৯ বছরেই কলেজছাত্র

Author Topic: ৯ বছরেই কলেজছাত্র  (Read 1111 times)

Offline mosfiqur.ns

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 297
  • Test
    • View Profile
৯ বছরেই কলেজছাত্র
« on: January 26, 2019, 03:15:54 PM »
খাইরান আমান কাজীর বয়স সবে নয় বছর। স্কুলে পড়ার কথা, কিন্তু সে পড়ছে কলেজে। গণিত আর রসায়নের মতো বিষয় তার আবার প্রিয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত খাইরানকে অনেকে তো ‘বিস্ময় বালক’ অভিধাও দিচ্ছেন।
য়ের কাছ থেকে ফোনটা নিয়েই কুশল জানতে চাইল খাইরান, ‘হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?’

খাইরানের মুখে শুদ্ধ বাংলায় সম্ভাষণ শুনে চমকে উঠতে হলো। যুক্তরাষ্ট্রে বেশ আগে অভিবাসী হওয়া একটি পরিবারে জন্ম নেওয়া তার বয়সী শিশুর মুখ থেকে এমন বাংলা শোনাটা অপ্রত্যাশিতই বটে।

খাইরানের মা জুলিয়া কাজীর সঙ্গেই কথা হচ্ছিল। ছেলে সম্পর্কে বিস্ময়কর সব তথ্য দিতে দিতেই একসময় ফোনটা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তারপর খাইরানের ভালো লাগার গল্প শোনা। অনেকটা প্রশ্ন-উত্তর পর্ব যেন।

‘তোমার প্রিয় টিভি অনুষ্ঠান কী?’ খাইরান বলল, ‘ইয়াং চিলড্রেন’। প্রিয় রং কী? সে বলল, নীল। এভাবেই জানা হলো তার প্রিয় অভিনেতা হ্যারি পটার সিরিজের অভিনেতা ড্যানিয়েল র​্যাডক্লিফ। মার্কিন অনেক শিশুর মতো খাইরানেরও প্রিয় খেলা বাস্কেটবল। এক ফাঁকে বলল, ‘আমি নিজেও কিন্তু বাস্কেটবল খেলি।’

কে এই খাইরান? যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্ট–এ নিজের সম্পর্কে কলাম লিখেছে খাইরান আমান কাজী। তার সে লেখা পড়ে অনেকের চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। তার বয়স সবে ৯ বছর। স্কুলে পড়ার কথা। কিন্তু এতটুকুন বয়সেই সে নাম লিখিয়েছে কলেজের খাতায়। হাফিংটন পোস্ট–এ লেখাটা প্রকাশের পরই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল, আয়ারল্যান্ডের দ্য আইরিশ টাইমসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে থাকে খাইরাননামা!

সেসব খবরের সূত্র ধরেই ফোনে কথা হচ্ছিল খাইরানের মা জুলিয়া চৌধুরী কাজীর সঙ্গে। তিনি পেশায় ওয়াল স্ট্রিট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী। যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরের বে এলাকায় বসবাস তাঁদের। খাইরানের দাদার বাড়ি মানিকগঞ্জে। বাবা মুস্তাহিদ কাজী পেশায় প্রকৌশলী।

দুই বছরেই স্কুলে

২০১১ সালের কথা। খাইরান কাজীর বয়স তখন দুই বছর। তাকে নিয়েই ব্যতিব্যস্ত পরিবারের সদস্যরা। অন্য শিশুদের চেয়ে বুদ্ধিতে সে অনেক এগিয়ে। সম্পূর্ণ বাক্য বলতে পারত ওই বয়সেই। তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন খাইরানের পরিবার। নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বোঝা গেল, তার যে শুধু ‘আই কিউ’ বা বুদ্ধিমত্তা বেশি— তা নয়, ‘ই কিউ’ বা আবেগজনিত বুদ্ধিমত্তাও বেশি। জুলিয়া কাজী জানালেন, ‘আমার ছেলের বুদ্ধিমত্তা খুবই প্রখর। প্রতিটি বিষয়ে নিজের মতো করে একটা মতামত আছে তার।’

