অকালেই চলে গেলেন বিশ্বপ্রযুক্তির মহানায়ক স্টিভ জবস (১৯৫৫-২০১১)
এভাবেই একের পর এক উদ্ভাবনায় নিজেকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিলেন স্টিভ
অ্যাপল গুরু স্টিভ জবস আর নেই। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে (১৯৫৫-২০১১) জটিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি ৬ আগস্ট মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অ্যাপল সূত্র স্টিভ জবসের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
আইপ্যাড এবং আইফোন উদ্ভাবনার মাধ্যমে স্টিভ জবস বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। ২০০৪ সাল থেকে অগ্ন্যাশয়ের জটিল ক্যান্সারে ভুগছিলেন স্টিভ জবস।
তথ্যপ্রযুক্তির আকাশজুড়ে কালো মেঘের ঘনঘটা। কমপিউটার বিশ্বের মহাগুরু এবং অ্যাপলের কর্ণধার স্টিভ জবস অকালেই চলে গেছেন।
এ মুহূর্তে পুরো অনলাইন বিশ্বজুড়ে শুধুই স্টিভ জবসের শোকবার্তা। বিশ্বব্যাপী অ্যাপল ভক্তরা স্টিভের এ প্রস্থান মেনেই নিতে পারছেন না। তাই টুইটার, ফেসুবক এবং গুগল প্লাসে লাখ লাখ শোকবার্তায় মুখর হয়ে উঠেছে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো।
আইটি বিশ্লেষকদের ভাষ্যমতে, এ প্রস্থান একেবারেই অপ্রত্যাশিত, অনাকাঙ্খিত। এ খবরে অ্যাপলের শেয়ারমূল্য কমতে শুরু করবে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন। শুধু অ্যাপলের সিইও পদ থেকে পদত্যাগের খবরে আন্তর্জাতিক শেয়ারবাজারে অ্যাপলের প্রতিটি শেয়ারমূল্য ৪.১ ভাগ কমে গেছে। ফলে তথ্যপ্রযুক্তির বাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বাজার বিশেষজ্ঞ কলিন গিলিস জানান, এ মুহূর্তে আইসিটি বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে স্টিভ জবসের মতো নির্বাহীর বিকল্প পাওয়া খুব কঠিন। তবে তিনি আমরণ অ্যাপল উদ্ভাবনার প্রাণ সঞ্চারক হিসেবে নেপথ্যে থেকেই প্রেরণা দিয়ে যাবেন বলে অ্যাপল ভক্তরা বিশ্বাস করেন।
এ মুহূর্তে অ্যাপলে সিইও পদের দায়িত্বে আছেন টিম কুক। শেষ দিনগুলোতে স্টিভের সবচেয়ে ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে তার নামটিই এসেছে সবার আগে। অ্যাপলের আকাশচুম্বি সাফল্যের পেছনে টিম কুকের অবদানও নেহাত কম নয়।
সুদীর্ঘ রোডম্যাপ আর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অ্যাপলকে শীর্ষে উঠিয়ে এনেছেন স্টিভ। তারপরও স্টিভের বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে মাঝেমধ্যেই তিনি কুকের অবদান বর্ণনা করেছেন। এ অর্থে টিম কুকই এখন হবে অ্যাপল প্রাণকর্তা।
প্রতিটি উদ্ভাবনা নিয়ে স্টিভের সুমিষ্ঠ পণ্য উদ্বোধনী বক্তব্যে অ্যাপলের পণ্য বিক্রিতে জাদুকরি প্রভাব বিস্তার করেছে বলে বিপণন সংশ্লিষ্টরা জানান। এ কারণেই শুরু থেকেই অ্যাপল অন্য সব প্রযুক্তিনির্মাতাদের তুলনায় কয়েক ধাপ এগিয়ে ছিল।
অ্যাপল ভক্তরা এটা জানেন স্টিভ তাদের জন্য সময়ের সেরা পণ্যটিই বাজারে প্রকাশ করেন। তাই নতুন কোনো অ্যাপল পণ্য প্রকাশের কথা থাকলেই ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়তেন।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের মুখপাত্র গারটেনবার্গ জানান, অ্যাপল মানেই সময়ের সব চাহিদা পূরণের সামর্থ্য। কেননা এসব ডিজিটাল পণ্যের মান নির্ণয়ে কাজ করেছেন প্রযুক্তিগুরু স্টিভ জবস। শত শত কোটি মানুষের এ মহাবিশ্বের জীবনমান এবং ব্যবসা উন্নয়নে স্টিভ দিয়েছেন অসংখ্য উদ্ভাবনা আর বিপণন তত্ত্ব। এর মধ্যে আইফোন৪ আর আইপ্যাড সব কিছুকেই ছাড়িয়ে গেছে।
স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট পিসির প্রবক্তা স্টিভ জবস বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি ভক্তদের কাছে মহাউদ্ভাবক হিসেবে একনামে সুপরিচিত।
গত কয়েকটি বছরে এ দুটি পণ্য পুরো বিশ্বের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং পরিবেশের দৃশ্যপট পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।
বিল গেটসের কমপিউটার আবিস্কারের সময় যেমন প্রযুক্তিবিস্কোরণ ঘটেছিল, ঠিক তেমন চিত্রই ফুটে ওঠে অ্যাপলের স্মার্টফোন আর ট্যাবলেট পিসির আর্বিভাবে।
Source :
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=5dffa05994b7c919d53dd8423441a5fc&nttl=2011100606352661492&toppos=3