জাতিসংঘের শিক্ষা সম্মেলনে প্রথম বাংলাদেশি ক্ষুদে শিক্ষার্থী,

Author Topic: জাতিসংঘের শিক্ষা সম্মেলনে প্রথম বাংলাদেশি ক্ষুদে শিক্ষার্থী,  (Read 1821 times)

Offline sumaiya

  • Newbie
  • *
  • Posts: 11
  • Test
    • View Profile
প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ২৮ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ  জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গ্লোবাল ক্লাসরুম ইন্টারন্যাশনাল মডেল ইউনাইটেড নেশনস প্রোগ্রাম বা জিসিআইমুন। এটি মূলত: জাতিসংঘের অধীনে একটি শিক্ষা বিষয়ক ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম। বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম জিসিআইমুনে মিড-লেভেল স্কুল থেকে অংশগ্রহন করবে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী স্বস্তিকা গার্গী চক্রবর্তী।
‘জাতিসংঘে যাচ্ছ। কেমন লাগছে?’ উচ্ছ্বসিত গার্গী বলেন, ‘আমি খুব খুশি। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে আমেরিকায় যাচ্ছি। এটা আমার কাছে বিরাট অর্জন। সম্মানের বিষয়। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।’
সুপ্রিয় কুমার চক্রবর্তী এবং অনূসুয়া চক্রবর্তীর একমাত্র মেয়ে স্বস্তিকা গার্গী পড়ছে গ্রেড ফাইভে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ইংলিশ মিডিয়াম সেকশনে।

জাতিসংঘের ১৫তম এই সম্মেলনে বিশ্বের ২৮টি দেশের ৫০ হাজার হাইস্কুল এবং ২৫০ প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রায় ৪ হাজার তরুণ নেতা জিসিআইমুনে অংশগহন করার দুর্লভ সুযোগ পেয়েছেন। তারা একে অপরের কাছে নিজেদের ভাবনা তুলে ধরবেন।

২৮ মার্চ তারুণ্যের শক্তি নিয়ে পৃথিবী বদলানের প্রত্যয়ে  তরুণরা হাজির হবেন বিশ্বে ব্যাপক সুনাম অর্জন করা এ শিক্ষা সম্মেলনে। আমেরিকার নিউইয়র্কে প্রতিবছর দু‘বার এ প্রোগ্রামের আয়োজন করে জাতিসংঘ। 
গার্গী বলেন, ‘এই শিক্ষা সম্মেলনের সবকিছুতেই জাতিসংঘ সম্মেলনের মতো কায়দাকানুন। যা আমার ক্যারিয়ার গড়তে দারুন কাজে দেবে বলে বিশ্বাস করি। কোনো বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা, নিজের দেশের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা, বিতর্ক করা...সবই এখানে করতে হবে। এসবের মধ্য দিয়েই আমার ভবিষ্যতে রাষ্ট্রদূত (Ambassador ) হওয়ার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। এটা আমার স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়তে অনেকখানি সহায়তা করবে।’
 
সম্মেলনে গার্গী তার জন্য নির্ধারিত ক্যারিবীয় সাগরের হিস্পানিওলা দ্বীপের পশ্চিমে এক-তৃতীয়াংশ এলাকা নিয়ে গঠিত রাষ্ঠ্র হাইতি’র হয়ে কথা বলবেন। দেশটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনায় মিলিত হবেন তিনি। আর এ জন্য তাকে প্রচুর পড়তে হয়েছে। হাইতির সমাজব্যবস্থা, চিকিৎসাব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা, বিদেশনীতি, রাজনীতি, অর্থনীতি- সব বিষয়েই জানতে হয়েছে।

কী হয় এই সম্মেলনে ?
[/b]

গ্লোবাল ক্লাসরুম ইন্টারন্যাশনাল মডেল ইউনাইটেড নেশনস প্রোগ্রাম বা জিসিআইমুন এ অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মশালায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করেন। এতে রয়েছে বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং মতবিনিময় সভা। যেসব দেশে শিশু কিশোররা খাদ্য, পুষ্টি, চিকিৎসা, শিক্ষা, নাগরিক অধিকার, বাক-স্বাধিনতা, চলাচলে সুবিধাসহ রাষ্ট্রীয় নানা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত মূলত: তাদের কথা তুলে ধরার প্লাটফরম এই সম্মেলন।

এতে উন্নত দেশের শিক্ষার্থীরা অনুন্নত দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা, নিজ দেশের সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরা ছাড়াও ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং তথ্য বিনিময় করেন। তুলে ধরেন একটি দেশকে কিভাবে সামনে এগিয়ে নেয়া যায় সে বিষয়ে নিজস্ব মতামত। অনুন্নত দেশের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে তাদের এই অর্জিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন সেই লক্ষ্যেই মূলত: এই সম্মেলনের আয়োজন।

এই সম্মেলনের মাধ্যমেই জাতিসংঘ ঘোষণা করে একটি রাষ্ট্রের ভবিষৎ প্রতীকী রাষ্ট্রদূত। একটি দেশকে সমৃদ্ধশালী করতে করণীয় বিষয়ে শিক্ষার্থীদের লিখিত আকারে তুলে ধরতে বলা হয়। নির্বাচকরা তথ্যসমৃদ্ধ এবং বাস্তবসম্মত রচনাকে ‘বেস্ট ডেলিগেট পেপার’ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষনা করেন।

মূল্যবান প্রস্তাবনা এবং ডেলিগেশন পেপার জমা দেয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে আন্তর্জাতিক এই শিক্ষা সম্মেলনের।

এদিকে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী স্বস্তিকা গার্গী হাইতির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কৃষি, শিক্ষা ও চিকিৎসা বিষয়ে বিতর্ক, আলোচনা এবং বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে করণীয় বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরবেন।

গার্গী পড়াশোনার পাশাপাশি নানা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্কুলের বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে কৃতিত্ত্বের সাক্ষর রেখেছেন। স্কুলভিত্তিক ‘ডেটল হাত ধোয়া প্রোগ্রাম’ প্রচারণার স্বেচ্ছাসেবক, টার্কিশ হোপ ইন্টরন্যাশনাল স্কুল এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত ৬ষ্ট আন্ত:স্কুল অলিম্পিয়াড এ অংশগ্রহন, ২০১৭ সালের রেপ্লিক্স আর্ট প্রতিযোগিতায় ১ম পুরুষ্কার, ব্রিটিশ কাউন্সিলের বই পড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন, ডিআইএস কর্তৃক স্পোর্টস প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জন, আর্কন আর্ট কন্টেস্ট এ বিশেষ পুরুষ্কার, বার্ষিক বানান ও কুইজ প্রতিযোগিতায় ২য় পুরুষ্কার, ঐকতান কর্তৃক আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফ্লাগ ড্রয়িং প্রতিয়োগিতায় অংশগ্রহনসহ স্বস্তিকা গার্গীর পুরুষ্কারের ঝুলিতে জমা পড়েছে প্রায় ২৫টি সনদ ও ক্রেস্ট। এছাড়া ২০১৭ সালে বাংলা অলিম্পিয়াডে কবিতা আবৃত্তিতে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন তিনি।

এর আগে স্বস্তিকা গার্গীর ভাই অর্ণব চক্রবর্তীও ২০১৪ সালে এই শিক্ষা সম্মেলনে অংশগ্রহন করে দেশের জন্য গৌরব বয়ে আনেন।

ডেইলি বাংলাদেশ/এমএইচ
Source: http://gg.gg/dhbcb
samia