ছোটবেলায় ক্লাস এইট পর্যন্ত ইতিহাস পড়তে হয়েছিল। অনেকদিন হয়ে গেছে। তাই অল্প কিছু নাম ও ঘটনা ছাড়া আর কিছু মনে নাই। তাও যেটুকু মনে আছে সব এলোমেলো ভাবে মাথায় ঘুরে।
তাই এলোমেলো নাম গুলোর সাহায্য নিলাম ইন্টারনেটে দেখতে। প্রথমেই আমাদের দেশের ইতিহাসে কতগুলো আন্দোলন হয়েছে তাই দেখতেছিলাম ইন্টারনেটে।
প্রথমেই আসে সিপাহী বিদ্রোহে। ১৮৫৭ সালে এই বিদ্রোহ ঘটে। ব্যর্থ এই বিদ্রোহে পরাজিত দেশীয় সৈনিক বা সিপাহীদের সংক্ষিপ্ত বিচারের পর ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। বাহাদুরশাহ পার্ক পুরানো ঢাকায় অবস্থিত। এই পার্কটির আগে ভিক্টোরিয়া পার্ক নাম ছিল। এই পার্কটি বিখ্যাত। কেননা এই পার্কটিতেই বিদ্রোহী দেশীয় সিপাহীদের ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলেই নীল বিদ্রোহ ঘটে ১৮৫৯ সালে। ব্রিটিশরা চাষিদের বাধ্য করতো নীল চাষের জন্য। যতটুকু জানি আমরা উজ্জ্বল করার জন্য সাদা কাপড়ে যে নীল দেই তা একরকম গাছ থেকে আহরন করা হয়। চাষিরা এই নীল চাষ করতে অস্বীকৃতি জানায়।
বিদ্রোহ ছাড়া চরম নির্যাতনের একটি কাহিনী মনে পড়ে। তা হল ইংরেজরা তাদের দেশে উৎপাদিত কাপড় আমাদের দেশের বাজারে
আরো বেশী বিক্রি করার জন্য দেশীয় তাঁতিদের ধরে ধরে তাদের বুড়ো আঙ্গুল কেটে দেয় - যাতে তারা আর দেশীয় কাপড় বুনতে না পারে।
তখন আন্দোলন ও সংগ্রাম গড়ে উঠেছিল কোন নির্দিষ্ট পেশার মানুষের প্রতিবাদের ফলে।
আমি ভাবি আমাদের কথা আর আমাদের পূর্ব পুরুষদের কথা। কত নির্যাতন তাদের সহ্য করতে হয়েছে। ২০০ বছর অত্যাচার সহ্য করার পরও তারা মুক্তির স্বাদ পায় নাই। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর তাদের আবারও আন্দোলন ও সংগ্রাম করতে হয়েছে।
সব সময়ই তাদের সংগ্রাম ও যুদ্ধ করতে হয়েছে তাদের থেকে শক্তিশালী ও উন্নত অস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাদের সাথে। শত্রুদের নিয়ন্ত্রানাধীন ছিল সৈন্য বাহিনী, যুদ্ধ বিমান, যুদ্ধ জাহাজ, এয়ারপোর্ট, থানা ও সব সরকারী ভবন। অপরপক্ষে তাদের নিজেদের হাতে ছিল অল্প কিছু অস্ত্র কখনো বা শুধু দেশীয় অস্ত্রপাতি। এর সাথে প্রতি সংগ্রামে ছিল মীর জাফর ছাড়াও শত্রুদের এদেশীয় দোশরেরা। তার পরও তারা শত্রুদের এদেশ থেকে তাড়িয়েছেন। যা অসম্ভব মনে হতে পারে তাই তারা সম্ভব করেছেন।
আমার মনে হয় তাদের জয়ের কারণ হল যারা অত্যাচারী তারা সব সময়ই ভীরু হয়। অপরপক্ষে যারা অত্যাচারিত তাদের পিঠ একসময় দেয়ালে ঠেকে যায়। মানুষ তখন - ডু অর ডাই - এই পর্যায়ে পৌঁছে যায়।