আমাদের সময় গান শোনা হত ক্যাসেট প্লেয়ারে। ক্যাসেট প্লেয়ার গুলোকে টু ইন ওয়ানও বলা হত। কেননা ক্যাসেট প্লেয়ারের সাথে সেগুলোতে রেডিও ও থাকতো। ক্যাসেট প্লেয়ার ও রেডিও এই দুই জিনিস একই সাথে থাকতো বলে এই নাম - একের ভিতরে দুই। ক্যাসেট গুলো পাওয়া যেত দুই ক্যাপাসিটির। ৬০ মিনিট ও ৯০ মিনিটের। এক একটি ক্যাসেটের দুইটি পিঠ থাকতো। এ ও বি। এ পিঠের গান শোনা হয়ে গেলে ক্যাসেট উলটিয়ে বি পিঠের গান ক্যাসেট প্লেয়ারে চালাতে হত। ক্যাসেট প্লেয়ার গুলোতে একটি বড় লাল বাটন থাকতো। যেটি টিপে প্লেয়ার অন করলে ক্যাসেটে রেকর্ড করা যেত। এছাড়াও এটিতে থাকতো রিউইন্ড ও ফাস্ট ফরওয়ার্ড বাটন। অর্থাৎ গান আগিয়ে বা পিছিয়ে শোনার অপশন।
মনে পড়ে একসময় এলিফ্যান্ট রোডে বেশ কিছু রেকর্ডিঙয়ের দোকান ছিল। যেগুলোতে টাকার বিনিময়ে ক্যাসেটে পছন্দের গান রেকর্ড করে দিত। সে গুলোতেও সবসময় ভীর অনেক থাকতো। অর্ডার দেয়ার পর বেশ কিছু দিন লাগতো ডেলিভারি দিতে। কিছু ক্যাসেট থাকতো যে গুলোতে গান রেকর্ডিং করা থাকতো। শুধু দোকান থেকে কিনে নিলেই ক্যাসেট প্লেয়ারে গান শোনা যেত। সেগুলো এক একটি নির্দিষ্ট ব্যান্ডের গান থাকতো। এখন যেমন ব্যান্ডের সি ডি পাওয়া যায়। কিন্তু নিজের চয়েজ অনুযায়ী ক্যাসেট রেকরডিং করাতে হলে ব্ল্যাঙ্ক ক্যাসেট কিনতে হত। ক্যাসেট প্লেয়ারের কিছু পরে আসলো ওয়াক ম্যান। সাইজে অনেক ছোট এটি ও হেড ফোনের সাহায্যেই শোনা যেত গান। যেহেতু সাইজে অনেক ছোট এটি তাই লুকিয়েও রাখা যেত সহজে। আমরাও আমাদের স্টুডেন্ট লাইফে রাতে লুকিয়ে ওয়াক ম্যানে কত গান শুনেছি। ওয়াক ম্যান ব্যাটারিতে চালাতে হত। এছাড়াও এডাপ্টারের সাহায্যে সরাসরি প্লাগ পয়েন্টে কানেক্ট করেও ওয়াক ম্যান চালানো যেত।
এখন সি ডি ও কেউ কেনে না। সব সফট কপি লোড করে নিলেই হয়। আমাদের সময় ইউটিউব ছিলো না।
মোবাইল-কম্পিউটারই ছিল না। আগের ক্যাসেট প্লেয়ার এখন জাদুঘরে রাখার সময় হয়ে গেছে।
তার পরও আমার সব সময় মনে হয় আমাদের ছোটবেলা অনেক আনন্দের ছিল। যা কিনা এখনকার ছেলে মেয়েরা কল্পনাও করতে পারবে না।