আমাজন ইকো: অ্যালেক্সা নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট স্পিকারটির আদ্যোপান্ত

Author Topic: আমাজন ইকো: অ্যালেক্সা নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট স্পিকারটির আদ্যোপান্ত  (Read 1771 times)

Offline nafees_research

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 344
  • Servant of ALLAH
    • View Profile
আমাজন ইকো: অ্যালেক্সা নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট স্পিকারটির আদ্যোপান্ত

আমাজনের স্মার্ট স্পিকার ‘আমাজন ইকো’ প্রথম বাজারে আসে ২০১৪ সালের নভেম্বরে। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই অ্যালেক্সা নিয়ন্ত্রিত ডিভাইসটি পুরো পৃথিবীব্যাপী আকর্ষণের বস্তুতে পরিণত হয়। ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ডিজিটাল হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে জায়গা করে নেয় প্রায় বিশ মিলিয়ন বাড়িতে। নির্দিষ্ট কোনো গান বাজানোর জন্য নির্দেশ করা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা, কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা এবং সংবাদ পড়ে শোনানো সহ নানা কাজে দক্ষ এই ডিভাইসটি যেন সায়েন্স ফিকশন সিনেমাগুলোতে দেখানো পুরোপুরি কণ্ঠনিয়ন্ত্রিত কম্পিউটারের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছে।

ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত স্মার্ট স্পিকারটি সবসময় ব্যবহারকারীর নির্দেশের অপেক্ষায় জেগে থাকে। একে কাজে লাগানোর জন্য ব্যবহারকারীকে শুধু ‘অ্যালেক্সা’ নামে ডেকে প্রয়োজনের কথাটি জানাতে হয়। ডিভাইসটি তার চারপাশে ব্যবহৃত শক্তিশালী মাইক্রোফোনের সাহায্যে ব্যবহারকারীর নির্দেশ শোনে এবং আমাজনের ক্লাউড ভিত্তিক ন্যাচারাল ভয়েস রিকগনিশন সার্ভিস ‘অ্যালেক্সা ভয়েস সার্ভিস’ এ পাঠিয়ে দেয়। সেখানে পুরো নির্দেশটি বিশ্লেষণাত্মক প্রক্রিয়াজাত হয়ে ব্যবহারকারীর জন্য উপযুক্ত ফলাফল পরিবেশন করে।

আমাজন দিন দিন স্মার্ট স্পিকারটিতে নতুন নতুন সার্ভিস যুক্ত করছে। ভবিষ্যতের বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে থার্ড পার্টি ডেভেলপারদের সহযোগিতায় তৈরি করছে প্রয়োজনীয় সব ফিচার।  এই লেখায় আমাজন ইকো সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানানো হবে।

ব্যবহার
আমাজন ইকোর প্রধান কাজ শুধুমাত্র গান বাজানো না হলেও এটি ন্যায্য দামের ভালো সাউন্ড স্পিকার হিসেবে উপযুক্ত! আপনি যদি গান শুনতে ভালোবাসেন এবং পাশাপাশি মিউজিক প্লেয়ারটিকে কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে চান; ভলিউম বাড়ানো-কমানো, গান পরিবর্তন করা, কিংবা আপনার স্মার্টফোন বা আমাজন ইকোর সাথে সংযুক্ত অন্যান্য ডিভাইসের প্লে-লিস্টে না থাকা গানটিও বাজাতে চান, তাহলে আমাজন ইকো আপনার জন্যই।

এছাড়াও স্মার্ট-হোমে ব্যবহৃত থার্মোস্ট্যাট, সিকিউরিটি ক্যামেরা, গ্যারেজের দরজা, স্মার্ট প্লাগইন, স্মার্ট লক, বাতি, পাখা সহ বিভিন্ন ধরনের ডিভাইসকে স্পিকারটির মাধ্যমে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এজন্য কোনো স্মার্টফোন বা নির্ধারিত কোনো এপ্লিকেশনের সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। যদিও আমাজন ইকোর নির্দিষ্ট এপ্লিকেশন রয়েছে, কিন্তু এর ব্যবহার শুধুমাত্র ডিভাইসটিকে কনফিগার করা, নতুন সেটআপ দেওয়া, নতুন ফিচার যুক্ত করা, কর্মপরিকল্পনা এবং কেনাকাটার তালিকা দেখার কাজে ব্যবহার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।

