কিউএস র্যাংকিংয়ে দেশের ছয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমাদের প্রত্যাশা
ড. কুদরাত-ই-খুদা বাবু
২৯ অক্টোবর ২০১৮
শিক্ষাবিষয়ক যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কুয়াকুয়ারেলি সাইমন্ডস (কিউএস) প্রতিবছর মোট ১১টি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের ভিত্তিতে সারা পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং প্রকাশ করে থাকে। এ এগারোটি মানদণ্ডের মধ্যে রয়েছে : প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাফল্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাফল্য, আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক, গবেষণা প্রবন্ধের সাইটেশন, পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক-কর্মকর্তার সংখ্যা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুপাত, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষার্থী বিনিময়ের হার ইত্যাদি। বলা বাহুল্য, কিউএসের র্যাংকিং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। প্রতিবছরের মতো প্রতিষ্ঠানটি ২৪ অক্টোবর বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালের এশিয়ার সেরা ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং তালিকা প্রকাশ করে। তালিকায় তিন হাজার আটশ’র বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৮১টি দেশের ৯১৬টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে। কিউএসের ওই তালিকায় দেখা যায়, বাংলাদেশে পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে মোট ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ছয়টি হচ্ছে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
বাংলাদেশে পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় মিলিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অবস্থান ষষ্ঠ, যা একটি নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক বিরাট ও অনন্য অর্জনই বটে। কিউএস র্যাংকিংয়ে যথারীতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামব্রিজে অবস্থিত বেসরকারি গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। আর তৃতীয় স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। আর যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে তালিকার চতুর্থ নম্বরে। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান তালিকার ছয় নম্বরে। কিউএসের নতুন এ র্যাংকিংয়ে পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, উচ্চশিক্ষায় যেসব দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছে, সেসব দেশের শিক্ষার মানও উন্নত হচ্ছে। উন্নতি করা দেশগুলোর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উল্লেখযোগ্য। আর পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং পশ্চিম ও দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলো। বিশ্বজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৪ হাজার ৬৫১ জন শিক্ষক ও ৩৭ হাজার ৭৮১ জন কর্মকর্তা কিউএসের তালিকা তৈরিতে সহায়তা করেছেন। এক কোটি তিন লাখ গবেষণাপত্র ও এসব গবেষণায় ব্যবহৃত হয়েছে- এমন ছয় কোটি ৬৩ লাখ উদ্ধৃতিপত্র পর্যালোচনা করা হয়েছে তালিকা তৈরির সময়। গবেষণা, শিক্ষকতা, ডিগ্রি অর্জনের পর শিক্ষার্থীদের চাকরি পাওয়ার হার- ইত্যাদি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে কিউএস কর্তৃক এ র্যাংকিংয়ের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। কিউএস র্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়া আমাদের দেশের দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও চারটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিঃসন্দেহে ধন্যবাদ ও প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। এখন থেকে এ ছয়টি বিশ্বদ্যিালয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিশ্চয় একটু হলেও বিশেষ মর্যাদার দেখা হবে সমাজে তথা দেশে কিংবা বিদেশে। তাছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কারও কাছে তাদের নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম-পরিচয় দিতে গিয়ে একটু হলেও গর্ব অনুভব করবেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গৌরবময় অর্জন সম্ভব হয়েছে নিশ্চয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা আর সার্বিক সহযোগিতার ফলে। কিউএসের র্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়া দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় নিঃসন্দেহে প্রমাণ করেছে, সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর আন্তরিকতা থাকলে এগিয়ে যাওয়া যায় অনেক দূর, সগৌরবে দাঁড়ানো যায় মাথা উঁচু করে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে মনে রাখতে হবে, এ প্রাপ্তি ও অর্জন এক অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দায়িত্ব আরও এক ধাপ বাড়িয়ে দিল। কারণ ভালোর কোনো শেষ নেই। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনায় রাখতে হবে, এখানেই শেষ নয়, যেতে হবে বহুদূর। এ যেন আমেরিকান বিখ্যাত কবি Robert Frost iwPZ Stopping by Woods on a Snowy Evening শীর্ষক কবিতার বিখ্যাত সেই লাইন ‘And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep’কে স্মরণ করিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১০৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রয়েছে তিনটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। দেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীর তুলনায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আসন সংখ্যা অনেক কম। ফলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো ফল নিয়ে পাস করা বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। দীর্ঘকাল থেকেই দেশে এ অবস্থা চলে আসছে। এ অবস্থার কারণে অতীতে দেশের অনেক শিক্ষার্থী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাতেন। এতে দেশের বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং মেধা উভয়ই বিদেশে পাচার হতো। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এবং দেশে মানসম্মত শিক্ষার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৯৯২ সালে দেশে প্রথমবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন করা হয়। সর্বশেষ ২০১০ সালে আগের আইনের স্থলে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০’ প্রণয়ন করা হয়। এ কথা সবারই জানা আছে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) হচ্ছে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা। দেশের পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পৃথকভাবে নিয়ে ইউজিসি যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রকৃত ও সমসাময়িক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কিউএসের মতো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে এ ধরনের র্যাংকিং করার উদ্যোগ গ্রহণ করে, তবে তা দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন তথা উন্নয়ন ঘটাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৮ জুন অনুষ্ঠিত ইউজিসির এক সভায় দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং (অবস্থান নির্ধারণ) করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন এখন পর্যন্ত হয়নি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিংবিষয়ক ওই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ঘটাতে ইউজিসির দ্রুত এগিয়ে আসা প্রয়োজন। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে এ ধরনের র্যাংকিং করার প্রয়োজনীয়তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না।
সম্ভবত এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর দেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে বাংলা ট্রিবিউন-ঢাকা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে র্যাংকিং নির্ণয়বিষয়ক এক গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ওআরজি কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড পরিচালিত বাংলা ট্রিবিউন-ঢাকা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে র্যাংকিং নির্ণয়বিষয়ক ওই গবেষণাপত্রে প্রাসঙ্গিক অনেক কিছুই আসেনি। পাশাপাশি ওখানে র্যাংকিংয়ের জন্য যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল, তা অনেকটাই ছিল অসম্পূর্ণ; র্যাংকিং পদ্ধতির বিবেচ্য অনেক বিষয়, নানা গাণিতিক ফলসহ অনেক তথ্য-উপাত্তও অস্পষ্ট ছিল। ফলে ওই গবেষণাপত্র প্রকাশের পর থেকে তা নিয়ে অনেকের মাঝেই (বিশেষ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক) নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল।
তবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কিউএস কিংবা টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) কর্তৃক পরিচালিত ও প্রকাশিত র্যাংকিং নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় ও সর্বজনগ্রাহ্য। কিউএস কিংবা টিএইচই-এর র্যাংকিং যেহেতু সমসাময়িক, বস্তুনিষ্ট ও নিরপেক্ষ, তাই কিউএসের এ ধরনের র্যাংকিং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং তা আন্তর্জাতিক মানেরও বটে। এ ধরনের র্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি প্রাইভেট এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তার অবস্থান বুঝে র্যাংকিংয়ে উঠে আসার চেষ্টা করতে পারে। এবং র্যাংকিংয়ের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি হয়, যা উচ্চশিক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সর্বোপরি এ ধরনের র্যাংকিং অব্যাহত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর ভালো করার চাপ থাকে। মূলত এভাবেই সারা পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং শুরু হয়েছে এবং তা মানসম্মত অবস্থায় পৌঁছেছে। সুতরাং, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও গুণগত ও মানসম্মত আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে এ জাতীয় র্যাংকিংয়ের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিউএস র্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়া দেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়সহ যদি দেশের সব পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় দেশ ও জাতি গঠনে সত্যিকার অর্থেই আন্তরিকভাবে একযোগে এগিয়ে আসে এবং এসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জিত জ্ঞান যদি দেশের কাজে লাগানো যায়, তাহলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমাদের সবার প্রিয় বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে সগৌরবে মাথা আরও উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবে; যে বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি।
ড. কুদরাত-ই-খুদা বাবু : সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সদস্য
kekbabu@yahoo.com
Link:
https://www.jugantor.com/todays-paper/window/105841/%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%8F%E0%A6%B8-%E0%A6%B0%E2%80%8C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%9B%E0%A7%9F-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A6%BE