চিকিৎসকের পরামর্শে দুই বছরের খাইরানকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বিপত্তি বাধল স্কুলে ভর্তির পর। শিক্ষকদের বেশি মনোযোগ দিতে হতো তার দিকে। শিক্ষকেরা বোর্ডে লেখার সঙ্গে সঙ্গে সে বুঝে ফেলে। এক সেমিস্টারের পড়া সে দুই সপ্তাহেই শেষ করে ফেলত।

জুলিয়া কাজী বলতে থাকেন, ‘তার মতো শিশুদের মস্তিষ্ক সারাক্ষণ চলতে থাকে। একটি বিষয় থেকে আরেকটি বিষয়ে চলে যায়। তাই অনেক সময় তাকে থেরাপি দেওয়া হতো স্কুলে। কিংবা ব্যায়ামাগারে নিয়ে গিয়ে দৌড়াতে বলা হতো।’

নিয়মানুযায়ী এখন সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। তবে এই প্রখর মেধাবী শিশুকে তার বাবা-মা কলেজে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাত্র ৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার লাস পসিটাস কলেজে ভর্তি করা হয় খাইরান আমান কাজীকে। সেখানে গণিত ও রসায়ন বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট করছে সে। তবে গিফটেড স্কুলের খাতাতেও তার নামটা আছে। জুলিয়া কাজী বলছিলেন, ‘কলেজের পাশাপাশি ছেলেকে স্কুলেও রাখা হয়েছে, যাতে সে তার বয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গ পায়। আমি আর ওর বাবা দুজনে ব্যস্ত থাকি বলে আমার ভাইয়ের স্ত্রী সাধারণত ওর দেখাশোনা করে।’

স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শুধু নয়, সপ্তাহান্তে পিয়ানো বাজানো, চীনের মান্দারিন ভাষা শেখা, কারাতের স্কুলে হাজির হওয়াসহ নানা কার্যক্রমে যুক্ত খাইরান।

নামের মতোই পৌরাণিক

পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ভাস্কর্যের পাশে খাইরান কাজী
পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ভাস্কর্যের পাশে খাইরান কাজী
নিউইয়র্ক নগরীর আদি বাঙালি বাসিন্দাদের কাছে গজনফর আলী নামটা পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরে বাংলা ভাষায় যাঁরা পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেছিলেন, তিনি তাঁদের একজন পথিকৃৎ। খাইরান গজনফর আলীর নাতি। খাইরানের মা জুলিয়া কাজী পরিবারের সঙ্গে দুই বছর বয়সে বাংলাদেশের মৌলভীবাজার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এস্টোরিয়া-জ্যামাইকায় বড় হয়েছেন। পরে মুস্তাহিদ কাজীকে বিয়ে করে সানফ্রান্সিসকোর বেতে থিতু হোন। ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি তাঁদের সংসারে আসে খাইরান।

খাইরান নামের অর্থটা কী? কথায় কথায় প্রশ্নটা করেই ফেলি জুলিয়া কাজীকে। তিনি হাসলেন। তারপর নিজের ভালো লাগার কথা বলতে শুরু করেন। জুলিয়া কাজী শৈশব থেকে পৌরাণিক ধরনের বই পড়তে ভালোবাসতেন। বিশেষ করে জাপানি কাহিনি খুব প্রিয় ছিল। জাপানি পৌরাণিক কাহিনি থেকে ছেলের নামটাও রাখেন। খাইরান অর্থ হচ্ছে সাগরের নিচে এক দরজা থেকে আরেক দরজা খুলে যাওয়া।

নামের মতোই যেন খাইরানের জানার আকাঙ্ক্ষা অনন্ত। জ্ঞানসমুদ্রের এক দরজা থেকে আরেক দরজায় যাওয়ার ইচ্ছা তার। সে ইচ্ছাতেই
এগিয়ে যাক খাইরান, সে প্রত্যাশা তো সবার।
https://www.prothomalo.com/pachmisheli/article/1576182/%E0%A7%AF-%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
Md. Mosfiqur Rahman
Sr.Lecturer in Mathematics
Dept. of GED

Offline Raisa

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 908
  • Sky is the limit
    • View Profile
Re: ৯ বছরেই কলেজছাত্র
« Reply #1 on: January 30, 2019, 04:37:40 PM »
 :) :)
:)