এমনকি ব্যবহারকারী চাইলেই উবারের গাড়ি ডাকা, ডমিনো’স পিজ্জায় অর্ডার করা সহ সাধারণ কিছু ব্যাংকিং সার্ভিসও ব্যবহার করতে পারবে।

যেকোনো তথ্য এবং শব্দের অর্থ জানা, অনলাইন ভিত্তিক নিউজ শোনা, কোনো নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের রিমাইন্ডার দেওয়া, সময় জানা, কর্মপরিকল্পনা বা টু-ডু লিস্ট তৈরির জন্য আমাজন ইকোকে খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়। এমনকি আমাজন ইকোর দ্বিতীয় জেনারেশনের ব্যবহারকারীরা বিনামূল্যে আমাজনের বুক-স্টোর সার্ভিস কিন্ডেলের বই শুনতে পারবে। এছাড়াও ব্যবহারকারীরা নোটেশন, মেইল বটের মতো থার্ড পার্টি এপ্লিকেশনের মাধ্যমে ডিভাইসটিকে ই-মেইলের সাথে সংযুক্ত করে মেইলে আসা বার্তাগুলো শুনতে পারবে। অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনে স্মার্টফোনে করা অধিকাংশ কাজই আপনি আমাজন ইকোর মাধ্যমে করতে পারবেন শুধুমাত্র কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে নির্দেশ করে। এতে করে স্মার্টফোনের সর্বনিম্ন ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

দক্ষতা
আমাজন ইকোর দক্ষতা হচ্ছে নির্দিষ্ট কাজের জন্য ব্যবহৃত নির্দিষ্ট কিছু এপ্লিকেশন। ব্যবহারকারী চাইলেই নতুন কোনো দক্ষতা প্রদানের জন্য এ বছরের মার্চে প্রকাশ হওয়া ‘অ্যালেক্সা স্কিল কিট’ এর সাহায্যে খুব সহজেই সাধারণ প্রোগ্রামিং জ্ঞান ব্যবহার করে ইকো সিস্টেমের জন্য নতুন এপ্লিকেশন তৈরি করতে পারবে। এমনকি ব্যবহারকারী চাইলেই অ্যালেক্সা অ্যাপ-স্টোরে যুক্ত হওয়া প্রায় পনেরোশর বেশি অ্যাপ্লিকেশন বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই অ্যালেক্সার নিজস্ব এবং থার্ড পার্টি ডেভলাপারদের সাহায্যে নতুন নতুন এপ্লিকেশন অ্যাপ স্টোরে যুক্ত হচ্ছে, যেগুলো দৈনন্দিন জীবনে আমাজন ইকোর সহজ ব্যবহার নিশ্চিত করছে।

সীমাবদ্ধতা
অ্যালেক্সা নানা কাজে কাজী হলেও, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী কাজ করতে অক্ষম। যেহেতু আমাজন ইকো পুরোপুরি নির্ধারিত কিছু কমান্ডের উপর নির্ভর করে ব্যবহারকারীর নির্দেশ প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে ফলাফল পরিবেশন করে, সেহেতু কমান্ড-নীতি ভঙ্গ করে আপনি কোনো নির্দেশ করলে, অ্যালেক্সা থেকে যথাযথ সাহায্য পাবেন না। যেমন, প্রত্যেকটি নির্দেশ দেওয়ার পূর্বে, আপনাকে অবশ্যই ‘অ্যালেক্সা’, ‘ইকো’, ‘আমাজন’ এবং ‘কম্পিউটার’ এর মতো শব্দগুলো ব্যবহার করতে হবে। যদিও ‘অ্যালেক্সা’ শব্দটি পূর্বনির্ধারিত, অন্যান্যগুলো ব্যবহারের জন্য অবশ্যই আপনাকে নতুন করে সেটআপ দিতে হবে।

