লোথার ম্যাথাউসের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ১৯৮২ সালে। তখনো বার্লিন দেয়ালের পতন হয়নি। পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত হয়ে ছিল জার্মানরা। মাত্র ২১ বছর বয়সে ম্যাথাউস প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিলেন পশ্চিম জার্মানির হয়ে। শেষ করেছিলেন ১৯৯৮ সালে অবিভক্ত জার্মানির হয়ে। পাঁচটি বিশ্বকাপে ম্যাথাউস খেলেছেন ২৫টি ম্যাচ। এটিই বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড হিসেবে আজও টিকে আছে।
১৯৮২ সালের অভিষেক বিশ্বকাপেই শিরোপা জয়ের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন ম্যাথাউস। শেষ পর্যন্ত অবশ্য হতাশ হতে হয়েছিল ফাইনালে ইতালির কাছে হেরে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপেও একই হতাশা। সেবার ফাইনালে ম্যাথাউসের পশ্চিম জার্মানি হেরেছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনার কাছে। ম্যাথাউসের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয় ১৯৯০ সালে। সেবার আর্জেন্টিনাকে হারিয়েই প্রতিশোধ নিয়েছিলেন ম্যাথাউস। সেই আসরে পশ্চিম জার্মানির অধিনায়কও ছিলেন তিনি। ১৯৯৪ ও ১৯৯৮ সালের শেষ দুটি বিশ্বকাপে ম্যাথাউসের দলকে অবশ্য বিদায় নিতে হয় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে।
মেক্সিকো বিশ্বকাপের পুরোনো দলগুলোর একটি। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল তাঁরা। ১৯৭০ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠাই তাঁদের সেরা সাফল্য। আবার ১৫টি বিশ্বকাপ খেলে সর্বোচ্চসংখ্যক ম্যাচ হারের রেকর্ডও মেক্সিকোর। এ পর্যন্ত ২৫ ম্যাচ হেরেছে তাঁরা। বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে সবচেয়ে বেশিবার বিদায় নেওয়া দলটাও মেক্সিকো।
আন্তনিও কারবাহল এই মেক্সিকোরই কিংবদন্তি গোলরক্ষক। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফুটবল হিস্টরি অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকসের (আইএফএফএইচএস) মতে, কনকাকাফ অঞ্চলে কারবাহল বিশ শতকের সেরা গোলরক্ষক। ১৯৫০ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত মোট পাঁচটি বিশ্বকাপে খেলেছেন কারবাহল। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বিশ্বকাপ টুর্নামেন্ট খেলার রেকর্ডটা ৩২ বছর ধরে একার দখলে রেখেছিলেন তিনি। ’৯৮ ফ্রান্স বিশ্বকাপে তাঁর এই রেকর্ড ভাগ বসান লোথার ম্যাথাউস। তবে কারবাহল এখনো একটি জায়গায় অনন্য—সেটা অবশ্য ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ রেকর্ড—বিশ্বকাপে যুগ্মভাবে সবচেয়ে বেশি গোল হজম করেছেন তিনি। পাঁচ বিশ্বকাপে খেলে হজম করেছেন ২৫ গোল।
কিন্তু কারবাহল একাই এ রেকর্ডটির মালিক নন। পরবর্তী সময়ে তাঁর এই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন মোহাম্মদ আলী দেয়াইয়ি। চারটি বিশ্বকাপ খেলে কারবাহলের সমান ২৫ গোল হজম করেছেন সৌদি আরবের সাবেক এই গোলরক্ষক।
বিশ্বকাপ তো কোচদেরও। ট্যাকটিস নিয়ে লড়াইয়ের সেরা রণক্ষেত্র। তা এই লড়াইয়ে যিনি সবচেয়ে বেশিবার শিষ্যদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন, তিনি হেলমুট শন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৮—এই ১৪ বছরে তাঁর অধীনে চারটি বিশ্বকাপে খেলেছে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি। এর মধ্যে ’৭৪ বিশ্বকাপে দেখেছেন শিরোপার মুখ। এই চার বিশ্বকাপে মোট ২৫ ম্যাচে তাঁর অধীনে খেলেছে পশ্চিম জার্মানি। বিশ্বকাপে এটাই সর্বোচ্চসংখ্যক ম্যাচে কোচিংয়ের রেকর্ড।
১৯৫৪ বিশ্বকাপে অনেকে মনে রেখেছেন স্যান্ডর ককসিস, ন্যান্দর হিদেকুটি, ফেরেঙ্ক পুসকাসদের সেই হিরণ্ময় দলটার জন্য। বিশ্বকাপ না জেতা সেরা দলগুলোর একটি হিসেবে ইতিহাসে ঠাঁই করে নিয়েছে ’৫৪-র হাঙ্গেরি। সেবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গোলও (২৭) তাদের। বিশ্বকাপের এক টুর্নামেন্টে এটাই সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, বিশ্বকাপ জেতা দলগুলোর মধ্যে এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোল কার? জবাব খুঁজতে ফিরে যেতে হবে সেই ’৫৪-তেই। ঠিকই ধরেছেন, চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম জার্মানি সেবার ২৫ গোল করেছিল। বিশ্বকাপজয়ী দলগুলোর মধ্যে এক টুর্নামেন্টে এটাই সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড।
Source:
http://www.prothomalo.com/sports/article/1492666/%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B2-%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AF%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%93-%E0%A6%88%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%A8%E0%A6%BE