সে চেয়েছিল লিখে ফেলে কবিতায় - বসন্তের বাতাসে কিভাবে পাতাটি দুলছিল। সাথে সকালের চকচকে রোদ কিভাবে পড়েছিল পাশের জানালায়। মনে হয় সে হেটে চলে পথে পথে অবিরাম। আর লিখে চলে তার অলস ভাবনা গুলো। স্তব্ধ সময়কে সে অনুভব করতে চায় - ঠিক যেভাবে মৃদু মন্দন বাতাস গাল ছুয়ে যায়।
তার ইচ্ছা ছিল আকাশের সব তারা গুলো গুনে ফেলার। চাঁদের আলোয় সাগরের ঢেউ গুলোর ছবি আকার। আর আমাবস্যার অন্ধকার রাতে ঝড়ে মাঠের মাঝে বাতাসের শোঁ শোঁ শব্দ শোনার। সে অনুভব করতে চায় সেই কষ্ট - পানিতে ডুবে যাওয়ার সময় কিভাবে আর্তনাদ করে উঠে মানুষ। হিংস্র শ্বাপদ যখন সামনে এসে দাড়ায় আর জানে পালাবার কোন পথ নাই। কিংবা বৃষ্টি পড়ার ছন্দে ছন্দে গেয়ে যেতে চায় তার বেদনা গুলো। তপ্ত রোদে আকাশের দিকে তাকিয়ে খুঁজে চলে চিল। তাদের মতই সে একাকি আর ক্ষুধারথ। নীরব নিস্তব্ধ নিরবিচ্ছিন্ন আকাশ আর হাহাকার চারিদিকে।
কাঁটা ওয়ালা আগাছায় হেটে চলে সে। গ্রীষ্মের তাপদাহে তার চোখের পানি আর গায়ের ঘাম একাকার। কিছু পড়ে তার ঠোঁটে - নোনা স্বাদ পায় সে। চৌচির মাটিতে ঝরে পড়ে চোখের জল মিশ্রিত ঘাম। মিশে যায় তা পায়ের ক্ষত থেকে বের হওয়া রক্তের সাথে। পথে পড়ে চলে লাল পায়ের ছাপ - ঠিক ব্লক প্রিন্টের মত।
ক্ষত বিক্ষত ক্লান্ত পরিশ্রান্ত ক্ষুদারথ একাকি সে ভেবে চলে - মনের কষ্ট গুলোকে কি চাপা দেয়া গেছে? ঠিক যেভাবে সূর্য উঠলে ম্লান হয়ে যায় প্রদীপের আলো। যেভাবে তারা গুলো চাঁদের আলোয় নিভু নিভু মনে হয়। কষ্ট কি মনের বেদনা গুলোকে ভুলাতে পেরেছে?
সন্ধ্যা হয়ে গেছে। রাত হতে বাকি নাই। শেষ হয়নি পথ চলা। শেষ হয়নি কষ্টের। হয়নি শেষ মীমাংসা। লেখা হয়নি কবিতা। আঁকা হয়নি সেই মুহূর্তটি। কিংবা সুর তোলা হয়নি সেই সেই বেদনার। দিনশেষে সে ফিরে চলে আলোকোজ্জ্বল ঘরে। শূন্যহাতে।