কর্মপরিকল্পনা এবং কেনাকাটার তালিকা তৈরির কাজে আমাজন ইকো বেশ প্রসিদ্ধ। কিন্তু কেনাকাটার তালিকায় একের অধিক আইটেম একসাথে যুক্ত করার জন্য একইসাথে একের অধিক নির্দেশ করতে হবে। যেমন, আপনি যদি তালিকায় ব্রেড এবং জেলি যুক্ত করতে চান, তাহলে “Alexa, add Bread and Jelly to my shopping list” এর বদলে বলতে হবে, “Alexa, add Bread to my shopping list. Alexa, add Jelly to my shopping list”, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিরক্তিকর।

তাছাড়া, আমাজন ইকোর প্রাথমিক ব্যবহার-পরিকল্পনা যদি হয় এলোমেলো প্রশ্ন করে উত্তর খোজা, তাহলেও আপনাকে অনেক ক্ষেত্রেই হতাশ হতে হবে। কেননা অ্যালেক্সা তার নিজস্ব সার্ভারের উপর নির্ভরশীল, অর্থাৎ এটি গুগলের সাথে সংযুক্ত না। এটি বেশ তথ্য-উপাত্ত সমৃদ্ধ হলেও, গুগলের মতো যেকোনো ধরনের অগুরুত্বপূর্ণ, স্বল্প গুরুত্বপূর্ণ, কিংবা ফাংশনাল প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম নয়। এক্ষেত্রে আপনি গুগলের ভয়েস-নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ‘গুগল হোম’ ব্যবহার করতে পারেন।

এছাড়াও, আমাজন ইকো স্মার্টহোম অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে তেমন প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন না। বিশেষ করে, আপনার স্মার্টহোমের সিস্টেম যদি জটিল হয় এবং আপনি যদি শুধুমাত্র স্মার্টহোমের পুরো সিস্টেমটি নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাজন ইকো ব্যবহারের পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই আপনাকে হতাশ হতে হবে। কেননা, সবধরনের স্মার্ট ডিভাইস এবং জটিল সিস্টেম নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাজন ইকোকে ডিজাইন করা হয়নি। এক্ষেত্রে যথাযোগ্য হবে স্মার্টথিংস, উইংক কিংবা ইন্সটিওনের মতো স্মার্টহাবগুলো ব্যবহার করা।

হার্ডওয়ার এবং অন্যান্য
আমাজন ইকো প্রায় ২৩.৫ সেন্টিমিটার এবং ৩.২৭ সেন্টিমিটারের নলাকার ডিভাইস। উপরে অফ/অন সহ আরো একটি বাটন রয়েছে, যেটি মাইক্রোফোন নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহৃত হয়। ঠিক ওপরে ছোট একটি এলইডি লাইটও রয়েছে, যার মাধ্যমে ডিভাইসটি ওয়াইফাইয়ের সাথে সংযুক্ত নাকি বিচ্ছিন্ন তা জানা যায়। পুরো নিয়ন্ত্রণ বোর্ডটি একটি সচল চাকতি দ্বারা আবদ্ধ, যার সাহায্যে ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই ডিভাইসটির ভলিউম বাড়াতে-কমাতে পারে এবং চাকতিটিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন লাইট ডিভাইসটির অবস্থা বর্ণনা করে।

