সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার আগে ভাবুন

Author Topic: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ার আগে ভাবুন  (Read 1234 times)

Offline Md. Mahmudul Hasan_IT

  • Newbie
  • *
  • Posts: 4
  • Assistant IT Officer
    • View Profile
    • Asst. IT Officer, Daffodil International University

THINK-before you post or share on social media. আমরা অহরহ ফেসবুক বা অন্য সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে (সোশ্যাল মিডিয়া) বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করছি। গ্রুপের নিয়ম মানা তো আছেই। তা ছাড়াও নিজের বা অন্যদের ওয়ালে কোনো কিছু পোস্ট বা শেয়ার করার ব্যাপারে একটু সচেতন হলে মনে হয়, সবার জন্যই ভালো। কিছুদিন আগে একটা প্লে-সেন্টারে একটা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে একটা ছোট পোস্টার দেখি।

অনেকটা এ রকম, মেসেজটা হচ্ছে—‘কিছু বলার আগে ভাবুন’।
আমি দেখলাম এটা আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গেও সঠিকভাবে যায়। আমরা ইন্টারনেট আর সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে যা পোস্ট ও শেয়ার করছি, তার আগে আমরা কি ভাবছি? Are we THINKing? ব্যাখ্যা করছি।

T=True?

প্রথমেই দেখতে হবে যা লিখছি বা শেয়ার করছি সেটা সত্যি কি না। ইন্টারনেটে যা-ই পড়ছি, যা-ই দেখছি, জরুরি না সবই সত্যি। বরং বেশির ভাগই বিশ্বাস করার মতো না; স্ক্যাম। তাই যা দেখছেন, যাই পড়ছেন, যাই শেয়ার করছেন, সত্য ভেবে অন্ধের মতো বিশ্বাস না করে বরং একটু যাচাই করুন। আবার দেখুন একটা ভুল তথ্য দিয়ে উল্টো কারও ক্ষতি করে ফেলছেন কি না? বিশ্বাস করুন, আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, ধর্ম নিয়ে মিথ্যা কথা সবচেয়ে বেশি শেয়ার করা হয়। আর আমরা কিছু না বুঝেই রি-শেয়ার করে ফেলি এই বিশ্বাস থেকে যে, ধর্ম নিয়ে নিশ্চয়ই কেউ ফাজলামি করবে না। দুঃখজনক কথা হচ্ছে-দিস ইজ নট দ্য কেস। পোস্ট করুন শুধুমাত্র তখনই, যখন আপনি নিশ্চিত মিথ্যা ছড়াচ্ছেন না, অথবা মিথ্যাকে সমর্থন দিচ্ছেন না। দায় কিন্তু আপনারও।

H=Helpful?

কিছু শেয়ার করার আগে একটু ভেবে দেখুন সেটা কার কতটা কাজে আসতে পারে। অথবা আদৌ কারও কাজে আসবে কি না? যদি না আসে, তবে সেই সব অন্ধের মতো শেয়ার করতে থাকাটা বন্ধু তালিকার অনেকেরই বিরক্তির কারণ হতে পারে। যদি কোনো পোস্ট শুধুমাত্র কোনো একজনের উদ্দেশ্যে হয়, শুধুমাত্র তার সঙ্গেই শেয়ার করুন। (জোক/ট্রল পোস্ট ঠিক আছে, তবে সেটার লিমিট রাখা নিজের ব্যক্তিত্বের জন্যই ভালো)।

I=Inspiring?

চিন্তা করে দেখুন যা লিখছেন, যা শেয়ার করছেন, সেটা কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে কি না। সেটা যাই হোক না কেন, যত টারগেটেড হোক না কেন। আপনার অর্জন ও সাফল্য শেয়ার করুন। বিস্তারিত দিন যাতে কেউ তার থেকে কিছু শিখতে পারে। হয়তো আপনার অজান্তেই আপনি কাউকে নতুন করে বাঁচা শেখাচ্ছেন। (শো-অফ বা ফুটানি অংশটুকু ফিল্টার করে অবশ্যই। মাথায় রাখুন—শুধুমাত্র অর্জনটুকুই শেয়ার করুন। আপনি কিছু ইনহেরিট করেছেন, সেটা কিন্তু আপনার অর্জন না, আরেকজনের অর্জন)।

N=Necessary?

সাধারণ যা শেয়ার করছেন বা পোস্ট করছেন, করাটা কি জরুরি? অপ্রয়োজনীয় পোস্ট করে বন্ধু তালিকার সবাইকে বিরক্ত করছেন না তো? ঘণ্টায় ঘণ্টায় গেম রিকোয়েস্ট পাঠানো, ব্যাপারটা অনেকের জন্যই বিরক্তিকর। আপনার লুকেলাইক ব্র্যাড পিট না জেনিফার লোপেজ, আপনি আগের জন্মে কোনো সেলিব্রেটি ছিলেন, কবে মারা যাবেন, সেটা জেনে আপনি মনে মনে প্রফুল্ল হতে পারেন, বন্ধু তালিকার পাঁচ শজনের এটা জেনে কোনোই কাজ নাই। নিজেকে ওপরে তুলছেন না নামাচ্ছেন; হাস্যাস্পদভাবে উপস্থাপন করছেন? প্রোডাকটিভ কিছু শেয়ার করুন, কম ভুয়া লাইক পাবেন, কম লোকের বিরক্তির কারণও হবেন।

K=Kind?

ইজ ইট কাইন্ড? কাউকে, কোনো একটা গ্রুপ, জাতি, জেন্ডার ও সংখ্যালঘুকে মানসিকভাবে আঘাত করে ফেলছেন না তো? জাস্ট আপনি সংখ্যাগরিষ্ঠের অংশ বলে, জাস্ট আপনি পারেন বলে? সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে সংখ্যালঘুকে নিরাপদ রাখাটা বরং আপনার একটা বড় কর্তব্য। কোনো একদিন কোনো এক পরিস্থিতিতে আপনিও সংখ্যালঘু হয়ে যেতে পারেন। আবার জাতীয় ব্যক্তিত্বদের সাময়িক ব্যর্থতা নিয়ে লিখছেন, ভেবে দেখেন একটা জাতীয় অর্জনের পেছনে তাদের ভূমিকা কতটুকু। আপনি কতটুকু রাখছেন?
সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম এখন একটা অনেক বড় মিডিয়া। তাই কোথায় কী লিখছেন, কী শেয়ার করছেন, সেটা অনেক সহজেই পাবলিক হয়ে যেতে পারে। তাই কমনসেন্স ব্যবহার করুন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমকে সুন্দরভাবে ব্যবহার করুন।