ব্রেইন ডেড

Author Topic: ব্রেইন ডেড  (Read 766 times)

Offline snlatif

  • Faculty
  • Sr. Member
  • *
  • Posts: 267
    • View Profile
ব্রেইন ডেড
« on: May 13, 2018, 02:15:03 PM »
নাড়ির স্পন্দন বা হৃৎস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাস-প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়া মানেই মৃত্যু—প্রচলিত এই ধারণায় ১৯৫০ ও ১৯৬০ দশকে পরিবর্তন আসে। আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থার কারণে প্রচলিত ওই ভাবনায় পরিবর্তন আসে। প্রথমবারের মতো যন্ত্রের মাধ্যমে একজন মানুষের ধমনি ও শিরায় রক্তপ্রবাহ সচল রাখা সম্ভব হয়। অকেজো ফুসফুসকেও সচল রাখা হয়। একই সময়ে প্রতিটি অঙ্গের কার্যকারিতা থেমে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এভাবে মৃত্যুর প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করা গিয়েছিল।

১৯৬৮ সালে হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের এক কমিটি মস্তিষ্কের মৃত্যুকে মৃত্যুর সঠিক সংজ্ঞা হিসেবে উল্লেখ করে এবং এটা পরিমাপে কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করে।
১৯৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির মৃত্যু নির্ণয়সংক্রান্ত আইনে কমিটির সুপারিশ সংযুক্ত করে। এতে মস্তিষ্কের মৃত্যুকে মৃত্যুর সংজ্ঞা হিসেবে নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি হয় হৃৎস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাস-প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া অথবা পুরো মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি হওয়াকে মৃত্যুর সংজ্ঞা হিসেবে এতে উল্লেখ করা হয়। পশ্চিম বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এটাই অনুসরণ করে।

তিনটি কারণে নীতিনির্ধারক ও চিকিৎসকেরা মস্তিষ্কের ওপর এত মনোনিবেশ করেছেন। এর একটি হলো পশ্চিমা দর্শনে মন ও দেহকে স্বতন্ত্র হিসেবে দেখা হয়। যেখানে অন্য সংস্কৃতিতে হৃৎপিণ্ডকে মানবদেহের কেন্দ্রীয় অঙ্গ বলে ধরা হয়। পশ্চিমা বিজ্ঞান মনের ওপর বেশি জোর দেয়, যেখানে মস্তিষ্ককে মনের পরিবর্তিত অবস্থা রূপে দেখা হয়। বায়োএথিসিস্টদের মতে, মস্তিষ্কের মৃত্যুই মানুষের মৃত্যুর সঠিক সংজ্ঞা।

দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, লাইফ সাপোর্টে কাউকে রাখার ক্ষেত্রে ব্যয়। সংকুচিত স্বাস্থ্যসেবার কারণে এ খাতে দেশগুলো এত ব্যয় করতে চায় না। আদালত শালমকে লাইফ সাপোর্টে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পর তাঁর জন্য হাসপাতালে চার লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা) ব্যয় করতে হয়েছে।

তৃতীয় কারণ হচ্ছে, অঙ্গ প্রতিস্থাপন। ব্রিটেনে ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৩২ জন মানুষ মারা গেছে অঙ্গদাতার অভাবে। যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা সাত হাজারের বেশি। অনেক অঙ্গ মৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়।

কিছু দেশ অঙ্গ প্রতিস্থাপনে উদাসীন। তারা আশঙ্কা করে, প্রতিস্থাপনের জন্য যকৃৎ, কিডনি ও হৃৎপিণ্ড পাওয়ার জন্য মৃত ঘোষণায় উৎসাহ থাকবে বেশি। তাড়াহুড়ো করে মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে মৃত ঘোষণা করা হবে। আর এ কারণে জাপান মৃত ঘোষণার ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ড ও শ্বাসতন্ত্রের ওপর নির্ভর করে। জাপানের সাপ্পোরোতে ১৯৬৮ সালে প্রথমবারের মতো কোনো ব্যক্তির হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে হৃৎপিণ্ডদাতাকে নিয়ে ওই অস্ত্রোপচার এখন নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ওই অস্ত্রোপচারকে ওই সময় সাধুবাদ জানানো হয়েছিল। তবে হৃৎপিণ্ড পাওয়ার জন্য হৃৎপিণ্ডদাতাকে আগেভাগেই মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল বলে প্রশ্ন ওঠে পরবর্তী সময়ে।

সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসে কোল হার্টম্যান নামের এক মার্কিন শিশুর মৃত্যুর পর অঙ্গদানের ঘটনা। আট বছর বয়সী শিশুটি ছিল প্রতিবন্ধী। ২০১৩ সালে বাড়িতে ওয়াশিং মেশিন চালু থাকা অবস্থায় মাথা ঢুকিয়ে দেয় কোল। পানিতে মাথা ডুবে থাকা অবস্থায় তাঁর বাবা জেরেমি হার্টম্যান তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরে চিকিৎসক কোলের পরিবারকে জানায়, শিশুটির মস্তিষ্কের মৃত্যু না হলেও তার মস্তিষ্ক আর কাজ করবে না, সে কখনো জেগে উঠবে না। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুসারে, তার শরীর থেকে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়। এর ২৩ মিনিট পর কোলকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কোলের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ দান করে দিয়েছিল তার পরিবার। কোলকে মৃত ঘোষণার সময় সেখানে অপেক্ষায় ছিল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারের দল। এ ঘটনার চার বছর পর ২০১৭ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ কোলের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করে। পুলিশের ধারণা, অঙ্গ নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল কোলকে। তার মৃত্যু ত্বরান্বিত করার জন্য মাত্রাতিরিক্ত ফেন্টানিল (ব্যথা কমানো ও অচেতন করার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ) প্রয়োগ করেছিলেন চিকিৎসক।

জাপান ১৯৯৭ সালে এক আইন কার্যকর করে যে যাঁরা অঙ্গ দানের সম্মতি দিয়ে গেছেন, তাঁদের মস্তিষ্কের মৃত্যুর পর তা নেওয়া যাবে। ভারতের অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন ১৯৯৪ অনুসারে, ব্রেইন স্টেমের মৃত্যুকে মৃত্যু হিসেবে ধরা হবে। তবে অঙ্গ দান করতে চান না—এমন ব্যক্তিদের মৃত্যুর সংজ্ঞা সেখানে স্পষ্ট করা নেই।

অনেক উন্নয়নশীল দেশে হৃৎপিণ্ড-শ্বাসতন্ত্রের প্রক্রিয়া থেমে যাওয়াকে মৃত্যুর সংজ্ঞা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। আফ্রিকায় প্রচলিত ধারণা, যেকোনোভাবেই হোক দীর্ঘজীবী হতে হবে। অনেক আফ্রিকান মনে করেন, জীবন তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে না গেলে তাঁরা আধ্যাত্মিক জগতে পূজনীয় হতে পারবেন।

কেনিয়ার চিকিৎসক ডাফনে নুগুনজিরি বলেন, বিষয়টি শুধু ধর্মীয় নয়। অনেক দেশে একজন মস্তিষ্ক মৃত মানুষকে মেডিকেল যন্ত্রপাতি দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখার মতো যন্ত্রপাতি তাদের নেই। তাই তারা হৃৎপিণ্ড-শ্বাসতন্ত্রের প্রক্রিয়া থেমে যাওয়াকে মৃত্যু হিসেবে ধরে নেয়।

সূত্র: প্রথম আলো, ইকোনমিস্ট, সিএনএন ও লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস

Offline Nusrat Jahan Bristy

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 482
  • Test
    • View Profile
Re: ব্রেইন ডেড
« Reply #1 on: May 13, 2018, 02:21:11 PM »
Thanks
Lecturer in GED

Offline masudur

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 164
  • I love teaching.
    • View Profile
    • Visit my website
Re: ব্রেইন ডেড
« Reply #2 on: May 13, 2018, 06:21:18 PM »
Thanks for sharing.
Mohammad Masudur Rahman,
Lecturer,
Department of Computer Science and Engineering,
Faculty of Science and Information Technology,
Daffodil International University,
Daffodil Tower,
4/2, Sobhanbag, Mirpur Road,
Dhanmondi, Dhaka-1207.