গর্ভকালীন সমস্যা

Author Topic: গর্ভকালীন সমস্যা  (Read 76464 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
গর্ভকালীন সমস্যা
« on: October 22, 2011, 01:03:53 PM »
গর্ভকালীন সমস্যা

প্রতি বছর গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতায় আমাদের দেশের বহু নারীর মৃতু্য হয়৷ গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা ও সমস্যা সম্পর্কে অজ্ঞতা ও সচেতনতার অভাবে মা ও শিশু উভয়ের জীবনই ঝঁুকিপূর্ণ হতে পারে৷ তাই এ ধরনের সমস্যাগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া এবং এ থেকে নিরাপদ থাকার কিছু পরামর্শ দেয়া হলো৷ মনে রাখবেন গর্ভকালীন সমস্যা বিষয়ে সচেতনতা ও সঠিক পরিচর্যাই পারে মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে৷

গর্ভকালীন বিভিন্ন সমস্যা নিচে দেওয়া
১.  গর্ভপাত
২.  প্রি-এক্লাম্পশিয়া
৩.  এক্লাম্পশিয়া
৪.  ফিস্টুলা
৫.  পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া
৬.  প্রসবপূর্ব সেবা
৭.  প্রসবোত্তর সেবা

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #1 on: October 22, 2011, 01:05:39 PM »
 গর্ভপাত     

                                                     
গর্ভপাত 
যদি কোনো কারণে গর্ভস্থ ভ্রূণ আটাশ সপ্তাহ বা সাত মাসের পূর্বে মাতৃজঠর বা জরায়ু থেকে বের হয়ে যায় তবে তাকে গর্ভপাত বা এ্যাবরশন বলে৷

কারণ
গর্ভপাতের কারণগুলোকে মোটামুটি দুভাগে ভাগ করা যায়-
১. ভ্রুণের অস্বাভাবিকতা বা ক্রমোজমের ত্রুটি
২. গর্ভবতী মায়ের শরীরের নানা ত্রুটির জন্য গর্ভপাতের আশংকা থাকে৷ যেমন-

    * গর্ভবতীর যদি গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হয় এবং তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে উঠে যায়৷
    * গর্ভবতীর যদি গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বেড়ে যায়৷
    * গর্ভবতীর যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং তা যদি পূর্বে শনাক্ত করা না হয়ে থাকে এবং অনিয়ন্ত্রিত থাকে৷
    * গর্ভবতীর যদি কিডনীর অসুখ (নেফ্রোটিক সিনড্রোম) থাকে৷
    * গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় হাম রোগে আক্রান্ত হয়৷
    * গর্ভবতী যদি গর্ভাবস্থায় কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়৷
    * থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে৷
    * জরায়ুর টিউমার বা জরায়ুর গঠনগত কোনও ত্রুটি থাকলে৷
    * জরায়ুতে গর্ভফুল বা প্ল্যাসেন্টা যদি খুব নিচে নেমে আসে তাহলেও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে৷
    * আগের গর্ভাবস্থা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে গর্ভপাত করানো হয়৷
    * মায়ের শরীরে প্রোজেস্টেরোন হরমোন কম থাকার কারণে গর্ভপাত হতে পারে৷
    * গর্ভবতী যদি অত্যধিক মদ্যপান বা ধূমপানে আসক্ত হন তবে গর্ভপাত হতে পারে৷
    * গর্ভবতী যদি প্রবল মানসিক পীড়ণে থাকেন বা চরম শোক দুঃখ পান তাহলে গর্ভপাত হতে পারে৷
    * গর্ভাবস্থায় পেটে আঘাত পেলে, অত্যধিক পরিশ্রম, বাস বা ট্রেনে অনেক দূরে যাতায়াত করলে গর্ভপাত হতে পারে৷

গর্ভপাতের শ্রেণীবিভাগ নিচে দেওয়া হলো-
থ্রেটেন্ড গর্ভপাত (Threatened Abortion) : যে গর্ভপাত অল্পের জন্য হলো না কিন্তু হবার ভয় থাকে৷ এতে তলপেটে অল্প ব্যথা এবং সামান্য রক্তস্রাব হয়৷ তাড়াতাড়ি উপযুক্ত চিকিত্‌সা করালে গর্ভপাত বন্ধ করা যেতে পারে৷

অসম্পূর্ণ গর্ভপাত (Incomplete Abortion) : ভ্রুণের কিছু অংশ যদি জরায়ুর ভেতরে রয়ে যায় তবে তাকে অসম্পূর্ণ গর্ভপাত বলে৷
জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত (Septic Abortion) : অনেক সময় জীবাণু সংক্রমণের ফলে গর্ভপাত হয়, তলপেটে ব্যথা হয় সেই সাথে পেট ফুলে যেতে পারে৷ পায়খানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে৷ রোগী মারাও যেতে পারে৷

মিস্ড গর্ভপাত (Missed Abortion) : জরায়ুর ভেতরে ভ্রূণ নানা কারণে মরে যায় এবং ঐ অবস্থায় মমির মতো জমাট বেঁধে থাকে৷
ইনএভিটেবল গর্ভপাত (Inevitable Abortion) : যে গর্ভপাত এড়ানোর কোনও ব্যবস্থা থাকে না তাকে ইনএভিটেবল গর্ভপাত বলে৷ যথাযথ সুচিকিত্‌সার মাধ্যমে সারিয়ে না তুললে পরবর্তীকালে জরায়ুমুখ খুলে যায় এবং গর্ভপাত নিশ্চিত হয়ে দাড়ায়৷
গর্ভপাতের উল্লেখিত প্রকার ভেদের মধ্যে সেপটিক অ্যাবরশন বা জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত সবচেয়ে মারাত্মক এবং আমাদের দেশে গর্ভবতী মায়েদের অকাল মৃতু্যর জন্য এর ভূমিকা অনেকখানি৷

বিভিন্ন শ্রেণীর গর্ভপাতের লক্ষণ
থ্রেটেন্ড গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * রক্তস্রাব অল্প সামান্য হতে পারে৷

    * পেটের ব্যথা নাও থাকতে পারে, থাকলেও খুব অল্প, কোমর বা তলপেটে সামান্য ব্যথা থাকতে পারে৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রুণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
    * জরায়ুর মুখ বন্ধ থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷

অসম্পূর্ণ গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * রক্তস্রাব অনেকদিন একইভাবে হতে পারে৷
    * পেটে ব্যথা থাকতে পারে নাও পারে৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে৷
    * জরায়ুর মুখ খোলা থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷

জীবাণুদুষ্ট গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * কট গন্ধযুক্ত রক্ত স্রাব হতে পারে৷
    * প্রথমদিকে পেটে ব্যথা না হলেও পরে তলপেটে খুব ব্যথা হবে৷

    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসতেও পারে নাও পারে৷
    * জরায়ুর মুখ খোলা বা বন্ধ থাকতে পারে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
    * শীত করে এবং কঁাপিয়ে জ্বর আসতে পারে৷
    * রক্ত চাপ কমে যায়৷
    * অত্যধিক রক্ত ক্ষরণের কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে৷ রোগী ফ্যাকাশে হয়ে পড়ে৷

মিস্ড গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রূণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
    * পেটে ব্যথা থাকবে না৷
    * জরায়ুর মুখ সাধারণত বন্ধ থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷
    * রক্তস্রাব হবে না, সামান্য বাদামি দাগ লাগতে পারে৷

ইনএভিটেবল গর্ভপাত

    * কয়েকমাস মাসিক (পিরিয়ড) বন্ধ থাকবে৷
    * খুব বেশি পরিমাণে রক্তস্রাব হবে৷

    * তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা৷
    * প্রসবদ্বার দিয়ে ভ্রুণ, তার আস্তরণ ও ফুল বেরিয়ে আসবে না৷
    *  জরায়ুর মুখ খোলা থাকবে (ডাক্তার পরীক্ষা করে বুঝবেন)৷

চিকিত্‌সা

    * গর্ভপাত শনাক্ত করা সম্ভব হলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷

পরামর্শ

    * কমপক্ষে একমাস বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত৷
    * বাড়ির হালকা কাজকর্ম করা যেতে পারে৷
    * একমাস স্বামী-সহবাস করা যাবে না৷
    * পরবর্তী বাচ্চা নেওয়ার আগে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিতে হবে৷

প্রতিরোধ

    * সন্তান সম্ভাব হলেই চিকিত্‌সককেরকাছে পূর্বের সকল ইতিহাস খুলে বলতে হবে৷
    * নিয়মিত চেকআপ জরুরি৷
    * সন্তান সম্ভাব হওয়ার প্রথম দিকে রিকশা, বাস, ট্রাম, ট্রেন ইত্যাদির ঝঁাকুনি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত৷
    * টিউবয়েল পাম্প করা, পানি ভর্তি ভারী বালতি তোলা, বাচ্চা কোলে নেওয়া ঠিক নয়৷
    * ছোঁয়াচে অসুখ থেকে গর্ভবতী মাকে দূরে রাখতে হবে৷
    * দোকান বা হোটেলের খাবার না খাওয়াই ভালো৷
    * প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে৷ |
       

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী কিশোরী থেকে বৃদ্ধা, ডা. সুমন চৌধুরী :
 

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #2 on: October 22, 2011, 01:06:29 PM »
প্রি-একলাম্পশিয়া
প্রি-একলাম্পশিয়া
প্রি-একলাম্পশিয়া গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ অর্থাত্‌ ৫ মাস পর থেকে দেখা দেয়৷

কারণ

    * একবার প্রি-একলাম্পশিয়া হলে
    * প্রি-একলাম্পশিয়া পরিবারে কারো হলে
    * পরিবারে কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলে
    * যাঁরা বেশি বয়সে মা হন তাদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
    * উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং নেফ্রাইটিস রোগীদের

লক্ষণ

    * রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া৷ রক্তচাপ সাধারণত ১৪০/ঌ০ (মিলিমিটার) এর বেশি থাকে
    * প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন (আমিষ) জাতীয় পদার্থ শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া
    * হাত-পায়ে পানি আসা
    * মাথা ব্যথা
    * অনিদ্রা
    * চোখে ঝাপসা দেখা

    * প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
    * বমি
    * পেটে ব্যথা
    * প্রি-একলাম্পসিয়া হওয়ার শুরুতেই শরীরে ওজন বাড়তে থাকে
    * সপ্তাহে আধা কেজি ওজন বৃদ্ধি পায়

