কোন জাতি যদি জেনে থাকে কীভাবে বাঁচার মতন বাঁচতে হবে এবং জীবনের সমস্ত প্রফুল্লতা উপভোগ করতে হবে, তবে সেটি হলো জাপানিজেরা। তাদের গড় আয়ু হলো আশি বছর। অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় যেকোন ক্ষেত্রেই জাপান এগিয়ে আছে সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য বলুন, রুপচর্চা বলুন আর শিল্পের অগ্রগতিই বলুন সবক্ষেত্রেই তারা সেরা। কিন্তু তাদের সুন্দর স্বাস্থ্য ও সুগঠিত দেহের রহস্য কী?
স্থানীয় বিভিন্ন মানুষের ভাষ্যমতে, জাপানিজদের পানীয় থেরাপি বেশ জনপ্রিয়। এটি 'জাপানিজ ওয়াটার থেরাপি' কিংবা 'ওয়াটার কিউর থেরাপি' হিসেবেও পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে জাপানিজদের মধ্যে সুস্বাস্থ্য রক্ষার্থে এ থেরাপি বেশ প্রচলিত হয়ে উঠেছে।
জাপানিজ ওয়াটার থেরাপি কী
এটি এমন এক থেরাপি যেখানে কিছু সময় পর পর বিরতি দিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এটিকে 'হাইড্রোথেরাপি' বলা হয়। এর মাধ্যমে প্রাকৃতিকভাবে পেট পরিষ্কার হয় ও সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো থাকে। অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা বলেন, ঘুম থেকে ওঠার পর পরই খালি পেটে পানি পান করতে। সর্বোচ্চ ফলাফল পেতে হলে প্রতিদিন আপনাকে অবশ্যই সঠিক পরিমাণের পানি পান করতে হবে।
এটি খুব সহজ প্রক্রিয়া নয় কিন্তু মোটেও। কারণ ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস কিংবা দু'গ্লাস নয়, পর পর চার গ্লাস পানি পান করতে হবে আপনাকে। এবং অবশ্যই দাঁত মাজার পূর্বে। প্রায় ৬৪০ মিলিগ্রামের মতন পানি পান করতে হবে। পরবর্তী ৪৫ মিনিট আপনি কোন খাবার গ্রহণ করতে পারবেন না, কিছু সময় পরে সকালের নাস্তা করতে পারবেন।
সকালের নাস্তা খাবার আগেই যদি আপনি এতো পানি পান করেন তবে নিশ্চিতভাবে আপনি কম খাদ্য গ্রহণ করবে, এটিই স্বাভাবিক। অন্য সময়ে আপনি যেভাবে খান সেভাবেই খাবার ও পানি গ্রহণ করতে পারবেন, তবে খেয়াল রাখতে হবে দু'ঘণ্টা বিরতি দিয়ে যেন খাবার ও পানি গ্রহণ করা হয়।
জাপানিজ ওয়াটার থেরাপি শরীরের জন্য কীভাবে উপকারী?
জাপানিজ ওয়াটার থেরাপি ওজন কমাতে সর্বাত্মক সাহায্য করে। কারণ এর মাধ্যমে আমাদের শরীর যথাযথ পুষ্টি ও সতেজতা পায়। সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধাভাবও কমে যায় অনেকটা।
জাপানিজ লোকেরা বিশ্বাস করেন যে ওয়াটার থেরাপি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনি সুস্থ ও দীর্ঘ একটি জীবন লাভ করতে সমর্থ হোন। পেট পরিষ্কার করে হজমশক্তিও বাড়াতে সাহায্য করে ওয়াটার থেরাপি। একটি সুস্থ পাকস্থলী আপনার ক্ষুধা, পুষ্টি এবং রুচি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, আপনি স্বাস্থোজ্জ্বল ও দ্বীপ্তিময় ত্বকের অধিকারী হতে পারবেন কোন প্রচেষ্টা ছাড়াই।
উপরন্তু, এভাবে পানি পান করে ডায়েট কন্ট্রোল করার কোন সাইড ইফেক্ট নেই। এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবুও এক ধাক্কায় অতিরিক্ত পানি পান করে ফেললে 'ওয়াটার ইনটক্সিকেশন' সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং, আপনার শরীরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যতটুকু সম্ভব হয় ঠিক ততোটুকু পানিই পান করুন।
ধীরে ধীরে পানি পান করার মাত্রা বাড়াতে পারেন। পানি পান করার কথা আপনি মনে রাখতে না পারলে ফোনে রিমাইন্ডার দিয়ে রাখুন কিংবা অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনি পুরোটা দিন সতেজ ও প্রাণবন্ত থাকবেন।
দীর্ঘদিন ওজন কমানোর জন্য বিড়ম্বনা বোধ করছেন? চেষ্টা করে দেখতে পারেন 'জাপানিজ ওয়াটার থেরাপি'
সূত্র: The Health Orange