জীবনে যখন সমস্যা চলছে খুব বেশি... জীবনে যখন চতুর্দিকেই চলছে ঝামেলা, দোরগোড়ায় দাঁ

Author Topic: জীবনে যখন সমস্যা চলছে খুব বেশি... জীবনে যখন চতুর্দিকেই চলছে ঝামেলা, দোরগোড়ায় দাঁ  (Read 1091 times)

Offline anowar.bba

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 58
  • Test
    • View Profile
এমন একটা সময় কমবেশি আমাদের সবার জীবনেই আসে, যখন কিছুই যেন ঠিকমত চলতে চায় না। অনেকগুলো সমস্যা একসাথে তৈরি হয়ে পড়ে, একের পর এক ঝামেলায় জর্জরিত হয় জীবন। একটি সমস্যার সমাধান করতে না করতেই যেন এসে পড়ে আরেকটি, কিছুতেই তাল মিলিয়ে উঠা যায় না গতিশীল জীবনের সাথে। স্বভাবতই এমন পরিস্থিতিতে মন ভেঙে যায়, আমরা হতাশা ও বিষণ্ণতায় ভুগতে শুরু করি। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকেই যায়।

আজ থাকছে সেই দুঃসময়ের সাথে মোকাবিলা করার বিষয়ে কিছু কথা। জীবনে যখন চতুর্দিকেই চলছে ঝামেলা, দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সমস্যার বার্তা, কী করবেন তখন? কীভাবে ধরে রাখবেন নিজের মনোবল? কীভাবে জীবনে আবারও ফিরিয়ে আনবেন আনন্দের আলোকিত দিন?

প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে দেখার চেষ্টা করা যেতে পারে।

শান্ত থাকুন, স্থির হোন
ধরুন, চোরাবালিতে আটকে গেছেন, কিছুতেই উঠতে পারছে না। এমন সময়ে হাত-পা ছুঁড়লে কী হবে জানেন? আরও দ্রুত ডুবে যেতে শুরু করবেন। চোরাবালি থেকে মুক্ত হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে শান্ত থাকা। তারপর ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় খোঁজা। অস্থির মানুষ খুব সহজেই নিজের জন্য বিপদ ডেকে আনে। একটি সমস্যার সূত্র ধরে উপস্থিত হয় অন্য আরও সমস্যা। তাই সমস্যার দিনগুলোতে প্রথম কাজ নিজেকে শান্ত করা, যেন পরিষ্কার মাথায় চিন্তা করতে পারেন। মনকে স্থির করতে পারার আগ পর্যন্ত কোনো কথা বা কাজ নয়। একবার মনকে স্থির করুন, দেখবেন সমস্যা অনেক সহজ মনে হচ্ছে।

সমস্যা থাকলে সমাধানও আছে
মনকে স্থির করতে নিজেকে এটাই বোঝান যে সব সমস্যা থেকেই পরিত্রাণের উপায় আছে। বাস্তবেও এটি সত্যি। সকল অংকের যেমন সমাধান আছে, সমস্যারও তাই। হয়তো সমাধানটি চট করে বের করা যাচ্ছে না, কিন্তু তার মানে এই নয় যে কখনোই বের করা যাবে না। যাবে, কেবল খুঁজতে হবে। ঠিক অংক কষার মতোই।

সব একসাথে নয়
আপনি একাই জগতের সব কাজ করতে পারবেন না, সমস্যার সমাধানও নয়। ওই যে বললাম, সমস্যা হচ্ছে অংকের মতন। ঠিক অংকের মতন করেই ধাপে ধাপে জীবনের সমস্যার সমাধান হবে। সবচাইতে জরুরি যে সমস্যা, যার সমাধান খুব শিগগির না করলেই নয়, সেটাই আগে বেছে নিন। নিজের মন-মস্তিষ্কের সমস্ত ক্ষমতা তার পেছনে ব্যয় করুন, সমস্যাটি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। একটি সমস্যা মিটে গেলে দেখবেন নিজেকে অনেক হালকা লাগছে, আত্মবিশ্বাস ফিরে আসতে শুরু করবে। এরপর পরের সমস্যায় হাত দিন। একবারে সব করার চেষ্টা করলে কোনোটাই সমাধান হবে না। বরং আপনি আরও বেশি হতাশায় ডুবে যাবেন।

অনেক বেশি ভাবুন
বিপদের সময় ভাবনা চিন্তা ছাড়া কিছুই বলা বা করা ঠিক নয়। এক সেকেন্ডের অসাবধানতাতেও আপনি নতুন বিপদে পড়তে পারেন, নতুন সমস্যা উপস্থিত হতে পারে। তাই খুব ঠান্ডা মাথায় অনেক ভেবে চিন্তা করে তারপরেই কিছু বলুন বা করুন। বিপদের দিনে তাড়াহুড়া একেবারেই করবেন না।

সবার নয়, কারো কারো সাহায্য নিন
আপনি সমস্যায় দিন পার করছেন মানেই যে সবাইকে নিজের কথা বলতে হবে বা দ্বারে দ্বারে গিয়ে সাহায্য চাইতে হবে, ব্যাপারটি কিন্তু মোটেও এমন নয়। দ্বারে দ্বারে গিয়ে কোনো লাভ নেই। বেশিরভাগ মানুষই আপনাকে কোনো সাহায্য করবে না, উল্টো আপনাকেই দোষ দেবে। অনেকে আবার আপনাকে দুর্বল পেয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টাও করতে পারে। তাই দুঃসময়ে নিজের খুব কাছের মানুষ ছাড়া আর কাউকেই বিশ্বাস করতে যাবেন না। এমন মানুষকে সমস্যার কথা জানান, যিনি উৎসাহ দিতে জানেন। মন ভাঙতে নয়।

অহেতুক ব্যাপারগুলো বন্ধ রাখুন
অন্যের ব্যাপারে নাক গলানো, পরনিন্দা, সমালোচনা, ঝগড়াঝাঁটি ইত্যাদি ব্যাপারগুলো কমবেশি আমরা সকলেই করি বটে। কিন্তু এসব জীবনে অর্থহীন। কোনো মূল্যই নেই এগুলোর, বরং এরা বিপদ বাড়ায়। দুঃসময়ে আপনার কাজ সকলের সাথে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় রাখা। অহেতুক এসব কাজ করে সমস্যা বাড়াবেন না।

পর্যাপ্ত ঘুম, খাওয়া ও প্রার্থনা
সমস্যায় হতাশ ও দুঃখী হয়ে অনেকেই নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দেন। এই কাজটি করতে যাবেন না। স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আজ আপনার শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে বিপদ আরও বাড়বে। শরীর সুস্থ থাকলে মনও দ্রুত কাজ করবে। এ ছাড়াও খাওয়া এবং ঘুম হতাশা ও বিষণ্ণতা দূর করতে সহায়তা করে। একই সাথে নিজের ধর্ম অনুযায়ী প্রার্থনা করুন নিয়মিত। প্রার্থনা মনকে প্রশান্তি দেবে, মনে হবে যে আপনি একা নন এই বিপদের দিনে।

সকল বিপদের দিনই আমাদের জীবনের জন্য এক একটি শিক্ষণীয় পর্ব। বিপদের একদিন আমাদেরকে যা শেখায়, অসংখ্য সুখের দিনও তা শেখাতে পারে না। তাই বিপদের সময় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। এই শিক্ষা আজীবন কাজে আসবে।