চিকিত্‌সা

    * প্রি-একলাম্পশিয়া আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত চেকআপ করানো দরকার
    * খাবারের সঙ্গে আলাদা লবণ খাওয়া বন্ধ করতে হবে
    * প্রোটিন এবং ক্যালোরি যুক্ত খাবার খেতে হবে
    * পুষ্টিকর নরম খাবার খেতে হবে
    * রাতে গড়ে ৮ ঘণ্টা এবং দিনে ২ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে
    * পা ফুলে গেলে পা দুটো বালিশের উপর উঁচু করে রেখে ঘুমাতে হবে
    * ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ এবং প্রেসারের ওষুধ খেতে হবে
    * রক্তচাপ, ওজনের চার্ট তৈরি করতে হবে

    * প্রস্রাবের সঙ্গে প্রোটিন যাচ্ছে কি না তার চার্ট করতে হবে
    * বাচ্চার অবস্থাও বারবার দেখতে হবে
    * প্রয়োজনে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে

সঠিক সময়ে চিকিত্‌সা না করালে নিম্নলিখিত সমস্যা হতে পারে

মায়ের সমস্যা

    * প্রস্রাব না হওয়া অথবা অল্প হওয়া
    * চোখে কম দেখা এমনকি অন্ধ হয়ে যাওয়া
    * বাচ্চা প্রসবের পর অতিরিক্ত রক্তপাত হওয়া
    * একলাম্পশিয়া বা খিঁচুনি হওয়া

শিশুর সমস্যা

    * বাচ্চা মাতৃগর্ভে মারা যেতে পারে
    * বাচ্চার বৃদ্ধি ঠিকমত হবে না
    * জণ্মের সময় শ্বাসকষ্ট হবে

প্রতিরোধ

    * গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত প্রসবপূর্ব চেক-আপের ব্যবস্থা করা
    * গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা

প্রসবপূর্ব চেক-আপের সময় শারীরিক ওজন ও রক্তচাপ, পায়ে পানি আসে কিনা, প্রস্রাবে এলবুমিন যায় কিনা এগুলো পরীক্ষা করা উচিত৷

ল্যাব পরীক্ষা

    * প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা
    * ২৪ ঘণ্টায় প্রস্রাবের প্রোটিন পরীক্ষা
    * রক্তে ইউরিয়া, ইউরিক এ্যাসিড এবং ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ দেখা
    * এসজিপিটি পরীক্ষা
    * পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে বাচ্চার অবস্থা দেখা৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
স্বাস্থ্যের টুকিটাকি ডা. রুমানা আহমদ
ড্রাগ ডিরেক্টরী
দেহের যত অসুখ বিসুখ, ডা. বরেন চক্রবর্তী

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #3 on: October 22, 2011, 01:07:02 PM »
এক্লাম্পশিয়া বা গর্ভাবস্থায় খিঁচুনি

এক্লাম্পশিয়া
এক্লাম্পশিয়া মূলত প্রি-এক্লাম্পশিয়ার গুরুতর অবস্থা৷ সাধারণত গর্ভধারণের ৬ মাস পর অথবা প্রসবের সময় অথবা প্রসবের কিছু সময় পর এটি হয়ে থাকে৷ তবে সহজভাবে বলা যায় যে প্রি-এক্লাম্পশিয়া রোগীদের যখন খিঁচুনি দেখা যায় তখন তাকে এক্লাম্পশিয়া বলে৷

কারণ

    * প্রি-এক্লাম্পশিয়া রোগীর চিকিত্‌সা না হলে
    * গর্ভবতী মায়ের সঠিক পরিচর্যা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করলে

লক্ষণ

    * রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া৷ রক্তচাপ সাধারণত ১৪০/ঌ০ (মিলিমিটার পারদ চাপ) এর বেশি থাকে৷
    * হাত পায়ে পানি আসা
    * অসহ্য মাথা ব্যথা
    * অনিদ্রা
    * খিঁচুনি
    *

      েচাখে ঝাপসা দেখা
    *

      অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে (প্রসবের সময়, আগে এবং পরে)
    *

      প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
    *

      বার বার বমি
    *

      পেটের উপর দিকে অসহ্য ব্যথা
    *

      শরীরে ওজন বাড়তে থাকে

চিকিত্‌সা

    * রোগীকে একটি আলাদা ঘরে বাম কাত হয়ে পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে৷
    * রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে পাঠাতে হবে, না হলে গর্ভবর্তী মা ও শিশু উভয়ের মৃতু্য অনিবার্য৷

প্রতিরোধ

    *

      গর্ভবতী মায়েদের নিয়মিত প্রসবপূর্ব চেক-আপের ব্যবস্থা করা
    *

      গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা
    *

      প্রসবপূর্ব চেক-আপের সময় শারীরিক ওজন ও রক্তচাপ, পায়ে পানি আসে কিনা, প্রস্রাবে এলবুমিন যায় কিনা এগুলো পরীক্ষা করা উচিত৷
    *

      গর্ভাবস্থায় প্রি-এক্লাম্পশিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিত্‌সা করা৷ প্রি-এক্লাম্পশিয়া প্রতিরোধ করা সহজ৷ কিন্তু এক্লাম্পশিয়া হলে রোগীর ও বাচ্চার জীবন রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
স্বাস্থ্যের টুকিটাকি, ডা. রুমানা আহমদ
ড্রাগ ডিরেক্টরী
দেহের যত অসুখ বিসুখ, ডা. বরেন চক্রবর্তী

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #4 on: October 22, 2011, 01:07:42 PM »
ফিস্টুলা
 
ফিস্টুলা হচ্ছে এক ধরনের অস্বাভাবিক নালী যার গায়ে কোষকলা থাকে এবং যা আবরণী কলা দিয়ে আবৃত শরীরের যে কোন দুটো অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটায়৷ মানুষের দেহে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধির পরিণতিতে বিভিন্ন রকম ফিস্টুলা হতে পারে৷ তবে সচরাচর যে সব ফিস্টুলা দেখা দেয় তা হচ্ছে -

১.এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তার ফিস্টুলা

২.ভেসিকে ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা

৩.রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা

এনাল ফিস্টুলা (Anal Fistula)
এনাল ফিস্টুলা বা পায়খানার রাস্তায় ফিস্টুলা হলে একটা নালী সৃষ্টি হয় যা পায়খানার রাস্তার ভেতরের কোনো অংশের সঙ্গে বাইরে সংযোগ স্থাপন করে দেয়৷ পায়খানার রাস্তায় দীর্ঘদিনের সংক্রমণ ও প্রদাহের ফলে এ রোগ দেখা দেয়৷

লক্ষণ

    * পায়খানার রাস্তার পাশ দিয়ে পুঁজ পড়ে, আক্রান্ত স্থানে ঘা হয়৷
    * জ্বর হয়
    * পায়খানার রাস্তার পাশে ছিদ্র পাওয়া যায় (চিকিত্‌সক পরীক্ষা করলে)
    * পায়খানার রাস্তার পাশের ছিদ্রে চাপ দিলে পুঁজ বের হয়ে আসে৷

চিকিত্‌সা
এ রোগের একমাত্র চিকিত্‌সা হচ্ছে শল্য চিকিত্‌সা বা অপারেশন৷ তাই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল বা বিশেষজ্ঞ সার্জনের কাছে পাঠাতে হবে৷ না হলে পরবর্তী সময়ে নানাজটিলতা দেখা দিতে পারে৷
ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Vesico Vaginal Fistula-VVF)
৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতাসম্পন্ন গর্ভবতীদের অনেক সময় প্রসবের পথ সরু থাকে এবং অনেক সময় প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা প্রসব পথে আটকে যায়৷ আর এই প্রসব পথের চাপ যদি মূত্রথলির দিকে থাকে৷ তবে  যোনিপথ ও মূত্রথলির মাঝখানের দেয়াল ছিদ্র হয়ে সব সময় মূত্র যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে৷ ইহাকে ভেসিকো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বা ভিভিএফ বলে৷
রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা (Recto Vaginal Fistula-RVF)
যোনি ও মলদ্বারের দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যোনি পথ দিয়ে বের হওয়াকে রেকটো ভ্যাজাইনাল ফিস্টুলা বলে৷

কারণ

    *

      জণ্মগত
    *

      বাইরের কোনও বস্তু যদি যোনিপথে ও মলদ্বারে আঘাত করে পথ সৃষ্টি করে৷
    *

      প্রসবকালে যদি দীর্ঘ সময় ধরে শিশুর মাথা যোনিপথে আটকে থাকার ফলে যোনিপথের দেয়ালের কোষকলাগুলিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে কোষকলা নষ্ট হয়ে যায় এবং তার ফলে দেয়াল ছিদ্র হয়ে মল যৌনিপথে চলে আসে৷
    *

      বাধাপ্রাপ্ত প্রসবের কারণে ফরসেপ ব্যবহার করার সময় ফরসেপ সঠিকভাবে ব্যবহার করা না হলে৷
    *

      শিশুর মাথা তাড়াতাড়ি প্রসব করানোর জন্য ধাত্রী হাত দিয়ে বার বার প্রসবের রাস্তা প্রশস্ত করার   চেষ্টা করলে বা টানা হেঁচড়া করে প্রসবের চেষ্টা করলে৷
    *

      জরায়ুর মুখ পুরোপুরি খোলার আগেই এবং হঠাত্‌ করে প্রসবের ব্যথা আসার কারণে মা কেঁাথ দিয়ে প্রসব করার ফলে যোনিপথের দেয়াল ছিঁড়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে৷

লক্ষণ

    * যোনিপথে ব্যথা অনুভব হবে
    * যোনিপথের দেয়াল ঢিলে হয়ে যাওয়ার ফলে সহবাসে অসুবিধা হয়
    * সব সময় মল যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে

চিকিত্‌সা
যদি কোনও রোগীর উপরোক্ত লক্ষণগুলো ধরা পড়ে তবে তাকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷

পরামর্শ

    * প্রথবার প্রসবের সময় ১২ ঘণ্টার বেশি হলে এবং দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী প্রসবের সময় ৬ ঘণ্টার বেশি হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷
    * জরায়ুর মুখ ছোট হলে বাচ্চা প্রসবের জন্য টানা হিঁচড়া না করে দ্রুত হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত৷

প্রতিরোধ

    * গর্ভবতীর গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷
    * ৪ ফুট ১০ ইঞ্চির কম উচ্চতা সম্পন্ন গর্ভবতীদের হাসপাতালে প্রসব করানো উচিত৷
    * ডাক্তার বা দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাইয়ের হাতে প্রসব করানো উচিত৷
    * প্রসবের পর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র :
ড্রাগ ডিরেক্টরী

