ইতিহাসে শায়েস্তা খাঁ বিখ্যাত হয়ে আছেন কারণ তার সময় এক টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। এই একটা খুব উল্লেখযোগ্য তথ্য দেখা যায়। কিন্তু তার সময় সবাই খেতে পেত - এইরকম কোন তথ্য ইতিহাস বইয়ে নাই। তিনিও যুদ্ধ করেছেন। স্থাপন করেছেন বিভিন্ন স্থাপনা। পৃথিবীতে কিছু স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার আছে। ইতিহাসে একজন ভিলেন থাকে একই সাথে এক জন নায়ক থাকে। কখনও নায়ক পরাজিত হয় কখনো বা ভিলেন। সব ইতিহাসেই 'জনগন' নায়ক হিসেবেই ছিল। ইতিহাস তাই বলে।
সব থেকে স্বতঃসিদ্ধ ব্যাপার হল ইতিহাস মানেই অতীত স্মরণ করা। একজন মানুষের গড় আয়ু যদি ৬০ বছর ধরি তাহলে তার জীবনের ইতিহাস শুরু হবে তার মৃত্যুর পরে। এর পর কতদিন তাকে স্মরণ করা হবে বা মনে রাখা হবে? যদি খুব সাধারণ মানুষ হয় তাহলে তার ছেলে মেয়ে ও বড়জোর নাতি নাতনি পর্যন্ত তাকে স্মরণ করা হবে। ওই হিসেবে তার মৃত্যুর পর আরো ৭০ - ৮০ বছর।
কিন্তু খুব বিখ্যাত কিংবা ভিলেনকে মানুষ কতদিন মনে রাখে? তার কীর্তি স্মরণ করে? সে হয়ত ৬০ বছর বেচে থাকলো - কিন্তু তাকে মনে রাখা হবে অজস্র বছর। মিশরের ইতিহাস ৬০০০ বছরের পুরানো। চীনের ৪০০০ বছরের আগের ইতিহাসও লিপিবদ্ধ আছে। সিরাজুদ্দৌলাকে এখনও মানুষ স্মরণ করে - তার জন্য দুঃখ পায়। আবার মীর জাফরের নামও স্মরণ করে কিন্তু কি ঘৃণার সাথে। অথচ সিরাজুদ্দৌলা পরাজিত হয়েছিলেন। আর মীর জাফর জয়ী।
আমার বিশ্বাস দুইজনের কেউ ইতিহাসে তাদের সম্বন্ধে কি লেখা হবে সেটি ভেবে জীবন যাপন করেন নাই। ভাবলে মীর জাফর হয়ত ভিন্ন ভূমিকা নিত।
ইতিহাসের প্রসঙ্গ আসলেই যে কথাটি চলে আসে তা হল, ' ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না'। এর সাথে আরেকটি বাক্যও মনে হয় যোগ করা যায়। তা হল, ' ইতিহাসকে যারা ভয় করে না তারাই ঐতিহাসিক ভিলেন হিসেবে দেখা দেয়।'