জন্য ইহরাম বাধা হয়।

* হজ তিন প্রকার (কিরান, তামাত্তু, ইফরাত)।

* সাফা ও মারওয়া- মক্কার দু’টি বিখ্যাত পাহাড় (হজের সময় সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ের মধ্যে দৌড়ানো ফরজ)।

* ধনী ব্যক্তির ওপর সারা জীবনে একবার হজ করা ফরজ।

* মহিলা হজযাত্রীদের পুরুষের মতো ইহরামের পৃথক সেলাইবিহীন কাপড় পরতে হয় না। তারা স্বাভাবিক কাপড়ের ওপর বোরখা পরবে এবং মুখমণ্ডল বোরখার পর্দা দিয়ে এমনভাবে আবরণ করবেন, যাতে এ পর্দার কাপড় মুখমণ্ডলে না লাগে। নতুবা ওজর হিসেবে মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রাখতে হয়। একালে যেহেতু মহিলাদের প্রায়ই হজে ইসলাম ধর্মের কঠোর নির্দেশ পর্দা করার ব্যাপারে শৈথিল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেখানে ইহরামের সময় বিশেষ ব্যবস্থায় মুখমণ্ডলে আবরণ রাখতে হয়ত বা কদাচিৎ পরিলক্ষিত হবে। ইহরাম পরার নিয়ম- ইহরামের দুই রাকায়াত নামাজ, নিয়ত, লাব্বায়িক দোয়া, ইহরাম অবস্থায় করণীয়-বর্জনীয় দীর্ঘ বর্ণনা, তাওয়াফের নিয়ম, ছায়ীর নিয়ম ও পাঁচ দিনব্যাপী হজ কার্যক্রমের নিয়ম ইত্যাদি বিবরণ ও দোয়া পত্রপত্রিকায় অল্প পরিসরে দেয়া সম্ভব নয়। বাজারে বিভিন্ন লেখকের হজের বই ও কিতাব পাওয়া যায়। কাজেই এক বা একাধিক হজের বই ক্রয় করে অনায়াসে হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতের বিস্তারিত বিবরণ ও দোয়া দরুদ জেনে ও শিখে নেয়া যায়।

হজ তিন প্রকার। কিরান, তামাত্তু, ইফরাদ। এর মধ্যে আফজল বা উত্তম হলো কিরান হজ। তারপরের স্থানে তামাত্তু হজ। এরপর হলো ইফরাদ হজ। তবে বাংলাদেশী সামান্যসংখ্যক হজযাত্রী বাদে বাকি সরকারি-বেসরকারি সব হজযাত্রী তামাত্তু হজই করে থাকেন। কারণ তামাত্তু হজ দুই প্রকারের হজ থেকে সহজতর। যারা কারো বদলি হজ করতে যান, তারা সাধারণত ইফরাদ হজই করেন। আর যারা আগে হজ করেছে বা বেশি নেক আমল প্রত্যাশী এমন কিছু লোক কিরান হজ করে থাকেন। কিরান হজের বেলায় মিকাতের স্থান থেকে একসাথে হজ ও ওমরাহর ইহরাম বেঁধে পবিত্র মক্কা পৌঁছে ওমরাহ করে তথা ওমরাহর আহকাম শেষ করে ইহরাম অবস্থায় হজের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এরই মধ্যে সুন্নত তাওয়াফ তাওয়াফে কুদুম করে সাথে ছায়ী করে নিলে ১০ তারিখ ফরজ তাওয়াফের পর আর ছায়ী করতে হবে না। হজের আহকামে একবার ছায়ী করা ওয়াজিব। তেমনি ওমরাহর বেলায়ও তাওয়াফের পর একবার ছায়ী করা ওয়াজিব। কিরান হজযাত্রীরা ৮ তারিখ মিনা, ৯ তারিখ আরাফাত, ৯ তারিখ দিবাগত রাত মোজদালিফায় হজের আহকাম শেষ করে ১০ তারিখ মিনায় বড় শয়তানের প্রতি সাতটি কঙ্কর নিক্ষেপ করে হজের কোরবানি তথা দমে শুকরিয়ার পর মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম খুলবেন। মহিলারা চুলের অগ্রভাগ সামান্য কাটবেন।

তারপর পবিত্র মক্কা গিয়ে ফরজ তাওয়াফ সেরে আবার মিনায় ফিরে আসবেন। ১১ তারিখ সূর্য পশ্চিম আকাশে প্রবেশের পর তিন শয়তানের প্রতি ২১টি এবং অনুরূপ ১২ তারিখ তিন শয়তানের প্রতি ২১টি কঙ্কর নিক্ষেপ করে মিনা থেকে পবিত্র মক্কা চলে আসবেন। কিরান হজে ওমরাহ ও হজ একই ইহরামে করতে হবে এবং সেই মতে, ওমরাহর ছায়ী ও হজের ছায়ী দুটি ছায়ী করতে হয়।

