বাংলাদেশে গৃহনির্মাণ শিল্পের ভবিষ্যৎ

Author Topic: বাংলাদেশে গৃহনির্মাণ শিল্পের ভবিষ্যৎ  (Read 1487 times)

Offline alsafayat

  • Newbie
  • *
  • Posts: 22
  • Seeker of the Unknown
    • View Profile
    • Al Safayat
বাংলাদেশের প্রায় ৬৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ মানুষ এখনো গ্রামে বাস করে, যাদের মধ্যে ৯১ দশমিক ৫ শতাংশই বাস করে কাঁচা ঘরে। আধা কাঁচা বা আধা পাকা ঘরে বাস করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। আর পাকা ঘরে থাকে গ্রামীণ মানুষের মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে পাকা ঘরে থাকে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ, আধা পাকা ঘরে থাকে ২৩ দশমিক ১ শতাংশ এবং বাদবাকি ৫৫ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ থাকে ঝুপড়ি অথবা কাঁচা ঘরে। (তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া)

উল্লিখিত তথ্যাবলির সারাংশ করলে যে বিষয়টি দাঁড়ায় তা হলো, দেশের মোট ১৬ দশমিক ৩০ কোটি মানুষের মধ্যে ১ কোটি ৪৭ লাখ মানুষ পাকা ঘরে বাস করে। বাংলাপিডিয়ার দেয়া এ হিসাব খানিকটা পুরনো। যদি ধরেও নিই, এরই মধ্যে এ সংখ্যা বেড়েছে এবং প্রায় দুই কোটি মানুষ দালানে বসবাসের সুযোগ করে নিতে পেরেছে, তাহলেও আরো প্রায় ১৪ দশমিক ৩০ কোটি মানুষ আধা পাকা বা কাঁচা ঘর কিংবা ঝুপড়িতে বাস করছে, যারা সুযোগ পেলে পাকা দালানে থাকতে চায়। বস্তুত এখানেই নিহিত রয়েছে বাংলাদশের আবাসন শিল্পের ভবিষ্যৎ।

উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী ধারণাগতভাবে ১৪ দশমিক ৩০ কোটি মানুষের বসবাস ও অন্যবিধ ব্যবহারের জন্য নতুন দালানকোঠা প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ চাহিদার সবটাই বাস্তব কিনা। জবাবে প্রথমেই যে বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করা যেতে পারে তা হচ্ছে: ১. বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ক্রমেই দ্রুত হারে বাড়ছে। ফলে গ্রাম বা শহর সর্বত্রই দালানকোঠায় বসবাস বা তা নির্মাণের ক্ষেত্রে মানুষের সামর্থ্য ও আগ্রহ দুই-ই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থাৎ আবাসন খাতে বাস্তব চাহিদা বাড়ছে; ২. বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে শহরমুখী প্রবণতা অতীতের যেকোনো সময়ের বা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় অধিকতর দ্রুত হারে বাড়ছে। আর শহরভিত্তিক আবাসনের মূল বৈশিষ্ট্যই যেহেতু বাড়তি দালানকোঠা, সেহেতু ক্রমবর্ধমান বাড়তি শহুরে জনগোষ্ঠীর জন্য বর্ধিতসংখ্যক দালানকোঠা নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই; ৩. এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশী এখন বিদেশে বসবাস করে, যারা বিভিন্ন উন্নত দেশের আবাসন ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠার ফলে এবং তাদের হাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নগদ অর্থ থাকার কারণে ও তা সহসা অন্যত্র বিনিয়োগের সুযোগ না থাকায় এদের একটি বড় অংশ নিজস্ব আবাসনের প্রয়োজনে কিংবা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে গৃহনির্মাণ খাতকেই বেছে নিচ্ছে; ৪. বাংলাদেশে যৌথ পরিবার প্রথা ভেঙে গিয়ে ক্রমেই তা ছোট পরিবারে রূপ নিচ্ছে এবং এ ধারায় পরিবারের সংখ্যাও খুবই দ্রুত বাড়ছে, যা নতুনতর আবাসনের প্রয়োজনীয়তাকে অনিবার্য করে তুলেছে; ৫. দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত সম্প্রসারণের ফলে আবাসিক প্রয়োজনের বাইরেও নানা ধরনের ঘরবাড়ির দরকার হচ্ছে এবং এটিও বাংলাদেশে আবাসন খাতে চাহিদা বৃদ্ধির অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করছে।

