পরীক্ষা ভীতি

Author Topic: পরীক্ষা ভীতি  (Read 1282 times)

Offline Bilkis Khanam

  • Newbie
  • *
  • Posts: 28
  • Test
    • View Profile
পরীক্ষা ভীতি
« on: February 26, 2019, 12:04:50 PM »
আজ থেকে অবন্তীর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। গত দুইদিন ধরে সে সারাক্ষন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত ছিল। গতকাল রাত ২টা পর্যন্ত পড়াশোনা করে ঘুমিয়েছিল অবন্তী। ভোর ৫ টায় তার ঘুম ভেঙ্গে যায় দুঃস্বপ্ন দেখে। স্বপ্নে দেখে, সে পরীক্ষার হলে বসে কিছুই লিখতে পারছে না, এইদিকে সময়ও চলে যাচ্ছে। কি ভয়ংকর! ঘুম থেকে উঠে অবন্তী আবার পড়তে বসলো। তার মনে হচ্ছে সবকিছুই পড়া হয়েছে কিন্তু সে সব ভুলে যাচ্ছে। পরীক্ষার হলে গিয়ে কিছুই লিখতে পারবে না। এইসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ অবন্তীর কেমন বমি বমি লাগছে, পেটেও মোচড় দিচ্ছে, শরীর ঘামাচ্ছে। মনে হচ্ছে, আজ বুঝি তার সব শেষ হয়ে গেল!

পরীক্ষার পুর্বে অবন্তীর মত এধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন অনেক শিক্ষার্থী। আমরা প্রত্যেকেই পরীক্ষার পূর্বে কিছুটা মানসিক চাপ অনুভব করে থাকি। কিছুটা মানসিক চাপ অনুভব আমাদের জন্য ইতিবাচক ভুমিকা পালন করে। কারন, আমরা যদি ন্যূনতম মানসিক চাপ অনুভব না করি তাহলে আমরা পরীক্ষার প্রস্তুতির তাগিদ অনুভব করব না ফলশ্রুতিতে আমাদের পরীক্ষার ফলাফল ভাল হবে না। সুতরাং কিছুটা পরিমানে মানসিক চাপ যা আমাদের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে তা আমাদের জন্য ভাল। কিন্তু যখন এই মানসিক চাপ অতিরিক্ত পর্যায়ে পৌছে যায় এবং আমাদের কর্মক্ষমতা হ্রাস করে তখন তা আমাদের উপর নেতিবাচক ভূমিকা রাখে। এই অতিরিক্ত নেতিবাচক মানসিক চাপ এর কারনে মূলত পরীক্ষা ভীতি তৈরী হয়। পরীক্ষা ভীতি হল পরীক্ষা নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা এবং নিজেকে মূল্যায়নের ভয়।

বিভিন্ন কারনে একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে এই ভীতি দেখা দেয়। যেমনঃ পরিবারের মানুষের পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষা, অন্য শিক্ষার্থীদের সাথে নিজেকে অতিরিক্ত তুলনা করা, সময়মত পড়া সম্পন্ন না করা কিংবা পড়া ফেলে রাখা, পড়া বুঝতে না পারা, নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারনা (যেমনঃ আমি কিছু পারিনা, আমাকে দিয়ে হবে না),নিম্ন আত্ন-বিশ্বাস, নিজের প্রতি উচ্চাশা।

পরীক্ষা ভীতির উপসর্গ গুলো হলঃ মাথাব্যাথা, বমিবমি ভাব, ডায়রিয়া, গলা শুকিয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, শ্বাসকষ্ট, দ্রুত হ্রদস্পন্দন, মূর্ছা যাওয়া, রাগ, ভয়, অসহায়ত্ব, খিটমিটে মেজাজ, মনোযোগের অভাব ইত্যাদি।

পরীক্ষা ভীতি থেকে মুক্তি পাবার উপায়ঃ

বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে এই পরীক্ষা ভীতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব।
• প্রথমেই পড়াশোনার অভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়মিত লেখাপড়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। পড়া ফেলে রাখা, পরে পড়বো এই ধরনের মানসিকতা থেকে নিজেকে বেড়িয়ে আসতে নিজেকে সাহায্য করতে হবে। এইজন্যে প্রতিদিন ক্লাসে যা পড়ানো হচ্ছে বাসায় এসে তা একবার হলেও পড়তে হবে। একসাথে অনেকক্ষণ ধরে পড়তে সমস্যা হলে কিছু সময় পর পর বিরতি দিয়ে আবার পড়তে বসতে হবে।
• প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস করা এবং ঘুমের সময় মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া যে “আমি এখন ঘুমাব”, এই সময় মোবাইল ফোন বা অন্যান্য যন্ত্র যা ঘুমকে প্রভাবিত করে তা দূরে রাখা।
• যখন পড়তে বসবো তখন মনোযোগ সম্পূর্ন পড়ার প্রতি রাখতে চেষ্টা করা, অন্য বিষয়ের চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখা।
• মেডিটেশন ও রিলেক্সেশন চর্চা করা। পরীক্ষা ভীতি যেহেতু উদ্বেগের কারনে হয়ে থাকে তাই নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা এই ভীতি হ্রাসে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করে।
• যদি আপনার উদ্বেগের হার আপনার নিজের নিয়ন্ত্রনের বাইরে থাকে তবে এক্ষেত্রে একজন প্রফেশনাল সাইকোলজিস্টের সহযোগীতা নেয়া ।

Bilkis Khanam
Psychologist
Daffodil International University.
Bilkis Khanam
Psychologist
Office of the Director of Students' Affairs
Daffodil International University
Cell no: 01847140065