উঠানে বসে আছি। জ্যোৎস্নায় ভরা আকাশটা দেখে মনে হচ্ছে যেন অনেক বড় একটা কাঁচের নীল ফিসবোল কেউ উল্টো করে রেখেছে।
আর আমরা তার ভিতরে বসে আছি। তার মাঝে চাঁদ আলো বিলিয়ে চলেছে। প্রতিটা তারা আলাদা ভাবে স্পস্ট হয়ে জ্বলজ্বল করছে। মাঝে মাঝে দুই একটা কৃত্রিম উপগ্রহ ঘুড়ে চলেছে আকাশে। সেগুলোকেও তারা বলেই মনে হয়। কিছু তারা দেখে মনে হয় লাল রঙের। কিছু হলুদাভ বাকিরা চকচকে নীল। হঠাৎ করে কিছু তারা খসে পড়ে আকাশ থেকে। শুনেছিলাম এর অর্থ হল পৃথিবী থেকে কোন এক জনের বিদায়। মনে হয় এই আকাশ ভরা তারা গুলোর দিকে তাকিয়ে থেকেই জীবন পার করে দেয়া যাবে।
ভোরে ঘুম থেকে উঠে কিছু খেয়েই ঘুরতে বের হওয়া। কখনো বা খালের থেকেও চিকন হালোটে নৌকায় করে ঘুড়ে বেড়ানো। হালোটের উপরে আকাশের কাছে দুই পাড়ের বড় বড় গাছের ডাল; আলো আধারির চাঁদোয়া তৈরি করে রেখেছে। কি এক অদ্ভুত মায়াময় পরিবেশ। মনে হয় নৌকায় করে ভেসে চলেছি কোন এক স্বপ্নের দেশের ভিতর দিয়ে। সেই হালোট আঁকিয়ে বাঁকিয়ে চলে গেছে একেবারে বিশাল যমুনা নদীতে। যে নদীতে পৌঁছালে হঠাৎ করেই চোখ ঝলসিয়ে দিয়ে নৌকায় পড়ে এক রাশ সূর্যের আলো।
মনে পড়ে লঞ্চ থেকে নামলে আমাদের হেটে যেতে হত। লক্ষ্য থাকতো বড় দুইটা নারিকেল গাছ যে দিকে আছে সেই দিকে। যেখানে সন্ধ্যা হলে বিশাল একটি গাছ থেকে শয়ে শয়ে বাদুড় এক এক করে উড়ে যেতে থাকে। যেখানে তাল গাছের পাতায় ঝুলে থাকে বাবুই পাখীর বাসা। এক নাগাড়ে আমরা হেটে চলতাম আখ ক্ষেতের পাশের আইলের উপর দিয়ে।
যেখানে পৌঁছালে কিছু খেলায় মগ্ন ছেলে মেয়ে আনন্দে চিৎকার করতে করতে বাঁশ ঝাড়ের পাশ দিয়ে বাসার দিকে দৌড় দিত। এইটাই ছিল তাদের অভ্যর্থনার মাধ্যম।
(আমার ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে নেওয়া।)