এছাড়াও ডিভাইসটিতে নিম্নমুখী দুটি স্পিকার রয়েছে। একটি ৬.৪ সেন্টিমিটারের ‘ওফার’, যেটি লো-ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ সৃষ্টি করে এবং অপরটি ‘টুইটার’, এর কাজ হচ্ছে হাই-ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ সৃষ্টি করা। স্পিকারের উপরের এয়ার চেম্বারে একটি রিফ্লেক্স পোর্ট রয়েছে, যেটি প্রয়োজনে শব্দের বিকৃতি হ্রাস করে এবং ওফারের আওয়াজ বাড়ায়। ইকোর মূল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হচ্ছে সাতটি বিন্যাসে থাকা মাইক্রোফোন, যেগুলো বিমফর্মিং টেকনোলোজির অন্তর্ভুক্ত এবং আশেপাশের কোলাহল, অপ্রয়োজনীয় শব্দগুলোকে ছাপিয়ে স্পষ্টভাবে ব্যবহারকারীর নির্দেশ শুনতে সক্ষম।

পূর্বেই বলা হয়েছিল, আমাজন ইকো ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের সাহায্যে কাজ করে। এটি ব্যবহারকারীর নির্দেশকে শক্তিশালী ক্লাউড ভিত্তিক সার্ভার অ্যালেক্সা ভয়েস সার্ভিসে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে নির্দেশটিকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণীতে ফেলে সঠিক ফলাফলের জন্য উপযোগী কোনো ওয়েব সার্ভারে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে যথার্থ প্রতিক্রিয়াটিকে আবার ব্যবহারকারীর কাছে আমাজন ইকোর স্পিকারের মাধ্যমে আসে।

ধরুন, আপনি কোনো একটি নির্দিষ্ট গানের নাম উল্লেখ করে সেটি বাজানোর জন্য ইকোকে নির্দেশ করলেন।  ডিভাইসটি নির্দেশটিকে অ্যালেক্সা ভয়েস সার্ভিসে পাঠিয়ে দিবে। সেখান থেকে নির্দেশটি আমাজন মিউজিকে পাঠানো হবে এবং নির্দিষ্ট গানটি সংগ্রহ করে পূর্বে উল্লেখিত প্রতিক্রিয়াটি ব্যবহারকারীর কাছে পৌঁছাবে। প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ এবং জটিল হলেও, স্বল্প সময়ের মধ্যে এটি সম্পাদন করার জন্য আমাজন ইকোকে বেশ ভালোভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে।

নিরাপত্তা
ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত সবগুলো ডিভাইসই নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকে। বিশেষ করে, আমাজন ইকোর মতো ডিভাইসগুলোকে ব্যবহার করে গুপ্তচরবৃত্তি, তথ্য চুরি সহ নানা অনৈতিক কাজ করা সম্ভব।  প্রশ্ন এসেই যায়, আমাজন ইকো কতটুকু নিরাপদ?

ওয়েবসাইট এবং ব্রাউজারের মতো আমাজন ইকোর মাধ্যমে অ্যালেক্সাও ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে রাখে। সে জানে আপনি কোন ধরনের গান শোনেন, আপনার কর্মপরিকল্পনা এবং কেনাকাটার তালিকায় কী রয়েছে, আপনি কোন ধরনের তথ্যের ব্যাপারে আগ্রহী, এমনকি আপনার স্মার্টহোমে কোন ডিভাইসটি রয়েছে। অর্থাৎ আপনি অ্যালেক্সাকে যা জানাবেন, এটি সে ব্যাপারেই ওয়াকিবহাল থাকবে। আর পুরো ব্যাপারটি ব্রাউজার এবং ওয়েবসাইটের কুকিস সংগ্রহের মতোই। সাধারণত ব্রাউজার এবং ওয়েবসাইটগুলো এসব তথ্যের সাহায্যে নিজস্ব কিছু পণ্য ব্যবহারকারীর কাছে সরাসরি মার্কেটিং করে থাকে। কিন্তু আমাজন ইকোকে এখন পর্যন্ত মার্কেটিংয়ের কাজে সরাসরি ব্যবহার করা হয়নি।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, অ্যালেক্সার মাধ্যমে উবার, ডমিনো’স পিজ্জার মতো কোম্পানিগুলোর সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে রাইড এবং পিজ্জা অর্ডার করা সম্ভব। লেনদেনের কাজে ক্যাপিটাল ওয়ানের মতো অনলাইন ব্যাংকিং সার্ভিসও এই স্মার্ট ডিভাইসটির সাথে সংযুক্ত। ক্যাপিটাল ওয়ানের মতে, আমাজন ইকোর মাধ্যমে তাদের লেনদেন পুরোপুরি নিরাপদ। প্রথমত, পুরো সিস্টেমটিতে ব্যবহারকারীর তথ্যগুলো এনক্রিপ্ট করা থাকে এবং দ্বিতীয়ত, অ্যালেক্সা স্টোরে একটি অফিশিয়াল এপ্লিকেশন আছে, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী নিজেদের অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত প্রবেশ ঠেকাতে পাসকোড ব্যবহার করতে পারবে। এরপরেও, ক্লাউডের সাথে সংযুক্ত একটি ভয়েস-অ্যাসিস্ট্যান্টের সাথে নিজেদের ব্যাংকিং সার্ভিসের তথ্য আদান-প্রদানকে অধিকাংশ ব্যবহারকারী অনিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করে।

