আমাদের প্রত্যেকের যা কিছু শেখা তার বেশিরভাগই বাবা, মা, প্রতিবেশীদের কাছ থেকে। এখনো আমরা সবসময় বলি- আমার বাসা মানে আমার স্বর্গ। যেখানে গেলে আমি ভুলে যাই আমার ক্লান্তি, কষ্ট, দুঃখ; এককথায় ভুলে যাই পেছনের অনেক কিছু, খুঁজে পাই নতুন জীবনের সন্ধান। আমরা পরিবার থেকেই শিখেছি, শিখছি এবং সারা জীবন শিখে যাব। আর এই শিক্ষা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি এবং করে যাব। বাইরের জগতের সঙ্গে আচরণ কেমন হবে, নিজের ভেতরে মূল্যবোধ গড়ে তোলা এসব কিছুর প্রাথমিক শিক্ষাটা আসে পরিবার থেকেই। বাজারে গেলেন বাবার সঙ্গে, কীভাবে দামদামি করে, পর্যবেক্ষণ করে কিনতে হয়, সেটি ছোটবেলায় শিখবেন। আবার প্রতি সপ্তাহে বাবার সঙ্গে মসজিদ মন্দিরে উপসানালয়ে যাওয়ার অভ্যাসটাও ছোটবেলায় গড়ে উঠে পরিবারকে কেন্দ্র করে। আবার ঘরে কোনো অতিথি আসলে অতিথির সঙ্গে আচরণ কেমন হবে এটাও বাবা মা সন্তানকে শিক্ষা দেয়। যখন সন্তান প্রথম স্কুলে যায় তখন বাবা মা শিখিয়ে দেন কার সঙ্গে মেশা উচিত কার সঙ্গে মেশা উচিত না। প্রতিনিয়ত আমরা এভাবেই পরিবার থেকে শিক্ষালাভ করে থাকি- যে শিক্ষাটাকে শিক্ষাবিজ্ঞানের ভাষায় আমরা অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা বলে থাকি। আনুষ্ঠানিক এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও একজন ব্যক্তির মধ্যে জ্ঞান, দক্ষতা এবং দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ ঘটে থাকে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে শিক্ষার সূচনা হয় অনানুষ্ঠানিক ধারায় পরিবার থেকে এবং এই প্রক্রিয়া আমৃত্যু অব্যাহত থাকে। এজন্য এ শিক্ষাকে জীবনব্যাপী শিক্ষাও বলা হয়। দৈনন্দিন জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে মানুষ শুনে, দেখে, অনুকরণ করে এবং অভিজ্ঞতার আলোকে অনানুষ্ঠানিকভাবে জীবনব্যাপী শিক্ষালাভ করে পরিবার থেকে। বর্তমান সমাজে পারিবারিক শিক্ষাই শিশুর আচার-ব্যবহার, মন-মানসিকতা, সামাজিকীকরণ ও চরিত্র গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করে।