শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করবে ফেসবুক
২০২০ সালের শেষ নাগাদ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন ৭৫ শতাংশ কমাবে ফেসবুক। একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী নিজস্ব পরিচালন ব্যবস্থায় বিদ্যুতের উৎস হিসেবে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার করবে। সম্প্রতি ফেসবুকের পক্ষ থেকে এমনটাই ঘোষণা দেয়া হয়েছে। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।
ফেসবুক এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছে, করপোরেট নবায়নযোগ্য জ্বালানি ক্রয়ে একটি রেকর্ড বছর পার করেছে ফেসবুক। এখন তারা করপোরেট প্রতিষ্ঠানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হওয়ার পথে রয়েছে। তারা তিন গিগাওয়াটের বেশি সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে সই করেছে। এরই মধ্যে এক বছরে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ ক্রয় করা হয়েছে।
গুগল, অ্যাপল, অ্যামাজনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির বৈশ্বিক তথ্যকেন্দ্র ও অফিসগুলোয় প্রচুর বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এ চাহিদা মেটাতে এখন নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে ঝুঁকছে। এরই মধ্যে কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানি শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। গত জুনে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং ইলেকট্রনিকস যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও চীনের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কার্যক্রম পরিচালনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছে। ২০২০ সাল নাগাদ স্যামসাং তাদের সব ধরনের কার্যক্রমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে। মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপলের পাশাপাশি সিলিকন ভ্যালির ডজনখানেক প্রযুক্তি কোম্পানি এরই মধ্যে তাদের শতভাগ কার্যক্রম নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে। এবার সে তালিকায় নাম লেখাল ফেসবুক।
ফেসবুকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ সব কার্যালয়ের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার অর্ধেক নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পূরণের লক্ষ্য ঠিক করেছিল ফেসবুক। তবে নির্ধারিত সময়ের এক বছর আগেই সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। ফেসবুক দাবি করেছে, ২০১৭ সালের মধ্যেই কার্যালয়গুলোয় তারা ৫১ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতে পেরেছে।
গত বছর জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহায়তার অঙ্গীকার করেছে ফেসবুক। জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্যারিস চুক্তিকে সমর্থন জানিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক মাধ্যমটি। ধারণা করা হচ্ছে, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস ও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি তারই অংশ।
শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বিষয়ে ফেসবুকের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। ফেসবুকের এমন উদ্যোগের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গের প্রশংসা করেছেন নেদারল্যান্ডসভিত্তিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিসের জ্যেষ্ঠ করপোরেটে ক্যাম্পেইনার গ্যারি কুক। তিনি বলেন, ফেসবুকের মতো অন্য কোম্পানিগুলোকেও গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন হ্রাস ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে জোর দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিপর্যয় এড়াতে এর কোনো বিকল্প নেই।
গত বছর ক্লাইমেট হোম নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব ক্রমেই ডিজিটালাইজেশনের দিকে যাচ্ছে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে স্মার্টফোন, ট্যাবলেটসহ অন্যান্য ইন্টারনেট সংযুক্ত ডিভাইস বিশ্বের মোট গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের ক্ষেত্রে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ ভূমিকা রাখবে। ২০৪০ সালের মধ্যে তা ১৪ শতাংশে পৌঁছবে।
বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের প্রসার ঘটছে। এর ফলে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়েই চলছে। এ কারণে বিভিন্ন পরিবেশবিষয়ক সংগঠন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।
বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য নবায়নযোগ্য উেসর ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবেশবাদীরা। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ প্রচলিত উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চেয়ে নবায়নযোগ্য উেসর দিকে জোর দিতে শুরু করছে। এ খাতে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগও করছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এমন পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
Source:
http://bonikbarta.net/bangla/news/2018-08-31/169035/%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%97-%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A6%A8%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF-%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%95/