Career Development Centre (CDC) > Be a Leader

বশে রাখুন আপনার রাগ

(1/3) > >>

Sultan Mahmud Sujon:
বশে রাখুন আপনার রাগ

ব্যক্তিগত জীবন ও ক্যারিয়ার গঠনে যেসব বড় বাধা আপনাকে পার হতে হয় তার একটি হলো রাগ। রাগ হলো সেই প্রকৃতি প্রদত্ত এক আবেগ যা দিয়ে আমরা অপছন্দের বিষয়কে খুব বিশ্রীভাবে প্রকাশ করি। এটা ঠিক, নিজের ভেতরের উত্তাপটিকে নিয়ন্ত্রণ করা সব সময় সহজ কাজ নয়। অনেকে আবার ভাবেন রাগের কারণে মানুষ তাকে ভয় পায় আর এটাই অন্যদের তার নিয়ন্ত্রণের একটা কৌশল। কিন্তু নিশ্চিতভাবে এটা নোঙরা একটা কৌশল। মানুষকে নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সেরা কৌশল হলো যুক্তি ও বিবেচনাবোধ ব্যবহার করা, ক্রোধ নয়। যার নিজের মধ্যে যুক্তিবোধের অভাব আছে তাকে অন্যরাও রাগিয়ে মজা পায়। আসলে প্রচণ্ড ক্রোধে উন্মত্ততা ও ক্ষোভের প্রকাশ কারো জন্যই ভালো কিছু বয়ে আনে না।

কেন রাগ সংবরণ করবেন
রাগ আমাদের সুখী হওয়ার পথে বাধা তৈরি করে। কারণ সুখ ও ক্রোধ পাশাপাশি থাকতে পারে না। রাগের কারণে বৈবাহিক ও অন্যান্য পারিবারিক সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া সামাজিক অবস্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর ফলে। যে ক্ষেত্রে নমনীয় হলে আরো বেশি লাভবান হওয়া যেতো দেখা যায়। ব্যবসায়িক সুবিধাও নষ্ট হয়ে যায় রগচটা স্বভাবের জন্য। প্রতিনিয়ত রেগে যাওয়া যাদের স্বভাব তাদের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়তে থাকে এবং একইভাবে সেই মানসিক চাপ তাদের আরো বেশি ক্রোধের পথে ঠেলে দেয়। আমরা যখন রেগে যাই তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভুল করি। এর কারণ হলো ক্রোধোন্মত্ত অবস্থায় ব্রেইন তথ্যকে ঠিকভাবে প্রসেস করতে পারে না।

রাগের নেতিবাচক প্রভাব শুধু পরিবার, বন্ধু বা সহকর্মীর ওপরেই পড়ে না বরং এটা অনেক সময় একদম অপরিচিত লোক এবং নিজের ওপরও পড়ে। নিজের ভেতরের এ ক্রোধকে প্রকাশের ভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার সময় এখনই। নিজে থেকেই আপনি পদক্ষেপ নিতে পারেন আপনার রাগ প্রশমনের জন্য। এ ব্যাপারে আন্তরিক হলে রাগ নিয়ন্ত্রণের এ কার্যকর টিপসগুলো আপনাকে অনেকখানি সাহায্য করবে নিশ্চিতভাবেই।

কীভাবে রাগ সংবরণ করবেন
১. ছোট একটা ব্রেক নিন। এটা হয়তো পুরনো একটা আইডিয়া, প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে ১০ পর্যন্ত গুনুন অথবা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে আসুন। এটা আসলেই আপনার উত্তপ্ত অবস্থাকে নিষিক্রয় করবে।

২. দৈহিকভাবে শ্রমসাধ্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। কায়িক পরিশ্রম আপনার আবেগকে বের করে দেয়ার পথ তৈরি করে, বিশেষত নিজের ভেতরে যখন আপনি ফুটতে থাকেন তখন। কিছুক্ষণ এলোমেলো হাঁটতে যেতে পারেন কিংবা দৌড়ে, সাঁতার কিংবা বাস্কেটবল নিয়ে ঝাঁপাঝাঁপি।

৩. নিজেকে শান্ত ও নমনীয় করার উপায় বের করুন। গভীরভাবে দম নেয়ার এক্সারসাইজ প্র্যাকটিস করতে পারেন, কল্পনা করতে পারেন শিথিল হওয়ার মতো কোনো দৃশ্য কিংবা নিজেকে শান্ত করার জন্য কোনো শব্দ বা বাক্যাংশ বারবার আওড়াতে পারেন নিজের মধ্যে। যেমন সব ঠিক হয়ে যাবে অথবা Take it easy। আপনি মিউজিক শুনতে পারেন, পেইন্টিং করতে পারেন, লিখতে পারেন ডায়রি অথবা যোগব্যায়ামও করতে পারেন।

৪. একবার যখন ঠাণ্ডা হবেন তখন যতটা দ্রুত সম্ভব রাগকে প্রকাশ করুন যাতে নিজেকে আপসেটের মধ্যে থাকতে না হয়। যে মানুষটি আপনাকে রাগিয়ে দিয়েছে তার প্রতি নিয়ন্ত্রিত আচরণের মধ্য দিয়ে যদি রাগ প্রকাশ করতে না পারেন তাহলে পরিবারের সদস্য, বন্ধু, কোনো পরামর্শদাতা অথবা বিশ্বস্ত কারো সঙ্গে কথা বলুন।