ইফরাদ হজ : ইফরাদ হজযাত্রী মিকাত স্থান থেকে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম করবেন। তারপর ইহরাম অবস্থান পবিত্র মক্কা পৌঁছে হজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকবেন এবং এরই মধ্যে একবার সুন্নত তাওয়াফ তাওয়াফে কুদুম করে ছায়ী করে নিলে ১০ তারিখ ফরজ তাওয়াফের পর আর ছায়ী করতে হবে না। তাওয়াফে কুদুমের পর ছায়ী না করলে ফরজ তাওয়াফের পর ছায়ী করতে হবে। ইফরাদ হজযাত্রীরা ৮ থেকে ১২ তারিখ কিরান হজযাত্রীর অনুরূপ হজের আহকাম শেষ করবেন। শুধু ১০ তারিখ রমির পর ইফরাদকারীর অন্য হজের কোরবানি ওয়াজিব নয়, মোস্তাহাব। ইফরাদ হজে ওমরাহ নেই, শুধু হজ।

তামাত্তু হজ : তামাত্তু হজযাত্রীরা মিকাত স্থান থেকে শুধু ওমরাহর নিয়তে ইহরাম করবেন। এরপর পবিত্র মক্কা পৌঁছে ওমরাহ সেরে মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম খুলে স্বাভাবিক অবস্থায় পবিত্র মক্কায় হজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকবেন। তারপর হজের সময় হজ উপলক্ষে ৮ তারিখ সকালে মিনা রওনা হওয়ার আগে পবিত্র মক্কা থেকে হজের নিয়তে ইহরাম করে নেবেন। তামাত্তু হজযাত্রীরা ৮ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত কিরান ও ইফরাদ হাজীর মতো হজের আহকাম সারবেন। শুধু পার্থক্য হলো- ১০ তারিখ রমির পর তামাত্তু হজযাত্রীকে কেরানের মতো হজের ওয়াজিব অঙ্গ দমে শুকরিয়া দিতে হবে। আর কিরান ও ইফরাদ হজের সুন্নত তাওয়াফে কুদুম করতে হয়, যা তামাত্তু হজে নেই। পুরুষ হজযাত্রী ইহরাম খুলতে মাথা মুণ্ডানো আফজল। তবে চুলের অগ্রভাগ সামান্য পরিমাণ কাটাও জায়েজ আছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে ইহরাম খুলতে কোনো ইহরামমুক্ত মাহরাম দ্বারা এক ইঞ্চি পরিমাণ চুলের অগ্রভাগ কেটে নেবেন।

বাংলাদেশীদের মিকাত আগে সাগরপথে ইয়ালামলাম পাহাড় এলাকা, যা জেদ্দার আগে পড়ে। কিন্তু বর্তমান আকাশপথে কারনুল মানাজিল হবে। আর পবিত্র মদিনা হয়ে এলে মিকাত পবিত্র মদিনার কাছে জুলহোলায়ফা নামক স্থান বর্তমান নাম বীরে আলী। কাজেই যারা চট্টগ্রাম-ঢাকা থেকে জেদ্দা হয়ে প্রথমে মক্কা যাবেন, তারা দেশে থাকতেই ইহরাম বেঁধে নেবেন। যেহেতু এয়ারক্রাফটের (বিমানের) ভেতর ইহরাম করা ঝামেলা হতে পারে।

আর যারা দেশ থেকে জেদ্দা হয়ে আগে পবিত্র মদিনা যাবেন, তারা পবিত্র মদিনা থেকে পবিত্র মক্কার উদ্দেশে রওনা হয়ে জুলহোলায়ফা মিকাত মসজিদে ইহরাম করে নেবেন।

যারা কিরান বা ইফরাদ হজ করেন, তারা অনেকটা হজ সম্বন্ধে অভিজ্ঞ বলা চলে। কিন্তু যারা তামাত্তু হজ করেন, তাদের বেশির ভাগই হজ সম্বন্ধে অনভিজ্ঞ; অর্থাৎ প্রায়ই প্রথম হজযাত্রী।

