দেখতেছিলাম মা মেয়ে চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে। ভিতরে অপারেশন চলতেছে। কে বেশী চিন্তিত তা যাচাই করতেছিলাম মনে মনে।
কয়েক বছর আগে গিয়েছিলাম গুলশানে। ভেটেনারী চিকিৎসকের কাছে। আমাদের পোষা কুকুর ক্যাসপারকে জলাতঙ্কের টিকা দেয়ার জন্য। পেলাম এক ভিন্ন জগত। বিশাল রুম ভর্তি পোষা কুকুর বিড়ালের সামগ্রী। কি নাই? পোষা প্রানীর প্যাকেটজাত খাবার, অজস্র রকমের বেল্ট তাদেরকে গোসল করানোর জন্য হরেক রকমের সাবান শ্যাম্পু।
ভেটানারী চিকিৎসক ভিতরে একটি বিড়ালের অপারেশন করতেছেন। বুঝলাম নিজের অজান্তেই এক ভিন্ন জগতে চলে এসেছি। এই ক্ষেত্রে একটি বিশাল বিপ্লব ঘটে গেছে যার সম্পর্কে আমার কোনই ধারণা ছিল না।
মা মেয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে কখন তাদের পোষা প্রিয় বিড়ালের অপারেশন শেষ হবে। কথা বলে জানলাম তাদের ধারণা বিড়ালটি বংশ বৃদ্ধি ঘটালে তাদের থেকে দূরে চলে যাবে। তাই সে যাতে আর বংশ বৃদ্ধি ঘটাতে না পারে তার জন্য বিড়ালটির অপারেশন চলতেছে।
বারান্দায় দেখলাম দুইটা সোনালী রঙয়ের কুকুর ছানা। কিউরিসিটি থেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কি জাতের ওইগুলো। জানালাম ওইগুলো ল্যাব্রাডর জাতের। দুইটির মুল্য ৪০ হাজার টাকা।
যাই হোক ভেটেনারী ডাক্তারকে আমাদের বাসার ঠিকানা দিয়ে ফিরে আসলাম।
কুকুর আমি পছন্দ করি না। কিন্তু বাসা পাহারা দেয়ার জন্য এক সময় পুষতে হয়েছিল। যিনি জলাতঙ্কের টিকা দিতে আসলেন তিনি জানালেন কুকুরকে তিন মাস পরপর চুলকানির টিকাও দিতে হয়। এছাড়াও ক্রিমির ঔষধও খাওয়াতে হবে। কুকুর যাতে ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষেপে না যায় তার জন্যও অপারেশন করে রাখা যায়। পূর্ণ এনেস্থেশিয়া করে অপেরেশন করা হয়। অপারেশনের পর ৩ - ৪ দিন হাই ডোজের এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে হয়। তার পরই কুকুর সুস্থ্য হয়ে যায়। তবে তাদের হিংস্রতা অনেক কমে যায়।
এইবার আসি কুকুরের খাবারে। যেহেতু বাউন্ডারির ভিতরে আটকা থাকবে তাই তাকে মাঝে মাঝে ভিটামিন দিতে হবে। এর জন্য বাচ্চাদের ভিটামিনের সিরাপ থেকে কয়েক ফোটা খাবারের সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। এছাড়াও তার প্রাত্যাহিক খাদ্যে রান্না করার সময় একটি করে শাক পাতা ছেড়ে দিতে হবে যাতে করে সে প্রয়োজনীয় ভিটামিন পায়।