৫. কিছু বলার আগে ভেবেচিন্তে নিন যাতে বলার পর সেটার জন্য আবার দুঃখ প্রকাশ করতে না হয়। প্রয়োজন হলে আপনার বক্তব্যকে লিখে ফেলুন এবং কয়েকবার রিহার্সাল দিয়ে নিন যাতে কথা বলার সময় ইস্যুর বাইরে চলে যেতে না হয়।

৬. পরিস্থিতির সমাধান খুঁজে পেতে আপনার উচিত যে আপনাকে রাগিয়ে দেয় তার সঙ্গে কাজ করা।

৭. সমালোচনা ও কটূক্তি এড়ানোর জন্য সমস্যাটিকে যখন ব্যাখ্যা করবেন বক্তব্যের মধ্যে ‘আমি’ ব্যবহার করুন। উদাহরণ হিসেবে-‘ঘরের কাজে তোমার সাহায্য করা উচিত ছিল’ বলার বদলে আপনি বলতে পারেন, ‘ঘরের কাজে আজ বিকেলে তুমি একটুও সাহায্য করলে না, এটা আমাকে খুবই আপসেট করেছে’। ভিন্নভাবে বলায় আপনি হয়তো ওই ব্যক্তিকেই আপসেট করে দেন ফলে তার টেনশনও বেড়ে যায়।

৮. হিংসা বা অসন্তোষ মনের মধ্যে ধরে রাখবেন না। অন্যকে ক্ষমা করুন। আপনার প্রত্যাশা অনুযায়ী সবার কাছ থেকে আচরণ পাওয়ার ব্যাপারটা মোটেও বাস্তবসমমত নয়।

৯. কৌতুক রস দিয়েও নিজের ভেতরকার টেনশন রিলিজ করতে পারেন। হয়তো নিজেকে অথবা অন্য ব্যক্তিটিকেই বিব্রতকর অবস্থায় কল্পনা করলেন আপনি। অবশ্য তীব্র ব্যঙ্গ করবেন না, এটা ভাব প্রকাশের আরেকটি বাজে উপায়।

১০. রাগ ওঠার মুহূর্তগুলোকে চিহ্নিত করে রাখতে একটি ডায়রিতে লিখে ফেলুন এবং এর প্রতিক্রিয়াগুলোকেও খেয়াল করুন।

১১. শিথিল হওয়ার দক্ষতা বাড়ান নিজের মধ্যে। শিখুন কীভাবে রিলাক্স হতে হয় এবং ঝেড়ে ফেলতে হয় স্ট্রেস। ফলে আপনার ভেতরের রাগটা যখন ফুঁসে উঠবে তখন সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন নিজেকে।

শেষ কথা
সাধারণত যেসব অবস্থার মুখোমুখি হলে রাগে ও ক্ষোভে ফেটে পড়েন যেসব অবস্থা থেকে সরে আসতে আলোচ্য টিপসগুলো হয়তো সহসাই প্রয়োগ ঘটাতে পারবেন না। এর জন্য দরকার হবে আপনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও সদিচ্ছা। উত্তেজনার মুহূর্তে নিজেকে সংবরণের কৌশল মনে রাখাটা সহজ কাজ নয়। তবে নিজে থেকেই ইচ্ছা করলে এ টিপসগুলোর প্র্যাকটিস করতে পারেন আপনি। কিন্তু যদি লক্ষ্য করেন তারপরও রাগের বহিঃপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না, আপনার সম্পর্কগুলোর মধ্যে ফাটল ধরেছে, অথবা ক্রমেই আপনি মারমুখী ভঙ্গির দিকে চলে যাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে প্রফেশনাল কোনো সাইকোথেরাপিস্টের সাহায্য নিন।

বিজ্ঞ দার্শনিক অ্যারিস্টটলের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করছি। তিনি বলেছেন, যে কেউই রাগ করতে পারে, এটা সোজা। কিন্তু সঠিক মানুষটির সঙ্গে, সঠিক মাত্রায়, সঠিক সময়ে, সঠিক উদ্দেশ্যে ও সঠিক উপায়ে রাগ দেখানোর ক্ষমতা সবার মধ্যে থাকে না। এটাই কঠিন।

goodboy:
Sujon,
For this post, I want to say a special "Thanks' to you.

" Rag shobar boshe thakena. Tai jara khub rag koren, tader jonno ei post ta asholei upokari hobe"

I have learnt many things from you, brother ;)......

nature:
How nice...........!
Rag shob somoy e kharap........tai Rag control korar ai post ta kubi opokar diba........very much helpful.

Sultan Mahmud Sujon:
আমি খুব খুশি
আসলে রাগতো বেশি ক্ষন থাকে না,তাই যতটুকু পারা যায় কন্ট্রোল করাই ভালো[/color]

sami:
Very nice and helpful.
Thanks for providing such helpful information.....

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

Go to full version