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #5 on: October 22, 2011, 01:08:24 PM »
 পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া

যৌনি মুখ ও পায়ুপথের মাঝখানের জায়গাটিকে পেরিনিয়াম বলে৷ পেরিনিয়ামে কোনও আঘাতের ফলে ক্ষত বা ছিঁড়ে যাওয়াকে পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যাওয়া বলে৷

কারণ

    * মহিলাদের পেরিনিয়াম ছিড়ে যাওয়ার একটি প্রধান কারণ অদক্ষ লোকের সহায়তায় প্রসব করানো৷
    * প্রসবের সময় বিভিন্ন কারণে পেরিনিয়াম ছিঁড়ে যেতে পারে -
    * যোনিপথের তুলনায় শিশুর মাথা বড় থাকলে৷
    * প্রথমবার প্রসবের সময় যোনিপথের মাংসপেশী শক্ত থাকলে৷
    * প্রসব ব্যথা না থাকার কারণে যোনিপথে শিশুর মাথা অনেকক্ষণ আটকে থাকলে৷
    * জরায়ুর মুখ পুরো খোলার আগেই মা যদি জোরে চাপ (কেঁাথ) দেয়৷
    * অদক্ষ দাই দিয়ে প্রসব করালে৷
    * ফরসেপ দিয়ে প্রসব করালে৷

লক্ষণ
প্রসবের পর প্রসবপথ পরিষ্কার করে যোনিপথ মলদ্বার পর্যন্ত পরীক্ষা করলে পেরিনিয়াম ছিঁড়েছে কিনা বোঝা যাবে৷ যদি পেরিনিয়াম ছেঁড়া থাকে তবে -

    * পেরিনিয়ামের চামড়া দেখা যাবে ফেটে গেছে
    * ক্ষতস্থান থেকে রক্ত ঝরতে দেখা যাবে
    * রোগী পেরিনিয়ামে ব্যথা অনুভব করবে৷

পরামর্শ
সবসময় ডাক্তার অথবা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাইকে দিয়ে প্রসব করানো উচিত৷ প্রসবের সময় কোনও ধরনের অসুবিধা দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত৷

চিকিত্‌সা
পেরিনিয়াম ছিঁড়ে গেছে বোঝা গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ হবে৷ না হলে পরে বিভিন্ন জটিলতা দেখো দেবে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র-ডা: রিফাত করিম

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #6 on: October 22, 2011, 01:09:24 PM »
প্রসবপূর্ব সেবা

একজন নারী যখন গর্ভধারন করেন তখন তার দেহে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে৷ এ সময় অনাগত শিশু ও মায়ের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন হয়৷ একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান জণ্ম দেওয়া পর্যন্ত কী কী বিশেষ সেবা প্রযোজন সে সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো-
১.     কখন মা হবেন

বিয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মেই সবাই মা হতে চান৷ তবে সবার মনে রাখতে হবে একজন সুস্থ মা-ই জণ্ম দিতে পারেন একটি সুস্থ সুন্দর শিশু৷ শিশু সবার কাছেই অনেক আশা আকা•ক্ষার ধন৷ সেই আশা যেন নষ্ট না হয়ে যায় সেজন্য বাচ্চা নেওয়ার পূর্বে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত৷

গর্ভধারণের পূর্বে যে বিষয় বিবেচনা কার উচিত

    * গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলার বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের বেশি হওয়া উচিত৷
    * বর্তমানে মহিলার কয়টি শিশু আছে৷ অধিক বাচ্চার মাকে পরিবার পরিকল্পনায় উদ্বুদ্ধ করুন৷
    * ছোট বাচ্চার বয়স যেন কমপক্ষে ২ বছরের বেশি হয়৷
    * পূর্বের গর্ভকালীন সময়ের ইতিহাস৷
    * পূর্বের প্রসবকালীন সময়ের বিস্তারিত ইতিহাস (বিশেষ করে কোনও জটিলতা হয়ে থাকলে)
    * পূর্বে গর্ভপাতের কোনও ঘটনা আছে কিনা
    * পূর্বে মৃত বাচ্চা প্রসব হয়েছিল কিনা
    * পূর্বে জমজ বাচ্চা প্রসব হয়েছিল কিনা
    * পূর্বে অপারেশনের মাধ্যমে বাচ্চা জণ্ম হয়েছিল কিনা
    * আগের বাচ্চা জণ্মের সময় ওজন কত ছিল
    * গর্ভধারণে ইচ্ছুক মহিলার শারীরিক উচ্চতা ও ওজন
    * তার শারীরিক কোনও অক্ষমতা আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখতে হবে
    * তার দীর্ঘস্থায়ী কোনও রোগ আছে কিনা (ডায়াবেটিস, যক্ষা, ম্যালেরিয়া, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, জটিল ধরনের জন্ডিস ইতাদি)
    * তার রক্তের গ্রুপ, রক্তশূন্যতা পরীক্ষা করা প্রয়োজন৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
ডা. সুমন চৌধুরী :

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #7 on: October 22, 2011, 01:09:49 PM »
২.     গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ ও পরীক্ষা

গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ ও পরীক্ষা

উর্বর সময়ে কোনও সক্ষম মহিলার ডিম্বাণু এবং কোনও সক্ষম পুরুষের শুক্রাণু মিলিত হলে ভ্রূণের সঞ্চার হয় অর্থাত্‌ মহিলা গর্ভবতী হয়৷ ভ্রূণ জরায়ুতে বড় হতে থাকে, এই অবস্থাকে গর্ভাবস্থা বলা হয়৷ একটি সুস্থ বাচ্চা জণ্ম দেয়ার জন্য গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলাকে বিভিন্ন ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়৷ গর্ভধারণের সময় শরীরের অনেক ধরনের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়৷

গর্ভাবস্থার লক্ষণ

    * মাসিক স্রাব বন্ধ হওয়া
    * বমি বা বমি বমি ভাব
    * ঘন ঘন প্রস্রাব ত্যাগ
    * স্তনের পরিবর্তন
    * জরায়ুর পরিবর্তন
    * তলপেটে ও মুখে কালো দাগ দেখা যায়, তল পেটের ত্বক টান ধরেল পেটের ত্বকে সাদা দাগ দেখা যায়
    * শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়
    * গর্ভস্থ শিশুর নড়াচড়া টের পাওয়া (৪ মাস পর)৷
    * গর্ভস্থ শিশুর হৃদস্পন্দন (৫ মাস পর)৷

গর্ভাবস্থা পরীক্ষা

    * নিয়মিত তারিখে মাসিক না হবার আরও ২ সপ্তাহ পর প্রস্রাব পরীক্ষা করে গর্ভাবস্থা বোঝা যায়৷
    * যে সব মহিলার মাসিক অনিয়মিত বা অন্য কোনও সমস্যা থাকে তাদের আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায় (নিয়মিত তারিখে মাসিক না হবার কমপক্ষে ৪ সপ্তাহ পর)৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
নারী, ডা. সুমন চৌধুরী
ড্রাগ ডিরেক্টরি,

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #8 on: October 22, 2011, 01:10:32 PM »
৩.     গর্ভাবস্থায় যে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন

গর্ভাবস্থায় যে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন

পরিশ্রম
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা কতোটা পরিশ্রম করবেন তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়৷ সাধারণভাবে বলা যায়, মা গর্ভাবস্থায় তার স্বাভাবিক সংসারের সব কাজই করবেন৷ তবে প্রথম তিন মাস এবং শেষের দু-এক মাস খুব ভারী বা পরিশ্রমের কাজ না করাই ভালো৷ যেমন- কাপড় কঁাচা, ভারী জিনিস তোলা, পানি আনা, ধান ভানা ইত্যাদি না করা৷ গর্ভাবস্থায় সিঁড়িতে ওঠা-নামার সময় যথেষ্ট সতর্ক থাকা উচিত৷
বিশ্রাম
গর্ভবতী মায়ের যেন ভালো ঘুম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ গর্ভবতীকে দৈনিক নয় থেকে দশ ঘন ঘণ্টা ঘুমোতে হবে৷ দিনে দুঘণ্টা এবং রাতে আট ঘণ্টা ঘুমাতে হবে৷ যদি কারো ঘুমের অসুবিধা থাকে, তা হলে তাকে অবশ্যই চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিতে হবে, গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ বৃদ্ধি পেলে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম নিতে হবে৷ দীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে অথবা বসে (৪/৫ ঘণ্টার বেশি) কাজ করা উচিত নয়৷
খাদ্য
স্বাভাবিক খাবারের চেয়ে একটু বেশি (প্রতিবারে অন্তত স্বাভাবিকের চেয়ে ১ মুঠো খাবার বেশি) খাওয়া উচিত৷ গর্ভবতীর পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত৷ সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত৷ প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমান সবুজ ও হলুদ সবজী, যেমন পালংশাক, লাল শাক, মুলাশাক, সজনে শাক, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ইত্যাদি খেতে হবে৷ এছাড়া হলুদ ফলমুল, দুধ, ডাল, ছোটমাছ, ডিম, মাংস অধিক পরিমাণে খেতে হবে৷ আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে তবে বেশি নয়৷
গোসল
প্রতিদিন ভালোভাবে গোসল করা উচিত৷ তবে পুকুরে সঁাতার কাটা বা পানিতে ঝঁাপ দেওয়া ঠিক নয়৷ গ্রীষ্মকালে শারীরিক পরিচ্ছন্নতা ও আরামের জন্য প্রয়োজন হলে একাধিকবার গোসলে করতে পারেন তবে ঠান্ডা যেন না লাগে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে৷
পোশাক
গর্ভাবস্থায় যাতে পেটের ওপর চাপ কম পড়ে এবং চলাফেরায় আরাম পাওয়া যায় সেজন্য ঢিলেঢালা পোশাক পরা উচিত৷ অন্তর্বাস প্রয়োজনানুপাতে ঢিলা থাকতে হবে৷ এ সময় সিনথেটিক ব্যবহার না করে সুতির পোশাক পরাই ভালো৷
জুতা
গর্ভাবস্থায় উঁচু হিলের জুতা ব্যবহার করা উচিত নয়৷ জুতা নরম এবং ঠিক মাপমতো হওয়া উচিত৷ জুতা পরে স্বাচ্ছন্দো চলাফেরা করতে যেন কোন রকম ব্যাঘাত না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ এসময় শরীরের ওজন ক্রমশ বাড়তে থাকে৷ তাই ভারসাম্য রক্ষার জন্য নিচু অথবা মাঝারি ধরনের হিলওয়ালা জুতা পরাই ভাল৷
দঁাতের যত্ন
গর্ভাবস্থায় দঁাতের যত্ন নেয়া খুবই প্রয়োজন৷ এসময় দঁাত পরিষ্কার রাখতে হবে৷ গর্ভাবস্থায় অনেক সময় মাড়ি ফুলে রক্তপাত হয়৷ তাই এ সময়ে মাড়ির যত্ন প্রথম থেকেই নেওয়া উচিত৷ প্রতিদিন সকালে ও রাতে শোয়ার আগে দঁাত ব্রাশ করা প্রয়োজন৷ দঁাত বা মাড়ির কোনও সমস্যা থাকলে দন্ত চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ দঁাত  খারাপ থাকলে ক্যালশিয়ামযুক্ত খাবার যেমন - দুধ, ঘি, মাখন, ছোট মাছ (কাটামাছ) ইত্যাদি খেলে ক্যালশিয়ামের অভাব পূরণ হয়৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালশিয়াম ট্যাবলেট ব্যবহার করা যায়৷ মাড়ি থেকে রক্তপাত হলে ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়৷
স্তনের যত্ন
গর্ভাবস্থায় গর্ভের প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত স্তনের বিশেষ যত্ন নেওয়া উচিত৷ সাবান ও কুসুম গরম পানির সাহায্যে পরিষ্কার করে পরে ঠাণ্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে মুছে ফেলে শুকনো নরম তোয়ালে দিয়ে মোছা উচিত৷ তা ছাড়া স্তনের বেঁাটা বা নিপল যাতে ফেটে না যায় এবং গঠন সুঠাম হয় সেজন্য গ্লিসারিন মাখতে পারেন অথাব বেঁাটা সামনের দিকে একটু টেনে আঙুলে তেল (অলিভ ওয়েল হলে ভালো হয়) নিয়ে বুড়ো আঙুলের সাহায্যে আস্তে আস্তে ম্যাসেজ করতে পারেন৷ এতে পরে নবজাতকের স্তন্যপানের সুবিধা হয়৷
ত্বকের যত্ন
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন গোসলের পরে তলপেটে আস্তে আস্তে কুসুম গরম তেল মালিশ করা ভালো৷ তাহলে পেটের ত্বক সহজে প্রসারিত হবে এবং ত্বকে টান কম পড়ার কারণে সাদা সাদা দাগ কম হবে৷
চাকরি
গর্ভবতী মা চাকরিজীবী মহিলা হলে, কী ধরনের কাজ এবং কতদিন ঐ কাজ আপনি করতে পারবেন তা নিয়ে আপনার চিকিত্‌সকের সঙ্গে পরামর্শ করুন৷ আপনার স্বাস্থ্য ও গর্ভকালীন আপনার শরীরের অবস্থার ওপর কাজ করা বা না করা নির্ভর করবে৷
ব্যায়াম
শরীর সুস্থ রাখা এবং সহজ প্রসবের জন্য গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করা একান্ত প্রয়োজন৷ প্রত্যহ সকল-সন্ধায় এক ঘণ্টা করে হঁাটলে ঠিকমতো রক্ত চলাচলে সহায়তা করে এবং পেশিগুলোও সুস্থ ও সবল অবস্থায় থাকে৷ব্যায়াম কতোটা শ্রমসাধ্য হওয়া উচিত সে বিষয়ে কিছু সাধারণ জ্ঞান সকলেরই থাক ভালো৷ যাদের আসবাবপত্র পরিষ্কার বা রান্না এ ধরণের কাজ করতে হয় তাদের আলাদাভাবে ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না৷যারা কর্মজীবী তারা চাকরি থেকে ছুটি না নিলে পৃথকভাবে ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না৷ তবে গর্ভাবস্থায় শেষ দিকে কাজ কমে গেলে দুবেলা কিছুক্ষণ হঁাটা উচিত৷ যাদের অফিসে সারাক্ষণ বসে কাজ করতে হয় তাদের অনেকক্ষণ বসে থাকার জন্য দিনের শেষে ক্লান্তি আসে৷ এ অবস্থায় এক সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বসে না থেকে কাজ করার ফঁাকে ফঁাকে একটু বিশ্রাম নেয়া ভালো৷ সাধারণ ব্যায়ামের মধ্যে সমান রাস্তায় বা জমিতে হঁাটা খুবই উপকারী৷ তবে হঁাটার দূরত্ব এমনভাবে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত যাতে অহেতুক ক্লান্তি না আসে৷
সহবাস
সহবাস সাধারণভাবে বলা যায়, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস সহবাস থেকে বিরত থাকাই ভালো৷ দ্বিতীয় তিনমাসে দম্পতির ইচ্ছেমতো সহবাস করা যায়৷ তবে তাও নির্ভর করে গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থার ওপর৷ প্রয়োজনে নিয়মিত চেকআপকারী ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া ভালো৷ শেষ তিন মাস গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থার জন্য সহবাসে অসুবিধা হতে পারে৷ তা ছাড়া সহবাসের ফলে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে৷ তাই শেষ তিন মাসও সহবাস না করাই ভালো৷
মানসিক শান্তি
গর্ভাবস্থায় সব সময় মন ভালো রাখার চেষ্টা করতে হবে৷ অনেকের ধারণা এ সময় সত্‌ চিন্তা করলে    সন্তান সত্‌ চিন্তার অধিকারী হয়৷ তবে এটা ঠিক গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত মানসিক দুশ্চিন্তা, রাগ, ভয় বা শোকের ফল গর্ভবতী মায়ের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে৷
ভ্রমণ
বর্তমানে অনেক মহিলাই কর্মজীবী৷ কর্মজীবী মহিলাদের একেবারে ঘরে বসে থাকা চলে না৷ কাজের জন্য বাইরে যেতেই হয়৷ তবে ভ্রমণ বলতে আমরা বুঝি দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া৷ দূরে কোথাও বেড়াতে হলে সাবধানে যাতায়াত করতে হবে৷ যে ভ্রমণে বেশি ঝঁাকুনি লাগে (যেমন খারাপ রাস্তায় রিকশা, স্কুটার বা বাসে চলা) ও বেশি পরিশ্রম বোধ হয়, তা না করাই ভালো৷ লম্বা, ক্লান্তিকর ভ্রমণ (প্রথম ৩ মাস এবং শেষ দেড় মাস) এড়িয়ে চলুন৷ একান্ত যদি ভ্রমণ করতে হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
গর্ভাবস্থায় ওষুধ
গর্ভাবস্থায় যতটা সম্ভব সব রকমের ওষুধ বর্জন করা উচিত: বিশেষ করে ঘুমের ওষুধ, ব্যথা নিরোধন ওষুধ, মৃগীরোগের ওষুধ, হরমোন, থাইরয়েডের ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক ইত্যাদি৷ এসব ওষুধের কিছু না কিছু বিরূপ প্রতিক্রয়া থাকে৷ তবে কোনও ওষুধ ব্যবহারের একান্ত প্রয়োজন হলে চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ ডাক্তারের অনুমতি ছাড়া নিজ থেকে কোনও ওষুধই ব্যবহার করা উচিত নয়৷
ধূমপান
গর্ভাবস্থায় ধূমপান করা মোটেও উচিত নয়৷ ধূমপায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে শিশুর ওজন কম হয়৷ এ ওজনের কমের কারণে মাতৃগর্ভে শিশুর বিকাশের বিঘ্নের সৃষ্টি হয়৷ এ ঘটনা সরাসরি ধূমপানের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল৷ গর্ভবতী মায়েদের পাশে বসে যদি তার স্বামী অথবা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ধূমপান করেন তা হলেও গর্ভস্থ সন্তানের ওপর প্রভাব পড়তে পারে৷
যোনিপথের কোন রোগ
গর্ভাবস্থায় যোনির নিঃসরণ বেড়ে যায়৷ কিন্তু অতিরিক্ত যোনি নিঃসরণ, দুর্গন্ধযুক্ত বা সঙ্গে চুলকানি থাকলে অথবা অন্য কোনও রোগ থাকলে তা চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিয়ে প্রসবের আগেই সম্পূর্ণ সারিয়ে ফেলতে হবে৷ তা না হলে প্রসবের সময় যোনিপথের রোগ শিশুর চোখে, নাভিতে বা শরীরের অন্য কোনও জায়গায় আক্রমণ করতে পারে৷ যেমন - গনোরিয়া রোগ যোনিপথ থেকে শিশুর চোখে সহজেই সংক্রমিত হয় এবং কয়েক দিনের মধ্যে শিশুর চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র - নারী, ডা. সুমন চৌধুরী
ড্রাগ ডিরেক্টরি,

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #9 on: October 22, 2011, 01:11:03 PM »
৪.     গর্ভবতী মায়ের খাবার

গর্ভবতী মায়ের খাবার

গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি অনেকাংশে নির্ভর করে মায়ে ওপর৷ অর্থাত্‌ সুস্থ মা মানেই সুস্থ শিশু৷ শিশুর পরিপূর্ণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার খাদ্যের যোগান দিতে হয় মাকে৷ মা যে খাবার খাবেন শিশুও সেই খাবার খেয়ে পুষ্টি লাভ করে৷ এ কারণে স্বাভাবিক মহিলাদের তুলনায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি৷ সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ না করলে সন্তান ঠিকমত বৃদ্ধি পাবে না৷ ফলে সন্তান অপুষ্টি নিয়ে জণ্মাবে৷ এ ধরনের শিশুর মৃতু্যর ঝুঁকি অনেক বেশি৷ গর্ভবতী অবস্থায় কী খাবেন এবং কোন খাবার গর্ভের সন্তান এবং মায়ের জন্য প্রয়োজন তা নিচে আলোচনা করা হলো-

প্রোটিন বা আমিষ
প্রোটিন শরীরের গঠন ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে৷ গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রোটিনে চাহিদা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি হয়৷ প্রোটিন মাছ, মাংস, ডিম, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মটরশুটি, ডাল, বাদাম, ইত্যাদি বেশি পরিমানে খাবেন৷

ক্যালসিয়াম
গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি৷ গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে শিশুর হাড় ও দঁাতের গঠনের জন্য অনেক ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়৷ দুধ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাছ, বাদাম, কমলালেবু, শুকনো ফল, সবুজ পাতাসহ শাক-সবজি, ফুলকপি ও তৈলবীজ খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে৷

