ইউটিউবের লিঙ্কটি হল দ্যা গার্ল ফ্রম টুমরো মুভির। যখন মাত্র ইন্টারমিডিয়েট পাস করেছি তখন অস্ট্রেলিয়ান এই মুভিটি বি টি ভি তে শুক্রবারে সকালে দেখাতো। একেবারে তন্ময় হয়ে আমরা দেখতাম। মিস দেয়ার কথা চিন্তাও করতাম না। আজকে ইউটিউবে দেখতেছিলাম ৯০ এর দশকের এই মুভিটি।
আমাদের ছোটবেলায় দেখতাম - ভবিষ্যতে এই পৃথিবী কেমন হবে, সেখানে কি হবে এইগুলো নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করা হত। আরও আগে দেখতাম টু ওয়ার্ডস ২০০০ অনুষ্ঠানটি। এটিতে দেখানো হত ২০০০ সালের পরে মানুষ কি কি আবিস্কার করবে সেইগুলো। মনে রাখতে হবে তখনো ঘরে ঘরে কম্পিউটার ছিল না। এমনকি অফিসেও না। কিছু অফিসে মাত্র কম্পিউটার এসেছে। তাও ডস প্রমটে কাজ করতে হত। কম্পিউটারে কোন মাউস ছিল না। কি বোর্ডের ফাংশন কী চেপে চেপে কাজ করতে হত। কেউ কেউ ই মেইলই তখন নতুন ব্যাবহার করতে শিখেছে।
ভবিষ্যতে কি হবে? এইটা আগেকার মানুষদেরকে ভাবালেও - বর্তমানের মানুষেরা কি এই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে? মনে হয় না।
আমাদের ছোটবেলায় শুনতাম দেশে ২৫% বনভূমি থাকতে হবে। না হলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য থাকে না। এছাড়াও এন্ডেঞ্জারড স্পেসিস বা প্রায় বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির পশু পাখীর ছবি সহ লেখা প্রকাশিত হত। আমাদের দেশের ডাকটিকেটে বাঘের ছবির পাশে লেখা থাকতো - 'বাঘকে বাচিয়ে রাখুন'। এখন মনে হয় আমরা এই গুলোর ব্যাপারে হাল ছেড়ে দিয়েছি।
ভাবি এখন চাষের কল্যাণে বাজারে সব থেকে সস্তা মাছ হল পাঙ্গাস। কেউ খেতে চায় না। অথচ এই পাঙ্গাস মাছ আগে মানুষকে কত সখ করে বাজার থেকে কিনে রান্না করে খেতে দেখেছি। মূল্যবান মাছের তালিকায় প্রথমেই ছিল এই পাঙ্গাস। গাছপালা বাচাবো কি - নিজেরাই যে খেয়ে পড়ে বেচে আছি - এইটাই আমাদের কাছে আশ্চর্যের বিষয়। অধুনা প্লাটিকের ডিম, মাছ, চাল যে আমাদের ভবিষ্যতে বাজারের লিস্টে লেখা থাকবেনা তাও আমরা নিশ্চিত বলতে পারবো না। আগে কেবলমাত্র ইরান - ইরাক যুদ্ধ দেখেই আমরা দুঃখ পেতাম। এখন পৃথিবীর কতগুলো অঞ্চল যুদ্ধ বিধ্বস্ত তার লিস্ট করতে গেলেও ইন্টারনেটের সাহায্য লাগবে।
এখনকার মানুষ শুধু নিজেকে নিয়েই থাকে। তার বংশধরের জন্যও আর ভাবে না। শিশুদের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।
কোথায় চলেছি আমরা?