উল্লিখিত কারণগুলোর বাইরেও আরো বহু কারণ রয়েছে, যেগুলো গৃহনির্মাণ খাতের সার্বিক সম্ভাবনাকেই তুলে ধরে। তদুপরি দেশের সব মানুষের জন্য উন্নত আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার আলোকে এক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নীতিমালার যে সমর্থন রয়েছে, সেটিও দেশের আবাসন খাতের বিকাশ ও সম্প্রসারণের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এত কিছুর পরও এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এগোতে পারছে না। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৭-এর তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধির হার যেখানে ছিল ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ, সেখানে গৃহনির্মাণ খাতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এবং লক্ষণীয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ হার জাতীয় প্রবৃদ্ধির গড় হারের তুলনায় বরাবরই পিছিয়ে থেকেছে।

অন্যদিকে জিডিপিতেও এ খাতের অবদানের হার বাড়ছে না। ২০১১-১২ অর্থবছরে জিডিপিতে এ খাতের অবদান ছিল ৭ দশমিক ২২ শতাংশ। পাঁচ বছর পর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ হার কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অথচ গৃহনির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) প্রত্যাশা ছিল, ২০১৪ সাল নাগাদ তা ১২ শতাংশে উন্নীত হবে। তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, গৃহনির্মাণ খাতের নানা সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এমনটি ঘটছে কেন?

এর বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে একেবারে প্রথম কারণ হচ্ছে: দেশে যতটা না চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, তার চেয়ে বেশি দুর্নীতির কারণে জমির দাম মাত্রাতিরিক্ত হারে বেড়ে যাওয়া; যার শুরুটা সরকার কর্তৃক জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমি বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক স্বার্থান্বেষী মহলের সঙ্গে যোগসাজশে জমির দাম মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়িয়ে দেখানো। এটি করার ফলে সরকারি প্রকল্পের ব্যয়ই শুধু বাড়ে না, পার্শ্ববর্তী অন্যান্য জমির দামও হু-হু করে বেড়ে যায়। আর দুর্নীতিগ্রস্ত এ কৃত্রিম দামবৃদ্ধির প্রক্রিয়ায় অন্যদের পাশাপাশি দেশের গৃহনির্মাণ খাতও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ জনগণ, যারা জমির এ দামবৃদ্ধির কারণে নিজেদের জন্য কাঙ্ক্ষিত আবাসন সুবিধার সংস্থান করতে পারছে না। পরিস্থিতি বোঝার জন্য জমির মূল্যের একটি তুলনামূলক তথ্য দিই। ঢাকা শহরে বর্তমানে এক বর্গমিটার জমির গড় দাম হচ্ছে ২৯ হাজার ৯০০ টাকা (সূত্র: ইসরাত ইসলাম ও অন্যান্য) এবং ঢাকার চেয়েও পুরনো শহর কলকাতায় সমপরিমাণ জমির দাম হচ্ছে ২০ হাজার ৩৮৭ টাকা (সূত্র: উইকিপিডিয়া)। ফলে জমির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভূমি বিভাগের দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারলে বাংলাদেশের গৃহনির্মাণ খাতের পক্ষে সহসা ভালো অবস্থায় পৌঁছানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়বে।

গৃহনির্মাণ খাত কাঙ্ক্ষিত হারে বিকশিত হতে না পারার পেছনে এ খাতের সঙ্গে যুক্ত একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর (সবাই অসাধু নন) ভূমিকাও নেহাত কম নয়। নানা অনৈতিক ও অবৈধ পন্থায় ব্যক্তি ও খাসজমি করায়ত্তকরণ, প্লট বা  ফ্ল্যাট বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণামূলক আচরণ (টাকা হাতিয়ে নেয়া, প্লট বা ফ্ল্যাট সময়মতো বুঝিয়ে বা সঠিক মাপে ও অবস্থানে না দেয়া, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা ইত্যাদি), দূরদৃষ্টিসম্পন্ন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অনুপস্থিতি, অপেশাদার লোকজনের আধিক্য প্রভৃতি কারণে বাংলাদেশের গৃহনির্মাণ খাত বর্তমানে নানা সমস্যায় ভুগছে। আর এসব কারণেই অত্যন্ত যৌক্তিক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও দেশে এ খাতের একটি পরিচ্ছন্ন ও মর্যাদাপূর্ণ ভাবমূর্তি গড়ে উঠতে পারছে না। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যেসব উচ্চশিক্ষিত পেশাধারী উদ্যোক্তা বর্তমানে গৃহনির্মাণ খাতে নিয়োজিত রয়েছেন, উল্লিখিত অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে তাদেরও ঢালাওভাবে সমালোচনার ভাগীদার হতে হচ্ছে। অথচ এক্ষেত্রে তাদের কোনোই দায় বা ত্রুটি নেই।

