শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক বন্ধু ও বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ দুটি ভিন্ন জিনিস। আমরা সচরাচর এই বিষয়গুলো গুলিয়ে ফেলি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সাথে বন্ধুত্বসুলভ আচরণ থাকতে পারে তার মানে সে বন্ধু নয়। শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীরা সন্তানের মতো। শিক্ষা জীবনে আমরা জীবনে অনেক অংশ পার করে দেই। শিক্ষকের অভিভাকত্ব যদি সঠিক পথ দেখায় তাহলে ছাত্রছাত্রীদের সেই পথে যেতে সহজ হয়ে যায়। তা না হলে পথ চলা জটিলতর হয়। একজন শিক্ষক যখন শিক্ষক হয় তার নিজস্ব অঙ্গীকার থাকে আমার ছাত্রছাত্রীদের দিকনির্দেশনা যেন করে দিতে সক্ষম হয়, এমন কোনো আচরণ বা অস্বাভাবিকত্ব প্রকাশ যেন না হয় যেন একজন ছাত্র আমার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। একজন শিক্ষকের এমন আচরণ যা শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে এমন আচরণ একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হওয়াটা শিক্ষাকে ও শিক্ষকের প্রতি অসম্মান বোধের সৃষ্টি করে। পরিবারে যেমন বাবা মায়ের আচরণ থেকে সন্তানের শিক্ষা পরিপূর্ণ বা অপরিপূর্ণ হয় তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের আচরণে শিক্ষার্থীর আচরণে পরিবর্তন আসে। আমাদের মনে রাখতে হবে বার বার আমরা আমাদের জীবনের সম্পূর্ণ অংশ পরিবারে দেই না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলে যায় অনেক সময়। এই কথাটা দুই বার কেন বললাম, বিষয়টিকে আরো গুরুত্বপূর্ণ করার জন্য। অভিধানিক ভাবে বলা যায়, এই পৃথিবীটাই আমাদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে আমরা বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীন মানুষগুলো থেকে অনেক শিক্ষা গ্রহণ করি। কখনো মিডিয়া থেকে অথবা কখনো আত্মীয়স্বজন থেকে। আমরা সৃষ্টির সেরা, আমাদের মধ্যে যা বিদ্যমান তা অন্য কোনো সৃষ্টির মধ্যে নেই। আমরা চাইলেই পারি সম্পর্কের সীমাবদ্ধতা বুঝতে। একটি পরিবার ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একজন মানুষকে যে সম্মান ও ভালোবাসার নিরিখে বুঝতে বা বুঝাতে সাহায্য করবে। তা অন্য কোনো জায়গায় সম্ভব নয়। অতএব আমাদের সামাজিকতা ও দায়বদ্ধতার শিক্ষাটা খুব জরুরী যা একমাত্র পরিবারের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হওয়া উচিত। তাহলে একজন আদর্শবাদী শিক্ষক ও আদর্শবাদ দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি হবে।
----বিদিতা রহমান, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।