গ্রীষ্মেকালে গরম লাগবেই। তবে এ সময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খেতে পারেন নানান রকম ফল। গরম লাগলেই এই লেখায় আলোচিত খাবারগুলি খেয়ে ফেলবেন। তাহলেই দেখবেন গরমকে আপনি নিমেষে হারিয়ে দিতে পারছেন।জেনে নিন শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পারে কোন কোন খাবার-
১. ডাব : এতে রয়েছে প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইটস, যা শরীরে পানির মাত্রা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শক্তি বাড়াতেও সাহায়তা করে। তাই গরমকালে প্রতিদিন কম করে একটা ডাব খেতেই হবে।
২. শসা : পানি ও আঁশ থাকার কারণে গরমকে হারাতে শসার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয় এতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন থাকার কারণে এটি খেলে শরীর ঠাণ্ডা তো হয়ই, সেই সঙ্গে ক্লান্তিও দূর হয়।
৩. আইসড টি: যারা চা-প্রেমী তাদের জন্য উপযোগী পানীয় আইসড টি। নিজের পছন্দের চা বানিয়ে তা ঠাণ্ডা করে বরফ কুচি মিশিয়ে পান করুন। গরমে লেবু, স্ট্রবেরি, কমলা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি চা বেশ উপযোগী।
৪. মিন্ট পাতা : শরীর ঠাণ্ডা রাখতে মিন্ট পাতার কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই গরমকালে খাবারের সঙ্গে মিন্ট পাতা মিশিয়ে খেলে শরীর ভালো থাকে। প্রসঙ্গত, ডালে বা দইয়ে মিন্ট পাতা দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অথবা চাটনি বানিয়েও খেতে পারেন।
৫. লেবুর পানি : তেষ্টা মেটাতে কোল্ড ড্রিংকস না খেয়ে এবার থেকে লেবুর পানি খাওয়া শুরু করুন। গরমের সময় শরীরকে তাজা রাখতে এটির কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৬. নারিকেলের পানি: গরমের দিনে তৃষ্ণা মেটাতে নারিকেলপানির জুড়ি নেই। এই প্রাকৃতিক সুস্বাদু পানীয় রক্তের ইলেট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং এতে শরীর ঠাণ্ডা থাকে। তাছাড়া নারিকেলের শাঁসে আছে প্রচুর আঁশ, প্রাকৃতিক এনজাইম, আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়াশ-সহ আরও বেশ কিছু খনিজ উপাদান। তাই নারিকেল খাওয়া গরমে বেশ উপকারী।
৭.সবুজ শাক-সবজি : এই ধরনের খাবারে আঁশ এবং পানির মাত্রা খুব বেশি পরিমাণে থাকে। তাই তো প্রতিটা খাবারের সঙ্গে অল্প করে সবজি খেলে শরীরে পানির মাত্রা কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। সেইসঙ্গে শরীরও চাঙা হয়ে ওঠে।
৮. দই : গরমকালের সবথেকে শ্রেষ্ঠ খাবার হলো টক দই। কারণ এতে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা শরীরকে চনমনে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯. তরমুজ : কোন ফলে পানির মাত্রা বেশি থাকে? তরমুজে! একদম ঠিক বলেছেন। তাই তো গরমকালে এই ফলটি খাওয়া মাস্ট। কারণ গরমের সময় মাত্রাতিরিক্ত ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়। আর এমনটা হলেই ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কা বাড়ে। তরমুজে থাকা পানি মানবদেহের এই পানির ঘাটতি দূর করে।
১০. হালকা খাবার খান : গরমকালে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়। তাই এই সময় হালকা খাবার খাওয়াই শ্রেয়। বেশি ঝাল-মশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চললেই দেখবেন খুব সহজেই গরমকে ডজনখানেক গোল দিয়ে দিতে পেরেছেন। প্রসঙ্গত, এই সময় শরীর ঠিক রাখতে আঁশসমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
মরিচ: স্বাদে ঝাল। তবে মরিচ শরীর ঠাণ্ডা রাখে। শুনতে অবাক লাগলেও কথা সত্যি। মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন উপাদান শরীরের রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এতে শরীরে ঘাম হয়। আর ঘামই শরীরের বাড়তি তাপ কমিয়ে শরীর ঠাণ্ডা করে আনতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজের রস: হিট স্ট্রোক এড়াতে বেশ উপযোগী ঘরোয়া টোটকা পেঁয়াজের রস। এক চামচ পেঁয়াজের রস পান করলে, অতিরিক্ত সূর্য তাপের কারণে শরীর ও মস্তিষ্কের যে কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেগুলো সেরে উঠতে থাকে। তাছাড়া শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে বুকের উপর খানিকটা পেঁয়াজের রস লাগিয়ে রাখা যেতে পারে। গরমে সালাদের সঙ্গে পেঁয়াজ খাওয়া বেশ উপকারী।
ফলের তৈরি পপসিকল: বাজার থেকে ললি বা আইসক্রিম না কিনে ঘরেই বিভিন্ন মৌসুমি ফল ব্লেন্ড করে পপসিকল তৈরি করে নিন। স্ট্রবেরি, আম, নারিকেলের পানি, তরমুজ ইত্যাদি মিলিয়ে ফ্রিজের বরফ জমার ফ্রেমে দিয়ে জমিয়ে নিন। সঙ্গে দিতে পারেন কমলার সুগন্ধি বা আদার রস। ঠাণ্ডায় অল্প জমে আসতেই প্রতিটি খোপে কাঠি গুঁজে দিতে পারেন।