আয়রন
আমাদের দেশের বেশির ভাগ গর্ভবতী মহিলাই রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন৷ গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়ে যায়৷ এই সময় যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন গ্রহণ করা না যায় তাহলে রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে৷ তাই রক্ত স্বল্পতা প্রতিরোধ করার জন্য মাকে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে৷ গরু কিংবা খাসির কলিজা, বাচ্চা মুরগি, ডিম, মাছ, কলা, কচুশাক, পালং শাক এ সবের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে৷

ফলিক এ্যাসিড
কোষ বিভাজনে ফলিক এ্যাসিডের বড় ধরণের ভূমিকা থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে ফলিক এ্যাসিড দরকার৷ ফলিক এ্যাসিড শিশুর মেরুদন্ড গঠনে সহায়তা করে৷ কোন কারণে ফলিক এ্যাসিডের অভাব হলে শিশুর মেরুদণ্ডে জণ্মগত ত্রুটি থাকতে পারে৷ সবুজ সবজিতে পাওয়া যায় ফলিক এসিড৷

ভিটামিন-এ
ভিটামিন এ-এর অভাবে বাচ্চাদের রাত কানা রোগ হয়৷ এ ছাড়া হাড় ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহের গঠনের জন্য ভিটামিন  এ প্রয়োজন৷ এ কারনে গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত, যেমন - মাংস, ডিম, তৈলাক্ত মাছ, দুগ্ধজাত দ্রব্য, তেল ও বাদাম৷

ভিটামিন-বি
এ সময় অনেক গর্ভবর্তী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়৷ এই ভিটামিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শwক্ত বাড়ায়৷ যেমন - কলিজা, মাংস, মুরগির মাংস, যকৃত, মাছ, দুধ, দই, ডিম, ডাল, আটা, গম, ভুট্টা, কলা, পাকা বেল, পেয়ারা, পাকা েঁপপে, জাম, কঁাঠাল, লিচু, বাদাম, সবুজশাক সবজি, ঢেঁকি ছাটা চাল, সয়াবিন, সবুজ ফুলকপি, সিম,  বঁাধাকপি ইত্যদি৷

ভিটামিন-সি
ভিটামিন সি শিশুর হাড় তৈরিতে সাহায্য করে৷ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন - আমলকী, পেয়ারা, কমলা লেবু, বাতাবি লেবু, সবুজ শাক-সবজি,  টমেটো এবং আলু খেতে হবে৷ মনে রাখবেন বেশিক্ষণ রান্না করলে ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়৷

ভিটামিন-ই
ভিটামিন ই রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে৷ আপেল, বাদাম, গাজর, বঁাধাকপি, ডিম, অলিভ তেল ও ও সূর্যমুখি বীজে ভিটামিন ই পাওয়া যায়৷

জিন্ক
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস জিংক এবং ফলিক এ্যাসিডের ভূমিকা অপরিসীম৷ জিংক গর্ভপাত প্রতিরোধ করে এবং শিশুর ওজন বাড়ায়৷ এই জিন্ক পাওয়া যাবে প্রানিজ প্রোটিনে৷ তাছাড়াও চিনে বাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, গম এসবে প্রচুর পরিমাণ জিন্ক থাকে যা আপনার গর্ভাবস্থায় চাহিদা পূরণে সক্ষম৷

ভিটামিন ট্যাবলেট
গর্ভাবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত ভিটামিনের প্রয়োজন হয়৷ এই অতিরিক্ত ভিটামিনের চাহিদা খাবারের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব না হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে হবে৷

গর্ভবতী মহিলাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খাদ্যের পরিমাণ
খাদ্যের নাম     খাদ্যের পরিমাণ
চাল/আটা     ৪২৫ গ্রাম
ডাল     ৬০ গ্রাম
মাছ/মাংস/ডিম     ৬০ গ্রাম
আলু/মিষ্টি আলু     ৬০ গ্রাম
শাক     ১৮০ গ্রাম
সবজি     ঌ০ গ্রাম
ফল     ১ টা
তেল/ঘি     ৬০ মিলিলিটার

 

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র - নারী কিশোর থেকে বৃদ্ধা, ডা. সুমন চৌধুরী
১০ ই জানুয়ারি ২০০৫, দৈনিক জনকণ্ঠ
পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা৷

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #10 on: October 22, 2011, 01:11:27 PM »
৫.     গর্ভকালীন সময় কতদিন পর পর ডাক্তারের কাছে যাবেন

গর্ভকালীন সময় কতদিন পর পর ডাক্তারের কাছে যাবেন

গর্ভধারণের প্রথম ৭ মাসে প্রত্যেক মাসে ১ বার, পরবর্তী ২ মাসে ১৫ দিন পর পর এবং শেষের মাসে সপ্তাহে ১ বার করে প্রসবের পূর্ব পর্যন্ত একজন গর্ভবতী মহিলার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত৷ কিন্তু আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এতবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া সম্ভব নয়৷ একারণে অন্তত পক্ষে ৪ বার একজন গর্ভবতী মহিলাকে সেবা কেন্দ্রে অথবা ডাক্তারের কাছে আসাতে হবে৷

নিম্নলিখিত ৪ বার স্ব্যাস্থ্য কেন্দ্রে আসতে হবে (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী )
১ম ভিজিট - প্রথম ১৬ সপ্তাহ (৪ মাসের) মধ্যে
২য় ভিজিট - ২৪-২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাসের) মধ্যে
৩য় ভিজিট- ১ম মাস পর (৮ মাসের)মধ্যে
৪র্থ ভিজিট- ৩৬ সপ্তাহ (ঌ মাসের) দিকে

গর্ভাবস্থায় ইনজেকশন নেওয়া
গর্ভধারণের পর ৫ থেকে ৮ মাসের মধ্যে এক মাসের ব্যবধানে দুটি টি. টি ইনজেকশন নিতে হয়৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,


৬.     গর্ভকালীন বিপদজনক লক্ষণ

গর্ভকালীন বিপদজনক লক্ষণ

    * চোখের পাতা, জিভ, দাঁতের মাড়ি, হাতের তালু ফ্যাকাশে হয়ে গেলে৷ সব সময় ক্লান্তি অনুভব করলে এবং ঘনঘন শ্বাস নিলে বা শ্বাসকষ্ট হলে
    * সন্তান প্রসবের আগে ব্যথাহীন বা ব্যথাসহ যে কোনও অতিরিক্ত রক্তস্রাব শুরু হলে
    * উচ্চ রক্তচাপ (১৪০/ঌ০ মিলিমিটার পারদ চাপের চেয়ে বেশি হলে)
    * অতিরিক্ত মাথাব্যথা হলে, ঝাপসা দেখলে এবং চোখে অস্পষ্ট দেখলে
    * গোড়ালি, হাত, মুখ ফুলে গেলে
    * শরীরে খিঁচুনি হলে অথবা অজ্ঞান হয়ে গেলে৷
    * জন্ডিসে চোখ হলদেটে হয়ে গেলে এবং প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ বা লালচে হয়ে গেলে
    * মাত্রাতিরক্তি বমি করলে
    * প্রচন্ড জ্বর (স্থায়ী জ্বর, ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপরে)-৩ দিনের বেশি থাকলে
    * তলপেটে প্রচন্ড ব্যথা করলে
    * যোনিপথ দিয়ে কোন তরল পদার্থ বের হলে
    * নির্দিষ্ট তারিখের ৩ সপ্তাহ বা তারও আগে পানি ভেঙে গেলে (গর্ভকালের ৩৭ সপ্তাহের আগে)
    * প্রলম্বিত প্রসব (প্রসবকাল ১২ ঘন্টার বেশী),
    * বাধাপ্রাপ্ত প্রসব হলে
    * বাচ্চার অস্বাভাবিক অবস্থান থাকলে
    * প্রসবের সময় গর্ভস্থ বাচ্চার নাড়ী কিংবা হাত-পা বেরিয়ে যাওয়া
    * যৌনিপথের ঘন সবুজ স্রাব৷
    * প্রসবের অনেকক্ষণ পরও গর্ভফুল না পড়া
    * প্রসবোত্তর অত্যাধিক রক্তস্রাব

প্রসবকালে

    * যৌনিপথ বা জরায়ুর মুখ ব্যাপকভাবে ছিঁড়ে যাওয়া
    * জরায়ু ছিঁড়ে যাওয়া (ক্রমাগত প্রচণ্ড ব্যথা এবং অতিরিক্ত রক্তস্রাব)

পরামর্শ
যদি কোনও মহিলার গর্ভকালীন অবস্থায় উপযু©ক্ত লক্ষণসমূহ দেখা দেয় তবে তাকে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ একারণে সকল গর্ভবতী মায়ের জানা উচিত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতাল কোথায় এবং কীভাবে যেতে হবে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
নারী, ডা. সুমন চৌধুরী,
ড্রাগ ডিরেক্টরি

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #11 on: October 22, 2011, 01:12:03 PM »
৭.     গর্ভাবস্থায় মায়ের সাধারণ সমস্যা কিভাবে নিরাময় করা যায়

গর্ভাবস্থায় মায়ের সাধারণ সমস্যা কিভাবে নিরাময় করা যায়

গর্ভাবস্থায় মায়ের ছোটখাটো অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ অনেক সময় গর্ভবতী মা সেগুলো কাউকে বলেন না, আবার কখনও কখনও পরিবারের অন্য সদস্যরা তাতে গুরুত্ব দেন না৷ অথচ এসব সমস্যার সময়মতো উপশম না হলে গর্ভবতীর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে৷ তাই গর্ভবর্তী মায়ের যেকোন স্বাস্থ্য সমস্যায় তাকে চিকিত্‌সকের কাছে অথবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত৷

গর্ভবর্তী মায়ের কিছু সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যার প্রতিকার ও পরামর্শঃ

বমি, বমির ভাব বা খাওয়ার অরুচি

বমি সাধারণত সকালের দিকেই বেশি হয় বেল সকালে কম খেয়ে দুপুর বা বিকালে একটু বেশি খেতে পারেন৷ তিন মাসের পর থেকে আস্তে আস্তে বমি কমে যায়৷ এ উপসর্গ সাধারণত মায়ের শরীরের খুব বেশি ক্ষতি করেনা৷ তবে খাওয়া দাওয়া কমে যাওয়ার জন্য দুর্বলতা দেখা দিতে পারে৷

বমি বা বমি ভাব প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ গর্ভবর্তী মাকে আশ্বস্ত করতে হবে