সাধারণত সরকারি-বেসরকারি বেশির ভাগ তামাত্তু হজযাত্রী আগে পবিত্র মক্কা যান। তারপর সময় থাকলে পবিত্র মদিনা জিয়ারতে যান। অথবা হজের পরে। যদি আপনি সরকারি হজযাত্রী হন, তবে ঢাকা হাজীক্যাম্প থেকে বিমানবন্দরে আরোহণের আগ মুহূর্তে ওমরাহর উদ্দেশে ইহরাম পরবেন। সে জন্য পুরুষদের ইহরামের কাপড় বড় লাগেজে না রেখে সাথে থাকা ছোট ব্যাগে রাখা দরকার, যাতে ইহরাম পরিধানে ইহরামের কাপড়ের সমস্যা না হয়। আপনি ইহরামের কাপড় পরে শরীর থেকে ব্যবহারের সব কাপড় খুলে মাথায় টুপি রেখে দুই রাকাত সুন্নাতুল ইহরাম নামাজ পড়ে মাথা থেকে টুপি নামিয়ে ফেলে ওমরাহর নিয়ত করে তিনবার লাব্বায়িক দোয়া পড়লে ইহরাম হয়ে যায়। ইহরাম অবস্থায় পবিত্র মক্কা পৌঁছে কাবা শরিফ সাত চক্কর তাওয়াফ করে তাওয়াফের ওয়াজিব দুই রাকায়াত নামাজ পড়ে মোলতাজেমে দোয়া করে জমজম কূপের পানি পান করে যেতে হবে সাফা পাহাড়ে। ওখানে ছায়ীর নিয়ত করে সাফা থেকে মারওয়া এভাবে সাতবার ছায়ী করে মাথা মুণ্ডন করবেন, মহিলারা চুলের অগ্রভাগ সামান্য কাটলে ওমরাহ হয়ে যায়। এরপর পবিত্র মক্কায় স্বাভাবিক অবস্থান করে ৮ তারিখ সকালে মিনা রওনা হওয়ার আগ মুহূর্তে হজের উদ্দেশ্যে পুনঃ ইহরাম পরিধান করবেন। তামাত্তু হজযাত্রীর আগেরবারের ইহরাম করতে নিয়ত ছিল ওমরাহর। এখন ইহরাম করতে নিয়ত হবে হজের।

আগেই উল্লেখ করেছি, ৮ থেকে ১২ তারিখ হজ কার্যক্রমে কিরান, তামাত্তু, ইফরাদ কোনো ব্যবধান নেই। শুধু ১০ তারিখ কিরান ও তামাত্তু হাজীদের ক্ষেত্রে হজের কোরবানি তথা দমে শুকরিয়া ওয়াজিব, যা ইফরাদের ক্ষেত্রে মুস্তাহাব। আর কিরান ও ইফরাদ হজে সুন্নত তাওয়াফ তাওয়াফে কুদুম করতে হয়, যা তামাত্তু হজে করতে হয় না। ইহরাম অবস্থায় মাথা উন্মুক্ত থাকবে। এমন কি যেকোনো নামাজে এবং রাতে নিদ্রায়ও।

মহিলা হজযাত্রীদের পুরুষের মতো ইহরামের পৃথক সেলাইবিহীন কাপড় পরতে হয় না। তারা স্বাভাবিক কাপড়ের ওপর বোরখা পরবে এবং মুখমণ্ডল বোরখার পর্দা দিয়ে এমনভাবে আবরণ করবেন, যাতে এ পর্দার কাপড় মুখমণ্ডলে না লাগে। নতুবা ওজর হিসেবে মুখমণ্ডল উন্মুক্ত রাখতে হয়। একালে যেহেতু মহিলাদের প্রায়ই হজে ইসলাম ধর্মের কঠোর নির্দেশ পর্দা করার ব্যাপারে শৈথিল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেখানে ইহরামের সময় বিশেষ ব্যবস্থায় মুখমণ্ডলে আবরণ রাখতে হয়ত বা কদাচিৎ পরিলক্ষিত হবে। ইহরাম পরার নিয়ম- ইহরামের দুই রাকায়াত নামাজ, নিয়ত, লাব্বায়িক দোয়া, ইহরাম অবস্থায় করণীয়-বর্জনীয় দীর্ঘ বর্ণনা, তাওয়াফের নিয়ম, ছায়ীর নিয়ম ও পাঁচ দিনব্যাপী হজ কার্যক্রমের নিয়ম ইত্যাদি বিবরণ ও দোয়া পত্রপত্রিকায় অল্প পরিসরে দেয়া সম্ভব নয়। বাজারে বিভিন্ন লেখকের হজের বই ও কিতাব পাওয়া যায়। কাজেই এক বা একাধিক হজের বই ক্রয় করে অনায়াসে হজ, ওমরাহ ও জিয়ারতের বিস্তারিত বিবরণ ও দোয়া দরুদ জেনে ও শিখে নেয়া যায়।

Source: www.dailynayadiganta.com/detail/news/244836

Offline fahad.faisal

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 734
  • Believe in Hard Work and Sincerity.
    • View Profile
Fahad Faisal
Department of CSE