গৃহনির্মাণ খাতের ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের জন্যই ব্যাংকঋণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এবং এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গিও যথেষ্ট ইতিবাচক। সরকার যথেষ্ট নমনীয় সুদে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গৃহনির্মাণ ঋণের জন্য তহবিল সরবরাহ করে যাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোও এ খাতে ঋণ দিয়ে ভালোই ব্যবসা করছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের কিছু নীতিগত ত্রুটি তথা গ্রাম-শহর নির্বিশেষে সবার জন্য একই সুদহার নির্ধারণের কারণে এ ঋণের আওতায় গ্রামাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গৃহনির্মাণ শিল্পের কাঙ্ক্ষিত বিকাশ ঘটছে না। অথচ এক্ষেত্রে গ্রামাঞ্চলের জন্য নিম্নহারে সুদ নির্ধারণ করা হলে বহু উদ্যোক্তাই হয়তো প্রত্যন্ত গ্রামে না হোক, অন্তত উপশহরগুলোয় আবাসন প্রকল্প গ্রহণে উৎসাহী হতেন এবং বহু মানুষ সেখানে ঋণ নিয়ে প্লট বা ফ্ল্যাট ক্রয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাত। এটি প্রকারান্তরে মানুষের বর্তমান নৈরাজ্যকর শহরমুখী প্রবণতাকে কিছুটা হলেও রোধ করতে সহায়ক হতো।

এ অবস্থায় সব মিলিয়ে গৃহনির্মাণ খাতের সুস্থ, গতিশীল, পরিবেশবান্ধব ও গ্রামমুখী বিকাশের স্বার্থে যে কয়টি আশু করণীয় পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করা যায়, তা হলো: ১. জমি অধিগ্রহণ ও ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের দুর্নীতি রোধ; ২. মানুষের শহরমুখী প্রবণতা রোধকল্পে গ্রামাঞ্চলে গৃহনির্মাণ ঋণের সুদের হার নিম্নতর হারে নির্ধারণ; ৩. গৃহনির্মাণ খাতে বিনিয়োগের ব্যাপারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিশেষভাবে উৎসাহিতকরণ; ৪. গৃহনির্মাণের ক্ষেত্রে পরিবেশকে বিশেষ বিবেচনায় রাখা এবং সেক্ষেত্রে প্রাকৃতিক জলাধার ও অন্যান্য নিসর্গকে বিনষ্ট না করা; ৫. গৃহনির্মাণ খাতের উদ্যোক্তাদের ভাবমূর্তি উন্নয়নের জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে অধিকতর স্বচ্ছ, বিশ্বাসযোগ্য, দায়িত্বশীল ও পেশাদারিত্বমূলক আচরণ ও সম্পর্ক গড়ে তোলা; ৬. গৃহনির্মাণ ব্যয় কমিয়ে আনতে অন্যান্য সংযোগ শিল্পের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সুসম্পর্ক ও সমন্বয় গড়ে তোলা এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সরকারের সহায়তা গ্রহণ। ৭. উদ্যোক্তা কর্তৃক যেকোনো নতুন আবাসন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে আধুনিক নগর পরিকল্পনা ও বৈশ্বিক ধারার সঙ্গে মিল রেখে তা করা ইত্যাদি।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে যেভাবে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এবং সে ধারায় মানুষের সামর্থ্য ও আকাঙ্ক্ষা যেভাবে সম্প্রসারণ হচ্ছে, তাতে এ দেশে গৃহনির্মাণ শিল্পের বিকাশ ও ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হতে বাধ্য। আর দেশের প্রতিটি মানুষের আশ্রয় সংস্থানের ব্যাপারে সাংবিধানে স্পষ্টতই উল্লেখ রয়েছে, ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে...অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা’ (সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫)। ফলে বাস্তব অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, জনগণের জীবনমানের অগ্রসরমাণ ধারা এবং রাষ্ট্রের সাংবিধানিক অঙ্গীকার— এসব একসঙ্গে মিলিয়ে অগ্রসর হলে বাংলাদেশের নিকট ভবিষ্যতের গৃহনির্মাণ খাত শুধু গতিশীল নয়, অনন্য হয়ে উঠবে বলেও আশা করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের চিন্তা ও পরিকল্পনায় অবশ্যই স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীল পেশাদারিত্বের ছাপ থাকতে হবে এবং সেটা থাকবে বলেই আশা করি।

লেখক : পরিচালক
আবু তাহের খান
ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
atkhan56@gmail.com


Link: http://bonikbarta.net/bangla/news/2018-07-19/164748/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87-%E0%A6%97%E0%A7%83%E0%A6%B9%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A3-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%8E/
Al Safayat
Administrative Officer, CDC, DIU
Cell: +8801991195579
www.safayat.info