লেখালেখি নিয়ে ভাবতেছিলাম। কিছুকিছু জিনিষ আছে যা লিখে বুঝানো সম্ভব নয়। সবুজ রঙ দেখতে কেমন এটা বোঝানো সম্ভব কেবল মাত্র গাছপালা বা সবুজ রঙয়ের কোন কিছুর তুলনা করে। যে
জন্ম থেকে অন্ধ তাকে আপনার লেখা পড়ে শুনিয়ে কিছুতেই কোন রঙ সম্বন্ধে ধারণাও দিতে পারবেন না। অর্থাৎ লেখালেখির মাধ্যমে সেই সব সম্পর্কেই ধারণা দেয়া যায় যেটা সম্পর্কে পাঠকের পূর্বের কিছু অভিজ্ঞতা আছে। কি যাতনা বিষে - বুঝিবে সে কিসে - কভু আশী বিষে - দংশেনি যারে। সাপের কামড় যে খায় নাই - সে এর ব্যাথা কি তা কখনো বুঝে না।
লেখার কাজ হল তুলোনা করার মাধ্যমে বোঝানো। কখনো বা কয়েগুণ বাড়িয়ে তার প্রখরতা বুঝিয়ে দেয়া।
আবার কিছু লেখায় বর্ণনা চলে আসে। একটি মুহূর্তের কথা ভাবুন। আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় প্রতি মুহূর্তে পাঁচটি জিনিষ অনুভব করতেছে। যে মুহূর্তের বর্ণনা করা হচ্ছে সে সময় কতটুকু আলো ও তা কেমন ছিল কতটুকু শব্দ ও তা শুনতে কেমন ছিল এইসব চলে আসে। কিছু ভাষায় এগুলো খুব নির্দিষ্ট শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করা সম্ভব হলেও অনেক ভাষাতেই এইটা অনেক কঠিন। শীতের সকালে আমরা গান গাইতে গাইতে বাড়ি যাচ্ছিলাম। এইটা একটা ছবি একেও দেখানো যায়। কিন্তু ছবি আঁকতে যত সময় ও ইন্সট্রুমেন্ট লাগে তার তুলোনায় লেখা অনেক সহজ।
কিছু লেখা আছে পড়াশুনা সম্পর্কিত। এইখানেও দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়। পরীক্ষার খাতায় আমরা তাই লিখে চলি ভাল নাম্বার পাওয়ার আশায়। কারো উত্তর পড়ে খুব সহজেই বোঝা যায় আবার কারো খাতা পড়ার পর মাথা ধরে যায়। এমন অনেককেই পাওয়া যাবে যারা পরীক্ষার খাতা ব্যাতিত আর কখনোই কিছু লিখেন নাই।
তবে আমার মতে লেখার চর্চা করা উচিৎ। হাজার বছর ধরে এর ক্রমাগত ব্যাবহার এর অপরিহার্যতাই নির্দেশ করে।