টেক্সটাইল টেস্টিং এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল পড়াতে গিয়ে পড়াতে হয়ঃ আগে মানুষ কোয়ালিটি কন্ট্রোল করতো। এখন কোয়ালিটি এসুরেন্স থেকে টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট ছাড়িয়ে কোয়ালিটির কনসেপ্ট বা ধারণা বদলে গেছে অনেক। আগে মানুষ জিনিষ তৈরি করে পরে চেক করে দেখতো যে পণ্যের মান ঠিক আছে কিনা? থাকলে তা বিক্রয়ের জন্য পাঠিয়ে দিত। না থাকলে আবার ব্যাক প্রসেসে দিত ঠিক করার জন্য। সে তখন গুনে দেখতো ডিফেক্টস ইন হান্ড্রেডস অথবা ডিফেক্টস ইন মিলিওন্স। অর্থাৎ সে স্বীকার করতো পণ্য তৈরি করলে কিছু ডিফেক্টিভ প্রোডাক্ট তৈরি হবে। আস্তে আস্তে কাঁচামাল দুষ্প্রাপ্য হল। আবার কোয়ালিটি সম্পর্কে ধারণা বদলালো। সে এইবার বলল নো ডিফেক্টস এট অল। অর্থাৎ এমন ভাবে পণ্য তৈরি করতে হবে যেন কোন ডিফেক্টিভ পণ্য তৈরি না হয়। আগে মানুষের পণ্যের কোয়ালিটির জন্য তার জন্য মেশিন ও প্রসেসকে দায়ী করা হত। আস্তে আস্তে কোয়ালিটির কনসেপ্ট আরো উন্নত হল। সে জানলো তার নিজস্ব কর্মী বাহিনী সহ এই পণ্যের বিক্রয়ের সাথে যাদের ভাগ্য জড়িত সবাইকেই এই পণ্যের কোয়ালিটির জন্য দায়ী। তার কর্মী বাহিনীকে ট্রেনিং দিতে হবে। পণ্য উৎপাদনের সময়ই সব প্রসেস প্যারামিটার নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোন ডিফেক্টিভ পণ্য তৈরি না হয়। সে কাওকেই নেগ্লেক্ট করতে পারবে না। এমনকি তার সাপ্লাইয়ারদেরকেও।
সবাই মিলে ও সব কিছু মিলে একটি পণ্যের মান নিশ্চিত হয়।
পড়াই আর ভাবি সব কিছুর মূলে আছে মানুষের কোয়ালিটি। যে সবার কথা ভাবে একমাত্র তার পক্ষেই কোয়ালিটি নিশ্চিত করা সম্ভব। টাকা লোভী স্বার্থপর মানুষের পক্ষে কখনোই কোয়ালিটি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আমরা পণ্যের গুনোগত মান নিয়ে এতো ভাবি। সারাজীবন কাটাই। কত পড়াশোনা ও গবেষণা করি।
আমার মতে মানহীন পণ্য আমরা হয়তো টলারেট বা সহ্য করতে পারি। এমনকি অনেক পণ্য ছাড়া আমরা জীবন পার করতে পারি। যে মোবাইল ছাড়া আমরা এখন এক মুহূর্ত কল্পনা করতে পারি না তা ছাড়াও মানুষ হাজার হাজার বছর পার করে দিয়েছে।
কিন্তু মানহীন মানুষ সব থেকে ক্ষতিকারক ও বেদনাদায়ক। মানহীন পণ্য সহ্য করা যেতে পারে। কিন্তু মানহীন মানুষ সহ্য করা অনেক বেদনাদায়ক ব্যাপার। তাই মানুষের মান বা কোয়ালিটি নিয়ে আমরা কতটুকু ভাবি বা চিন্তা করি? নিজেদের নিয়ে কতটা সময় দেই? আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের নিজেদেরকেই জবাবদিহি করতে হবে। আমাদের জীবন আমরা কিভাবে কাটিয়েছি? আর কাওকে নয়।
(আমার ফেসবুক পোস্ট থেকে।)