ভাবতেছিলাম চাকুরী বা জবের উদ্দেশ্যটা কি? সহজ ও সরল ভাবে বলতে গেলে আমাদের চাকুরী বা জব করার মূল উদ্দেশ্য হল ইনকাম করা বা বেতন পাওয়া। কিন্তু এটাই মনে হয় সব নয়। জবের সাথে অর্থের থেকেও সম্মানের যোগাযোগটা বেশী।
আমার পর্যবেক্ষণ মতে একটি চাকুরীতে সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক ও পরিবেশও চাকুরীর জন্য পূর্ব শর্ত। আবার অনেকেই অধিক সম্মান জনক পেশাকে বেছে নেন - অনেক লোভনীয় বেতনের চাকুরী পেছনে ফেলে। কেউ কেউ জবের নেচার বা ধরণ থেকে সেই পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠেন। আমার বন্ধুদের অনেকেই অনেক কঠোর জীবিকা বেছে নিয়েছেন - কেননা তাদের কাছে এইটাই সব থেকে পছন্দনীয় ও সম্মানজনক পেশা। কিছু ক্ষেত্রে কেউ কেউ পড়াশুনা করতে হয় এইরকম পেশা বেছে নেন। আবার কিছু মানুষ থাকে যারা আর পড়াশুনার একেবারে ধারে কাছে থাকবেন না এইটাই পণ করেন। কেউ মনে করেন যে এই দেশেই আর থাকবেন না।
আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কেবল মাত্র উচ্চ বেতন দেখে নিজের পেশা নির্ধারণ করলে সেটি বেশীদিন টেকসই হয় না। এছাড়াও একটি অফিস কতটা সিস্টেম নিয়ন্ত্রিত ও তাদের সহকর্মীদের সাথে সম্পর্কটা কেমন তাও একজনের চাকুরী নির্ধারণে ভুমিকা রাখে। কেউ থাকে অনেক নিশ্চিত চাকুরী ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান। কিছু ক্ষেত্রে কেউ কেউ বেতনের বাইরে কতটুকু উপরি ইনকাম করতে পারবেন সেইটা দেখেন। তবে সেইটা অসুস্থ্য ও অস্বাভাবিক চয়েস - সেইটা আমরা সবাই বুঝতে পারি। অনেকেই থাকেন যারা যেসব জবে অনৈতিক ক্ষমতার ব্যাবহার হয়ে থাকে সেগুলো শুধু এড়িয়ে চলেন না - সেই সব পেশাজীবীদেরও এড়িয়ে চলেন। কেননা অনেক সময়ই একজনের মনে অর্থের লোভের থেকে অপরের বদ-দোয়া অনেক ভয়ংকর মনে হয়।
আমাদের জীবন অবসানে অনেক প্রিয় জিনিসকে আমাদের পিছনে ফেলে যেতে হবে। আমরা তার কিছুই নিয়ে যেতে পারবো না। আবার আমাদের কর্মফল আমরা যতই পিছনে ফেলে যেতে চাই না কেন - তারা আমাদের সাথেই যাবে।
সেই রকম আমরা যতই জবের ফলাফল কেবল মাত্র বেতন হিসেব করে যাই না কেন - এর বাইরেও হিসেব থেকে যায়। বেতনটি একজন কতটুকু ন্যায্য ভাবে আদায় করেছে এইটাই প্রধানতঃ মুখ্য প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়। এমনকি ভবিষ্যতে সে নিজেও হয়ত নিজেকে ক্ষমা করবে না।