২৷ ঘুম থেকে উঠে শুকনা খাবার খেতে হবে যেমন- মুড়ি, বিস্কুট

৩৷ খাবারের অন্তত ঃ ১/২ ঘণ্টা পর পানি খেতে হবে

৪৷ বারেবারে অল্প করে খেতে হবে৷

৫৷ তাড়াতাড়ি ঢকঢক করে দুধ বা পানি পান করবেন না

৬৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

রক্তস্বল্পতা
অনেক সময় গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়৷

১৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম মাস থেকে ফলিক এসিড এবং ৩ মাসের পর থেকে পরিমাণমতো আয়রন ও ক্যালসিয়াম খেতে হবে৷

২৷ আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- কচুর শাক, কলার মোচা, তেঁতুল, তরমুজ, কলিজা, ডিম ইত্যদি খেতে হবে৷  ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- আমলকি, লেবু, কাঁচামরিচ, পেয়ারা, আঁনারস এবং কঁাচা ফলমূল খেতে হবে৷

৩৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

    * গলা ও বুক জ্বালা

গলা ও বুক জ্বালা গর্ভাবস্থায় মায়েদের একটা সাধারণ সমস্যা৷ অল্প ভোজন, দুশ্চিন্তা, অধিক পরিশ্রম এবং যথেষ্ট পরিমাণে পানি না করার জন্য এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে৷

    * প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

সহজপাচ্য খাবার বারে বারে অল্প অল্প খেতে হবে

১৷ খাওয়ার পর পরেই শোয়া চলবে না, শোয়ার প্রয়োজন বেশি হলে মাথার নিচে দুটি বালিশ দিয়ে অর্ধ শয়ন অবস্থায় শুতে হবে

২৷ মসলাযুক্ত ভাজা খাবার খাওয়া যাবে না

৩৷ প্রচুর পরিমাণে ঠাণ্ডা পানি পান করতে হবে

৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

কোষ্ঠকাঠিন্য

গর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন৷ অনুপযুক্ত খাবর গ্রহণ, প্রয়োজনমতো পানি পান না করা ও অনিয়মিত পরিশ্রমের ফলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ প্রচুর পwরমাণে পানি পান করা৷

২৷ প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও টাটকা ফল খেতে হবে৷ যেমন - কলা, আম, গাছপাকা পেয়ারা, খেজুর, পেঁপে, আপেল ইত্যাদি৷ এছাড়াও দুধ-ভাত, কলা কিংবা আটার রুটি ও দুধ খাওয়া যেতে পারে৷

৩৷  নিয়মিত ঘরের কাজ ও হঁাটাচলা করতে হবে

৪৷ প্রয়োজনে চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী ইসবগুলের ভুষি খেতে পারেন৷
অনিদ্রা
গর্ভাবস্থার শেষের দুই-তিন মাস অনিদ্রার ভাব হয়৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ বিকেলে হঁাটা, শোবার আগে গরম দুধ খাওয়া বা বই পড়া ইত্যাদিতে উপকার হতে পারে৷

২৷ ঘুমের অসুবিধা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷

হাত-পায়ে টান ধরা

বিশেষ করে রাতে অনেক সময় পায়ে টান ধরে৷ হালকা ম্যাসেজ বা গরম সেক দিলে উপকার পাওয়া যায়৷ এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷
পিঠে ব্যথা
গর্ভের প্রথমাবস্থা থেকে এ কষ্ট অনেক সময় দেখা দেয় যা শেষের দিকে খুব বেড়ে যেতে পারে৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ শক্ত বিছানা ঘুমালে উপকার পেতে পারেন

২৷ শিরদঁাড়ায় ম্যাসেজ করতে পারেন

৩৷ হঁাটাচলার সময় কোমরে বেল্ট ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়৷

৪৷ সামনে ঝুঁকে কোনও কাজ করা যাবে না৷

৫৷ ভারী জিনিস উঠানো যাবে না৷

৬৷  ব্যথার ওষুধ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া খাওয়া উচিত নয়৷

৭৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷

পায়ের শিরা ফুলে যাওয়া
অনেক সময় গভবর্তী মায়ের পায়ের শিরা ফুলে যেতে পারে৷

প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

১৷ দীর্ঘ সময় দঁাড়ানো যাবে না

২৷ পা তুলে বসতে হবে

৩৷ প্রয়োজনে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে৷

৪৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
পা ফোলা

গর্ভাবস্থায় পা ফুলতে পারে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস সময়ে পা ফুলে গেছে কিনা দেখার জন্য উভয় গোড়ালির চারপাশে বুড়ো আঙুল দিয়ে চাপ দিন৷ যে পয়েন্টে চাপ দেওয়া হয় সেখানে যদি একটি ছোট গর্ত হয়ে যায় এবং শীঘ্র তা মিলিয়ে যায় তবে বুঝতে হবে পায়ে পানি নেমেছে৷ শরীরে লবণ বৃদ্ধির ফলে পায়ের গোড়ালি ফুলে যায় ও পানি জমে৷ শরীরে পানি জমলে বা শরীর ফুলে গেলে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা করা ও ওজন দেখা উচিত৷
প্রতিকারের জন্য প্রয়োজন

পা উঁচুতে রেখে বিশ্রাম নেওয়া

খাবারের সাথে বাড়তি লবন না খাওয়া

প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
বুক ধড়ফড় ও নিঃশ্বাসের কষ্ট

গর্ভাবস্থায় হার্টের কাজ বেড়ে যায়৷ কারণ মা ও শিশু দুইয়ের শরীরের রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়৷ অনেক সময় মায়ের রক্তশুন্যতা দেখা দেয়৷ এসব কারণে বুক ধড়ফড় করে৷ জরায়ুর বৃদ্ধির ফলে ফুসফুসের ওপর চাপ পড়ে এবং তার স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়৷ তাই নিঃশ্বাসের নিতে কষ্ট হয়৷
মূত্র নালীর সংক্রমণ

গর্ভবস্থায় প্রসাবে জ্বালা পোড়া হতে পারে৷ তাই

১৷ প্রচুর তরল পানীয় খেতে হবে

২৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
জ্বর

গর্ভাবস্থায় খুব জ্বর হলে মা ও বাচ্চার উভয়ের জন্যে খুব বিপজ্জনক হতে পারে৷ এরূপ হলে হাসপাতালে বা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৷
অর্শ

কোষ্ঠকাঠিন্য ও অর্শ যদি একই সঙ্গে থাকে তবে তা গর্ভাবস্থায় বেড়ে যায়৷ সুতরাং পায়খানা পরিষ্কার হওয়া দরকার৷ এ অবস্থায় দেরী না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৷
মাথাব্যথা

অতিরিক্ত পরিশ্রম, ক্ষুদা এবং গরম লাগলে মাথা ব্যথা হতে পারে৷ একারণে এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত৷
 

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী , ডা. সুমন চৌধুরী :

 

৮.     প্রসবপূর্ব রক্তপাত

প্রসবপূর্ব রক্তপাত             

যে কোন ধরনের জননেন্দ্রিয়ের রক্তপাত যাহা গভধারনের ২৮ সপ্তাহ পর থেকে শুরু হয় কিন্তু বাচ্চা প্রসবের পূর্বে হয়ে থাকে৷

কারণসমূহ

    * সময়ের আগে গর্ভফুল বিচ্ছিন্ন হওয়া
    * গর্ভফুর যথাস্থানে না থাকা একলামসিয়া
    * জরায়ু ছিড়ে যাওয়া
    * রক্ত জমাট বঁাধার সমস্যা
    * অধিক বাচ্চা ধারণ অধিক বয়সে বা””া ধারণ
    * মায়ের অপুষ্টিজনিত কারণ
    * আঘাত জনিত কারণ৷

লক্ষণসমূহ

    * হঠাত্‌ করে জননেন্দ্রিয় থেকে রক্তপাত শুরু হওয়া
    * ব্যাথা থাকে না (প্রসব বেদনা থাকতে পারে৷
    * রক্তক্ষরণের কারণে রোগীকে সাদা/ ফ্যাকাসে দেখাতে পারে৷
    * রোগী শক্ এ চলে যেতে পারে৷

করণীয়
যতদ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷
দাই দ্বারা জননেন্দ্রিয় হাত দিয়ে পরীক্ষা করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে৷

প্রতিরোধ

    * ২ বা ৩ এর অধিক বাচ্চা না নেওয়া
    * অধিক বয়সে বাচ্চা না নেওয়া
    * গর্ভকালীন নিয়মিত চেক আপে থাকা
    * পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করা
    * অতিরিক্ত ভারী কাজ না করা৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র :
Aids to Principles of Obstetrics and GynaecologyDr. C M Enayet (Pintu)

৯.     গর্ভবতী মায়ের আলট্রাসনোগ্রাফি

গর্ভবতী মায়ের আলট্রাসনোগ্রাফি

গর্ভকালীন আলট্রাসনোগ্রাফির ব্যবহার অনেক বছর ধরে চলে আসছে৷ গর্ভবতীর জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি একটি অতিপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং গর্ভকালীন যে কোন সময়ে এ পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে, আলট্রাসনোগ্রাফি গর্ভকালীন সময়ে নিরাপদ৷

স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় আলট্রাসনোগ্রাফির প্রয়োজনীয়তা :
 গর্ভাবস্থায় কখন আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে হবে, এ ব্যাপারে রোগীর ডাক্তার বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের মতামতই গুরুত্বপূর্ণ৷

প্রধানত তিনটি পর্যায়ে গর্ভবতীর আলট্রাসনোগ্রাফি করা উচিত-

প্রথম পর্যায় : মাসিক বন্ধ হওয়ার আট সপ্তাহের মধ্যে৷ যদিও মাসিক বন্ধ হওয়ার পঁাচ-ছয় সপ্তাহের মধ্যে আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়৷ এ পর্যায়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করার কারণগুলো হচ্ছে-

    * গর্ভধারণ হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া
    * গর্ভধারণের নিশ্চিত সময় বের করা
    * গর্ভধারণ স্বাভাবিক অর্থাত্‌ জরায়ুর মধ্যে না অস্বাভাবিক অর্থাত্‌ জরায়ুর বাইতে তা জানা
    * গর্ভস্থ সন্তান একটি, যমজ বা ততধিক কি না তা জানা
    * জরায়ুর ভ্রূণের এক ধরনের টিউমার অর্থাত্‌ মোলার প্রেগনেন্সি কি না তা নির্ধারণ
    * গর্ভধারণকালে উপসর্গগুলোর মতো তলপেটের কিছু টিউমার এবং হরমোন নিঃসৃতকারী কিছু ডিম্বাশয়ের টিউমার নিরূপণের জন্য৷
    * জরায়ুর এক ধরনের টিউমার যা স্বাভাবিক গর্ভধারণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে৷ যেমন - মায়োমা বা ফাইব্রয়েড আছে কি না তা নির্ণয় করা৷

