মিস আক্তার, বয়স ২০ বছর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ছে। গত ৩ মাস ধরে বুকের বাম পাশে ব্যথা অনুভব করছে। পরীক্ষার আগে ব্যথা বাড়ে, বসে থাকলে হয়, কখনও শোয়ার পরও হয়। পরিশ্রম করলে ব্যথা বাড়ে না। ব্যথা কখনও ডান পাশেও হয়, পিঠের দিকে যায়।
চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, রক্তের ডায়াবেটিস ও চর্বির মাত্রা, বুকের এক্স-রে ও পেটের আল্টাসনোগ্রাম করালেন। রিপোর্ট স্বভাবিক। এরপরও ডাক্তার তাকে ইটিটি করাতে বললেন। মিস আক্তার অবাক হলেন, সব কিছু স্বাভাবিক থাকলেও ইটিটি করাতে হবে কেন?
মিস আক্তার, ইটিটি ট্রেডমিলে ৬ থেকে ৯ মিনিট হাঁটলেন, যদিও কারও কারও আরও বেশি হাঁটার প্রয়োজন হয়। সঙ্গে ইসিজি ও ইকো রিপোর্ট ছিল। হাঁটার সময় তার বুকে তীব্র ব্যথা বা রক্ত চাপ কমে যাওয়ার মতো সমস্যা হয়নি। ইসিজিতেও কোনো পরিবর্তন আসেনি।
ইটিটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসল। ডাক্তার জানালেন, এর অর্থ হচ্ছে- হৃদপিণ্ডের রক্তনালীতে ৭০% বেশি ব্লক থাকার আশঙ্কা কম। অর্থাৎ রক্তনালীতে যে ব্লক নেই তা বলা যাবে না। ইটিটি নেগেটিভ হলেও হার্টঅ্যাটাক হতে পারে। ৭০%-এর কম ব্লক ফেটে গিয়ে থ্রম্বোসিস হয়ে রক্তনালী জমাট বেঁধে হার্টঅ্যাটাক হতে পারে।
জানা দরকার, ইটিটি নেগেটিভ হলে যাদের এক বা একাধিক রিস্ক সেক্টর আছে- যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ধূমপায়ী, রক্তে উচ্চমাত্রা কোলেস্টরেল এবং ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সিটি এনজিওগ্রাম বা ইনভেসিভ এজিওগ্রাম করা উচিত। হার্টঅ্যাটাকের পরেও ইটিটি করা যায়।
অধ্যাপক ডা. মো. তৌফিকুর রহমান (ফারুক)
মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা
মোবাইল ফোন : ০১৭৭৭৭৫১২৫১।