সরাসরি বলতে গেলে, আমাজন ইকো তার শক্তিশালী মাইক্রোফোনের মাধ্যমে আপনাকে সবসময় শুনছে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রত্যেকেই জানে, ‘অ্যালেক্সা’, ‘ইকো’, ‘আমাজন’ এবং ‘কম্পিউটার’ এর মতো যাদুকরী শব্দগুলো ব্যবহার করে ডিভাইসটিকে সচল করার পর ব্যবহারকারী যা বলবে তা-ই চলে যাবে আমাজনের ক্লাউডে। এরপর ঐ তথ্য হালনাগাদ করার সুযোগ নেই। ব্যবহারকারীরা চাইলেই ক্লাউডে যুক্ত হওয়া তথ্যগুলো মুছেও ফেলতে পারবে না। তাছাড়া ডিভাইসটির নির্মাণ প্রকৌশলী ছাড়া কেউ জানে না, কমান্ডের মাধ্যমে সচল করার পর দেওয়া ইনপুটগুলো ছাড়া ডিভাইসটি পরোক্ষভাবে অন্যান্য সময় আপনার আশেপাশের অবস্থা, তৈরি হওয়া সাউন্ড রেকর্ড করছে কিনা!

অন্যদিক, আমাজন মূলত একটি ই-কমার্স সার্ভিস। কোম্পানিটির কাজই হচ্ছে পণ্য বিক্রয় করা। সেক্ষেত্রে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, গুগল, ফেসবুকের মতো এটিও ইনপুটে পাওয়া তথ্যগুলোকে ব্যবহার করে আপনার কাছে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নির্দিষ্ট কোনো পণ্যের মার্কেটিং করবে।

সর্বোপরি, আপনার স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত অন্যান্য ডিভাইস, গুগল, সোশ্যাল মিডিয়ার মতো আমাজন ইকোও ব্যবহারকারীর সাথে প্রায় একই রকম ব্যবহার করে। প্রত্যেকটি আইপি এড্রেস ভিত্তিক ডিভাইসের মতো একে ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর উপর গুপ্তচরবৃত্তি করা, তথ্য চুরি করা সম্ভব। এখন ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে, জীবনকে সহজ করে দেওয়া এই স্মার্ট সার্ভিসটি ব্যবহার করবে কিনা; এবং নিরাপত্তার ব্যাপারটিও ব্যবহারকারীকে নিশ্চিত করতে হবে।

Source: https://roar.media/bangla/main/tech/all-about-amazon-echo/

Nafees Imtiaz Islam
Deputy Director, IQAC, DIU and
Ph.D. Candidate in International Trade
University of Dhaka

Tel.:  65324 (DSC-IP)
e-mail address:
nafees-research@daffodilvarsity.edu.bd  and
iqac-office@daffodilvarsity.edu.bd