দ্বিতীয় পর্যায় :

গর্ভধারণের ১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে -

    *

      গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্ধারণ
    *

      গর্ভস্থ সন্তান একটি, যমজ বা ততধিক কিনা তা নির্ধারণ৷
    *

      গর্ভস্থ সন্তানের কোনও জণ্মগত অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা নির্ণয় করা৷
    *

      গর্ভফুলের সঠিক অবস্থান জানা৷ গর্ভফুল স্বাভাবিক অবস্থানের চেয়ে নিচে অবস্থান করলে যেসব গর্ভবতীকে উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গর্ভবতী বলা হয়৷ তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বনের জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি জরুরি৷
    *

      মায়োমা বা ফাইব্রয়েড আছে কিনা তা নির্ণয় করা৷


তৃতীয় পর্যায় :

গর্ভধারণের ৩২-৩৬ সপ্তাহের মধ্যে-

    *

      গর্ভস্থ সন্তানের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে কিনা তা নির্ণয়

 গর্ভস্থ সন্তানের কোনও জণ্মগত ত্রুটি বা অস্বাভাবিকতা নির্ণয় যা আগের আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষায় ধরা পড়েনি৷

    *

      গর্ভস্থ সন্তানের মাথা ও পা স্বাভাবিক অবস্থানে আছে কিনা তা দেখা৷
    *

      গর্ভফুলের অবস্থান সঠিকভাবে নির্ণয়৷
    *

      গর্ভফুলের মধ্যস্থিত তরল পদার্থের পরিমাণ জানা৷

সম্ভাব্য জটিলতা যেমন- মায়োমা বা ফাইব্রয়ের এবং ডিম্বাশয়ের টিউমার ইত্যাদি নিরূপণ৷ এ যুগে সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷ বরং নিরাপদ মাতৃত্ব তথা সুস্থ সন্তান প্রসবই বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে শুধু তা জানার জন্য আলট্রাসনোগ্রাফি করা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়৷

আলট্রাসনোগ্রাফির জন্য আগাম প্রস্তুতি
 মায়ের প্রস্রাবের চাপ থাকতে হবে৷ এ জন্য পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে রোগীকে চার-পঁাচ গ্লাস পানি বা অন্য কোনও পানীয় পান করাতে হবে৷ আল্ট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষার আগে রোগী যেন প্রস্রাব না করেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৷

শেষ কথা
 একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, গর্ভকালে মাসে কিংবা প্রস্রবের আগে প্রতি ডাক্তারের সঙ্গে প্রতি সাক্ষাতেই আলট্রাসনোগ্রাফি করা জরুরি নয়৷ যদি না না গর্ভবতীর কোনো জটিলতার আশন্কা থাকে৷ এ বিষয়ে সংশি­ষ্ট চিকিত্‌সকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্য সূত্র:
দৈনিক প্রথম আলো
 

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #12 on: October 22, 2011, 01:12:36 PM »
১০.     ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভ

ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভ

একজন সুস্থ মা একটি সুস্থ শিশুর জণ্ম দিতে পারে৷ গর্ভকালীন সময় ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণগুলো জেনে নিন৷

ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভের কারণ

    *       প্রথম গর্ভধারণের সময় নারীর বয়স ২০ বছরের কম বা ৩৫ বছরের বেশি বয়সে বাচ্চা হলে
    *      মায়ের উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি (১৪৫ সেন্টিমিটার) এর কম হলে
    *      গর্ভে বাচ্চা অস্বাভাবিকভাবে অবস্থান (বাচ্চা গর্ভে আড়াআড়িভাবে অবস্থান এবং বাচ্চার মাথা ওপর দিকে অবস্থান) করলে৷
    *      প্রি-একলাম্পসিয়া এবং একলাম্পসিয়া হলে
    *      রক্তস্বল্পতা (হিমোগ্লোবিন ৫০% এর নিচে)
    *       গর্ভস্থ যমজ বাচ্চা
    *      গর্ভে পানির পরিমাণ বেশি
    *      পূর্বে মৃত বাচ্চা প্রসবের ইতিহাস, গর্ভে বাচ্চা মরে থাকা এবং স্বাভাবিকভাবে ফুল বের না হলে হাত দিয়ে বের করার ইতিহাস থাকলে৷
    *      অধিক সন্তান জণ্ম দেওয়া বয়স্ক মা
    *      বিলম্বিত গর্ভ (সম্ভাব্য প্রসবের তারিখের ১৪ দিন পরেও বাচ্চা প্রসব না হওয়া)
    *       গর্ভের সঙ্গে অন্যান্য সাধারণ অসুখ যেমন - হার্টের অসুখ, কিডনির অসুখ, ডায়াবেটিস, যক্ষ্না, জন্ডিস এবং উচ্চ রক্তচাপ অসুখ ইত্যাদি৷
    *      পূর্বে সিজারিয়ান অথবা যন্ত্রপাতির সাহায্যে প্রসব হয়ে থাকলে গর্ভকালীন অবস্থায় মহিলাদের যে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ লক্ষণ দেখা যেতে পারে-
    *      রক্ত স্রাব (প্রসবপূর্ব, প্রসব পরবর্তী)৷
    *      প্রি-একলামশিয়া বা একলামশিয়া (গর্ভবতী মহিলার ৬ মাসের পরে উচ্চ রক্তচাপ, হাত পা ফুলে যাওয়া এবং প্রসাবে এ প্রোটিন গেলে প্রি-একলামশিয়া বলে৷ আর প্রি-একলামশিয়ার সঙ্গে যদি খিঁচুনি হয় তখন তাকে একলামশিয়া বলে) হতে পারে৷
    *      গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি কম হতে পারে
    *      নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিণত প্রসব হওয়া
    *      নির্ধারিত সময়ের আগে পানি ভাঙ্গা (গর্ভকালের ৩৭ সপ্তাহের আগে)৷
    *      প্রসববেদনা ১২ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হওয়া
    *      বাধাগ্রস্ত প্রসব৷
    *      মৃত সন্তান প্রসব৷
    *      গর্ভফুল আটকে যেতে পারে
    *      ৪৮ ঘণ্টা (২ দিন) মধ্যে শিশুর মৃতু্য হলে
    *      ফিস্টুলা (যৌনি ও মূত্রথলির ফিস্টুলা অথবা যোনি ও মলদ্বারের ফিস্টুলা)

পরামর্শ
আপনি গর্ভধারনের জন্য ঝঁুকির মধ্যে আছেন কিনা তা জানার জন্য গর্ভধারণের পূর্বে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন৷ গর্ভ অবস্থায় ডাক্তার অথবা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে নিয়মিত চেকআপ করাতে পারেন৷ গর্ভ সময় উপর্যু্ক্ত সমস্যা দেখা দিলে বিলম্ব না করে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ সম্ভাব্য ঝঁুকি এড়াতে হলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন৷ আশেপাশে ডাক্তার না থাকলে সেই মূহূর্তে স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ গর্ভ অবস্থায় কাছাকাছি কোনও ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঠিকানা জেনে রাখবেন এবং জরুরি যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত থাকুন৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্য সূত্র - নারী
ডা. সুমন চৌধুরি
ড্রাগ ডিরেক্টরি,
 

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #13 on: October 22, 2011, 01:13:04 PM »
১১.     নিরাপদ প্রসব স্থান

 নিরাপদ প্রসব স্থান

বাচ্চা প্রসবের স্থান স্বাস্থ্যসম্মত হওয়া উচিত৷ কারণ বাচ্চা প্রসবের সময় মা ও শিশুর অনেক রোগ সংক্রমণ হতে পারে৷ হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মাতৃসদন প্রসবের জন্য নিরাপদ স্থান বলা যায়৷ তবে এ রকম কোনও সুযোগ না থাকলে বাড়িতে বাচ্চা প্রসবের স্থান ঠিক করা উচিত৷

প্রসবের ঘরটা কেমন হওয়া উচিত -
এমন একটি জায়গা প্রসবের জন্য নির্ধারণ করতে হবে যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় এবং জায়গাটা শুকনো হয়৷ ঘর এবং ঘরের আসবাবপত্র এবং বিছানার চাদর বালিশের কাভার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে৷ একজনের উপযুক্ত একটি চৌকি বা খাট থাকতে হবে৷ চৌকির উপর নরম বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে৷ প্রসবের সরঞ্জাম রাখার জন্য একটি টেবিল রাখতে হবে৷ বাচ্চার জিনিস পত্র রাখার জন্য আরেকটি টেবিল রাখলে ভাল হয়৷ বৈদু্যতিক আলো চলে গেলে ঘরে আলোর ব্যবস্থা করতে হবে৷
প্রসবের আগে যে সব জিনিসপত্র তৈরি রাখতে হবে

    * অনেকগুলো খুব পরিষ্কার কাপড় বা কঁাথা৷
    * পরিষ্কার তুলা এক প্যাকেট৷
    * গজ এক প্যাকেট৷
    * নাড়ি কাটার জন্য একটা নতুন কঁাচি (নড়ি কাটার আগে সেটা ফুটিয়ে নিন)৷
    * নাড়ি চাপা দেওয়ার জন্য জীবাণুমুক্ত গজ বা পরিষ্কার কাপড় কয়েক টুকরা৷

    * নাড়ি বঁাধার জন্য দুটি পরিষ্কার ফিতা বা সূতা৷
    * শিশুর জামা-কাপড় (ধোয়া, পরিষ্কার ও মোলায়েম)৷
    * ছোট তোয়ালে -২টা৷
    * রবার ক্লাথ৷
    * বিছানার চাদর৷
    * স্যানিটারি প্যাড বা পরিষ্কার কাপড় প্যাকেট৷

