মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিদের সুস্থ কতগুলো অভ্যাস থাকে। তারা তাদের চিন্তা, আবেগ, আচরণকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে যা তাদের জীবনে সাফল্য বয়ে আনে। নিম্নের বিষয় গুলো মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিরা করেনা যা চর্চা করে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন দৃঢ় মানসিকতার অধিকারী-
১. নিজের দুঃখকে মনে করে সময় অপচয় করেনাঃ
মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিরা তাদের খারাপ অবস্থার কথা ভেবে বসে থাকে না। বরং তারা বুঝতে পারে জীবন সবসময় সহজ ও সুন্দর হয়না। তাই তাদের জীবনে ভূমিকার জন্য দায়িত্ব নেয়।
২. তারা তাদের ক্ষমতা বিলিয়ে দেয় নাঃ
তারা নিজেকে অন্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে দেয় না, এবং সে ক্ষমতা অন্যের হাতে দিয়ে দেয়না। তারা এমন কিছু বলেনা, যেমন- আমার বস আমার মুডটাই খারাপ করে দিয়েছে। তারা জানে যে নিজের আবেগের উপর তাদের নিজের নিয়ন্ত্রণ আছে।
৩. তারা পরিবর্তন থেকে দূরে থাকেনাঃ
মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিরা পরিবর্তন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেনা। তার চেয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনকে স্বাগত জানায়, নমনীয় হতে ইচ্ছুক থাকে। তারা তাদের মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখে এবং জানে পরিবর্তন অনিবার্য।
৪. যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে তাতে সময় নষ্ট করেনাঃ
আপনি মানসিকভাবে দৃঢ় কোন ব্যক্তির কাছে লাগেজ হারানো কিংবা ট্রাফিক জ্যাম সম্পর্কে কোন অভিযোগ শুনবেন না। তার চেয়ে তাদের জীননে যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে তাতেই মনোনিবেশ করে। তারা জানে যে মাঝে মাঝে দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা।
৫. সবাইকে খুশি করতে উদ্বিগ্ন নয়ঃ
তারা বুঝে সবসময় সবাইকে খুশি করার দরকার নাই। প্রয়োজনে না কিংবা উচ্চস্বরে কথা বলতে তারাকুণ্ঠাবোধ করেনা।
৬. উপযুক্ত ঝুঁকি নিতে ভয় করেনাঃ
তারা বোকার মতো অপরিণামদর্শী ঝুঁকি নেয়না। বড় কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ঝুঁকি এবং লাভের পাল্লা বিবেচনায় সময় ব্যয় করে। অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ সচেতন।
৭. তারা অতীতের সাতবে বাস করেনাঃ
মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিরা অতীত নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করে না। তারা অতীত স্বীকার করে এবং বলতে পারে যে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছে। তারা বর্তমানে বাস করে এবং ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা নির্ধারণ করে।
৮. একই ভুল বারবার করেনাঃ
তারা তাদের আচরণের দায় স্বীকার করে এবং ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। ফলশ্রুতিতে তারা একই ভুল বার বার করেনা।
৯. অন্যের সাফল্যে ক্ষুব্ধ হয় নাঃ
তারা অন্যের সাফল্য উদযাপন ও প্রশংসা করে। অন্যেরা তাদের অতিক্রম করে গেলে তারা ইর্ষান্বিত হয়না। তার চেয়ে বুঝে যে সাফল্য কঠিম পরিশ্রমের মাধ্যমেই আসে এবং তারা নিজেদের সাফল্যের সুযোগ সৃষ্টির জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যেতে থাকে।
১০. প্রথমবার ব্যর্থতায় হাল ছেড়ে দেয়নাঃ
ব্যর্থতাকে তারা হাল ছেড়ে দেয়ার কারণ বলে মনে করে না। বরং ব্যর্থতাকে তারা নিজের উন্নতির জন্য সুযোগ হিসাবে নেয়। কোন জিনিস না পাওয়া পর্যন্ত তারা লেগে থাকে।
১১. একাকীত্বকে ভয় করেনাঃ
মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিরা একাকীত্ব সহ্য করতে পারে এবং নিরবতাকে ভিয় করেনা। তারা তাদের একাকীত্বের সময়কে উৎপাদনশীল চিন্তায় ব্যয় করে। তারা নিজের সঙ্গ উপভোগ করে। বিনোদনের জন্য তারা অন্যের সঙ্গের উপর নির্ভরশীল নয়।
১২. তারা মনে করে না পৃথিবী তাদের কাছে ঋণীঃ
তারা এমন মানসিকতা নিয়ে জন্মায় না যে অন্য মানুষ তাদের দেখাশুনা করবে অথবা পৃথীব তাদেরক অবশ্যই কিছু দিতে হবে। তার চেয়ে তাদের যোগ্যতা অনুসারে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।
১৩. তারা তাৎক্ষণিক ফল আশা করেনাঃ
মানসিকভাবে দৃঢ় ব্যক্তিরা তাৎক্ষণিক ফলাফল আশা করেনা। তার পরিবর্তে তারা তাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দক্ষতা ও সময় প্রয়োগ করে এবং জানে বাস্তবিক পরিবর্তনে অনেক সময় লাগে।