বাড়িতে প্রসবের জন্য হাতের কাছে যে সমস্ত জিনিসপত্র রাখা উচিত

    * রবার বা অয়েল ক্লথ (১.৫(১.৫ গজ) -২টা
    * এনামেলের গামলা বড় ২টা, ছোট-২টা
    * এনামেলের হাঁড়ি (পানি ফুটাবার জন্য) -১টা
    * ডুস সেট (ক্যান, রবারের নল ইত্যাদি) -১টা
    * গরম পানির ব্যাগ -১টা
    * পানি খাওয়ানোর কাপ -১টা
    * কঁাচি -১টা
    * সেফটি পিন (বড় ও ছোট) -১ ডজন
    * সঁুই সূতা - প্রয়োজন অনুযায়ী
    * পরিশুদ্ধ তুলা - দুই প্যাকেট
    * শিশুর নাভি বঁাধবার জন্য পরিষ্কার সূতা- প্রয়োজনমতো
    * স্পিরিট/ডেটল
    * সাবান -১টি৷

পরামর্শ
প্রসবব্যথা শুরু হলে চুলায় পানি ফুটাতে আরম্ভ করা প্রয়োজন, যাতে প্রয়োজন হলেই গরম পানি পাওয়া যায়৷ ঘরের সব জিনিসপত্র এমনভাবে গুছিয়ে রাখতে হবে যাতে প্রসবের সময় তাড়াতাড়ি সব জিনিস হাতের কাছেই পাওয়া যায়৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
নারী ,ডা. সুমন চৌধুরী :
 

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2667
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: গর্ভকালীন সমস্যা
« Reply #14 on: October 22, 2011, 01:13:38 PM »
১২     প্রসব

প্রসব

প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ
গর্ভের মোট সময় কাল ধরা হয় ৪০ সপ্তাহ বা ২৮০ দিন বা ঌ মাস ৭ দিন৷ শেষ মাসিকের প্রথম দিনটিকে গর্ভধারনের প্রথম দিন ধরে প্রসবের তারিখ নির্ধারন করা হয়ে থাকে৷ যেমন - গর্ভধারণের শেষ মাসিকের প্রথম দিন যদি ২০ ডিসেম্বর হয় তবে প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ হবে ২৭ সেপ্টম্বর৷ এ ক্ষেত্রে প্রতি মাসকে ৩০ দিন হিসেবে ধরা হয়৷ প্রসবের প্রস্তুতির জন্য এভাবে প্রসবের তারিখ নির্ণয় করা যায়৷ এই তারিখের ২ সপ্তাহ আগে বা পরে যে কোনও তারিখে সাধারণত প্রসব হয়ে থাকে৷

প্রসব আরম্ভের লক্ষণ

প্রসব শুরু হওয়ার ৪টি লক্ষণ রয়েছে
১.প্রসব বেদনা ও সঙ্গে সঙ্গে জরায়ুর সংকোচন
২.যোনীপথে রক্ত মিশ্রিত স্রাব বের হওয়া
৩.জরায়ুর মুখ খুলে যাওয়া
৪.পানিপূর্ণ থলি

প্রসব বেদনা
একজন গর্ভবতীর প্রসব বেদনা ছাড়াও অন্যান্য অনেক কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে৷ প্রসব বেদনা হলে ব্যথার সঙ্গে জরায়ুও সংকুচিত হবে৷ জরায়ুর সংকোচন হচ্ছে কিনা বোঝার উপায় হচ্ছে, যখন ব্যথা হয় ঠিক তখনই জরায়ুও সংকুচিত হয়৷ তখন পেটে হাত দিলে অনুভব করা যাবে যে জরায়ু শক্ত হয়ে আছে৷ আর ঠিক তার পরক্ষণেই যখন ব্যথা নেই অর্থাত্‌ জরায়ু স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে তখন পেটে চাপ দিলে হাতে অনুভব করা যাবে যে জরায়ু  নরম হয়ে আছে৷ প্রসব বেদনার আরো একটি চরিত্র আছে৷ এই ব্যথা একবার আসে আর চলে যায়, আবার আসে৷ এটা বারবার হতে থাকে৷ সময় যত যায় বেদনার তীব্রতা তত বাড়তে থাকে এবং দুই ব্যথার মাঝখানে বিরতির সময়ও কমে আসতে থাকে৷ প্রসব বেদনা শুরু হয় পিঠের দিকে এবং ধীরে ধীরে তা সামনের (উরুর) দিকে এগিয়ে আসে৷

যোনিপথে রক্ত মিশ্রিত স্রাব নির্গমণ
প্রসব বেদনা শুরু হলে যোনিপথ থেকে অল্প অল্প পরিমাণ রক্ত মিশ্রিত স্রাব বের হতে থাকে৷ একে চিকিত্‌সা পরিভাষায় শো বলে৷ গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মুখ সাধারণত ঢাকা থাকে৷ ঢাকনাটি জরায়ুর মধ্যের শিশুটিকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে৷ এই ঢাকনাটি প্রসবের আগে খুলে বেরিয়ে আসে এবং তখনই এই রক্তস্রাব শুরু হয়৷

জরায়ুর মুখ খুলতে থাকা
গর্ভকালে জরায়ু মুখ পুরোপুরি বন্ধ থাকে কিন্তু প্রসব বেদনা শুরু হলেই জরায়ুর মুখ ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করে৷

পানিপূর্ণ থলি
গর্ভস্থ শিশু একটি থলির মধ্যে থাকে৷ থলিটা একটি বিশেষ জলীয় পদার্থে ভর্তি থাকে৷ প্রসবকালে জরায়ুর মুখ খুলে গেলে গর্ভফুলের পর্দা কিছু পরিমাণ ঐ জলীয় পদার্থসহ জরায়ুর মুখ দিয়ে দিয়ে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে৷ শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পূর্বে এই পানির থলি ভেঙে যায় এবং যোনিপথে পানির মতো জলীয় পদার্থ বের হয়ে আসে৷

স্বাভাবিক প্রসব প্রক্রিয়া
প্রসবের তিনটি স্তর

প্রথম স্তর
প্রসবের প্রথম স্তর হলো প্রসব বেদনা শুরু হওয়া থেকে জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণ খুলে যাওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে প্রথম জরায়ুর মুখ খুলতে সময় লাগে ৮ থেকে ১২ ঘণ্টার মতো৷ দ্বিতীয় বা পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে৷

দ্বিতীয় স্তর
জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণভাবে খোলা থেকে শিশু সম্পর্ণ ভূমিষ্ট হওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ এই সময় পানির থলি ফেটে যায় এবং শিশু জরায়ু থেকে প্রসব পথে ভূমিষ্ট হয়৷ প্রসবের এই স্তর সম্পন্ন হতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে না৷

তৃতীয় স্তর
শিশু ভূমিষ্ঠ হবার পর গর্ভফুল বের হয়ে যাওয়া পর্যন্ত সময় বা অবস্থা৷ সাধারণত ৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে গর্ভফুল বেরিয়ে আসে৷ গর্ভফুল বের হওয়ার পরে দেখা উচিত তা সম্পূর্ণরূপে বের হয়েছে কিনা৷ গর্ভফুলের কোনও অংশ ছিঁড়ে জরায়ুতে রয়ে গেলে প্রসূতিকে নিকটতম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷ প্রসবের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে অর্থাত্‌ প্রসব বেদনা শুরু হওয়া থেকে গর্ভফুল বের হওয়া পর্যন্ত প্রথম গর্ভবতীর জন্য সময় লাগে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা এবং দ্বিতীয় বা তার পরের গর্ভবতীর সর্বোচ্চ ১২ ঘণ্টা সময় লাগে৷ এই সময়ের মধ্যে প্রসব সম্পন্ন না হলে গর্ভবতীকে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে ৷

অস্বাভাবিক প্রসব
স্বাভাবিক প্রসবের ব্যতিক্রম যে কোন প্রসবকে অস্বাভাবিক প্রসব বলা যায়৷ গর্ভস্থ ভ্রূণের সংখ্যা, অস্বাভাবিক অবস্থান অস্বাভাবিক প্রসবের কারণ৷ অস্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থাপনা হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করতে হবে৷ তাই রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে৷ নিম্নে কিছু অস্বাভাবিক প্রসব সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো৷ গর্ভস্থ শিশুর অস্বাভাবিক অবস্থানপ্রসবের সময় জরায়ুতে শিশুর অবস্থানের ওপর প্রসবের সুবিধা-অসুবিধা নির্ভর করে৷ শিশুর মাথাটি যদি নিচের দিকে অর্থাত্‌ জরায়ুর মুখে থাকে তাহলে তা স্বাভাবিক অবস্থা৷ কখনো কখনো আবার মাথা নিচের দিকে না থেকে শিশুর দেহের অন্য অংশও নিচের দিকে থাকতে পারে৷ এগুলোকে অস্বাভাবিক অবস্থান বলে এবং এগুলো অস্বাভাবিক প্রসবের কারণ৷ অস্বাভাবিক অবস্থা অনেক রকম হতে পারে-

    * শিশুর পাছা জরায়ুর মুখে ও মাথা ওপর দিকে থাকলে
    * শিশুটি জরায়ুতে আড়াআড়িভাবে থাকতে পারে
    * শিশুর মুখ নিচের দিকে থাকতে পারে

গর্ভে যমজ শিশু
একই গর্ভকালে জরায়ুর ভেতরে একটির পরিবর্তে দুটি সন্তান হলে তাকে যমজ সন্তান বলে৷ এক্ষেত্রে গর্ভবতীর পেট স্বাভাবিকের চেয়ে বড় থাকে, পেট হাত দিয়ে পরীক্ষা করলে দু'টো মাথা বুঝতে পারা যায়৷ যমজ সন্তান নিশ্চিত হলে প্রসূতিকে অবশ্যই প্রসবের জন্য হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠাতে হবে৷ কারণ যমজ সন্তানের প্রসবে অনেক জটিলতা দেখা দিতে পারে৷

দীর্ঘস্থায়ীপ্রসব
যদি কোন কারণে প্রথম গর্ভের ক্ষেত্রে প্রসবে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে এবং দ্বিতীয় বা তার পরের গর্ভের ক্ষেত্রে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে তবে তাকে দীর্ঘস্থায়ী প্রসব বলে৷ গর্ভে সন্তানের অবস্থান অস্বাভাবিক হলে, বস্তিকোটরের হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হলে, গর্ভবতীর মারাত্মক অপুষ্টি থাকলে প্রসব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে৷ এ অবস্থায় রোগীকে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷ আমাদের দেশে গর্ভবতী মায়ের মৃতু্য, মৃত প্রসব ও শিশু মৃতু্যর একটি অন্যতম কারণ দীর্ঘস্থায়ী প্রসব৷ সময়মত রোগীকে হাসপাতালে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র পাঠলে মা ও শিশুর মৃতু্যহার অনেকাংশে কমানো সম্ভব৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসুত্র-ড্রাগ ডিরেক্টরী,
ডা. সুমন চৌধুরী :