আপেলের অরণ্য হারশিল

Author Topic: আপেলের অরণ্য হারশিল  (Read 1531 times)

Offline Md. Azizul Hakim

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 93
  • Respect is everything.
    • View Profile
আপেলের অরণ্য হারশিল
« on: March 27, 2019, 03:58:32 PM »
আপেলের অরণ্য হারশিল

চোখ দুটো বন্ধ করে একবার ভাবুন তো, কোন এক পাহাড়ের কোলে, এক অচেনা অরণ্যের মাঝে হেলান দিয়ে বসে আছেন কোন এক গাছের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে। ঠিক কোন এক পাহাড়ের মাঝখানে। সবুজ পাহাড়ের নরম কোমল ঘাস মাড়িয়ে উপরের দিকে উঠে গেলেই পাথুরে পাহাড় আর তার পরেই বরফে জড়ানো পর্বত চুড়ার সারি। অথবা নিচের দিকে নেমে গেলেন বা তাকালেন দেখলেন পাহাড়ি লাল সবুজ বনভূমি নেমে গেছে অজস্র জলধারার উপরে হাজারো পাথরের উপরে। যে খরস্রোতা নদী পার হতে পারলেই আবারো সবুজ পাহাড়ের সিঁড়ি বেয়ে বরফের চূড়া থেকে উঠে যেতে পারবেন মেঘেদের সাথে, ভেসে বেড়াতে পারবেন ঝকঝকে নীল আকাশে।

এরপর চোখ মেলে তাকালেন ধীরে ধীরে। অবাক বিস্ময়ে দেখলেন যেখানে বসে ছিলেন তার চারপাশে ডানে-বামে যতদূর চোখ যায় শুধু রঙ বেরঙের আপেলের ছড়াছড়ি। গাছের তলায় ঝরে পরে থাকা অগনিত আপেলের ঝাঁক, গাছে গাছে ঝুলে থাকা লাল, খয়েরি, গোলাপি, আর সবুজ রঙের আপেল। যেন এক আপেলের অরণ্যে বসে আছেন আপনি। যার চারপাশটা কুয়াসায় ঘিরে থাকা পাহাড়, বরফে মোড়ানো পর্বত চূড়া, আর অনন্তকাল ধরে বয়ে চলা এক স্রোতধারা। গঙ্গার উম্মত্ত বয়ে চলা। আবার কোথাও এই একই গঙ্গার একদম ভিন্ন রূপে বয়ে চলা।

পাহাড় থেকে সমতলে নেমে গেছে নদী। একদম পথের সাথে মিশে গেছে কোথাও কোথাও। এতোটাই সমতল আর এতোটাই মসৃণ সেই নদীর বয়ে চলা যে অনেক যায়গায় চরের মত বিস্তীর্ণ বালুকা বেলা পর্যন্ত চোখে পরেছে। যে নুড়ি, পাথর আর বালুচর ধরে চলে যাওয়া যায় একদম নদীর বুকের মাঝে নিমিষেই। এমনকি কোথাও কোথাও তো নদী পেরিয়ে পাহাড়ি ঝর্নাধারায় পর্যন্ত চলে যাওয়া যায়।

যে নদীটি শুধু আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ ছুটে গেছে, পাহাড় থেকে পাহাড় পেরিয়ে, পাহাড়ের পায়ের পাতা জড়িয়ে অবিরাম ছুটে চলেছে প্রমত্তা, চির যৌবনা, অবিরত কুলকুল করে তার সরে বয়ে যাওয়া উম্মত্ত কোন বরফ গলা নদী, শত শত পাহাড়ের বাঁক আর বাঁধা পেরিয়ে যে ছুটে চলেছে, গ্রাম, শহর হয়ে দেশ থেকে দেশান্তরে।

প্রমত্তা পাহাড়ি নদীর সুর ছোঁয়া ওপারে আবারো পাহাড়ের হাতছানি। ঘন অরণ্যে আচ্ছাদিত পাহাড়ের সারি। স্তরে স্তরে উঠে গেছে ওপরে। এতটাই ওপরে যেন আকাশ ছুতে চায়, কোন কোন পাহাড়ের চূড়া! অরণ্যে ঘেরা সেই পাহাড়ের মাঝে মাঝে আলতো মেঘেদের ওড়াউড়ি আর লুকোচুরি। সবুজ অরণ্যে ঘেরা পাহাড়ের সিঁড়ি শেষ হতেই, রুক্ষ, গাছ বা ঘাসহীন পাথুরে পাহাড়ের ভিন্ন রকম আকর্ষণ। আর সেই পাথুরে পাহাড়ের সিঁড়ি পেরিয়েই পৌঁছে যাওয়া যাবে বরফে ঢাকা, তুষারে জড়ানো শুভ্র কোন পাহাড় চূড়ায়। ঠিক যেন আকাশের সাথে মিশে গেছে বরফ জড়ানো তুষার শুভ্র পাহাড় চূড়া!

আমিও এমন করেই আচ্ছন্ন ছিলাম, ঠিক কতক্ষণ জানিনা। হঠাৎ একটা পাহাড়ের বাঁকে এসে বেশ জোরে গাড়ি ব্রেক করতেই চেতনা ফিরে পেলাম। তবে হ্যাঁ কাঁচের জানালা দিয়ে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে দেখি হ্যাঁ আমি সত্যি, সত্যি-ই আপেলের অরণ্যের মধ্যেই আছি! আমাদের গাড়ি ছুটে চলেছে পাহাড়ে পাহাড়ে আচ্ছাদিত বাদামি রঙের গাছে ঝুলে থাকা রঙ বেরঙের আপেলের অরণ্যের মাঝ দিয়ে।

চারপাশেই পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে আর পুরো পাহাড় জড়িয়ে আছে আপেলের বাগান। লাল, সবুজ, গোলাপি আর খয়েরি রঙের কতশত আপেল। আর গাছের তলায়, সবুজ ঘাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অজস্র আপেল। সবকিছু মিলে এক অপার্থিব সকালের অপূর্ব স্বর্গীয় এক সকালের সবটুকু সুখ যেন ঘিরে ধরেছিল আমাদের চলার পথ, বাস আর তার চারপাশ।

কি ছিলোনা সেখানে? পাহাড়, পাহাড়ের নানা রকম রঙ রূপ আর ধরন। পাহাড়ে পাহাড়ে মেঘ, মেঘে মেঘে কতশত রঙের আয়োজন, পাহাড়ি নদী, কুয়াসা, সকালের ধোঁয়া ধোঁয়া জলের স্রোত, আঁকাবাঁকা সর্পিল পথ, হাজার পাহাড়ের হাতছানি, আপেলের স্বর্গীয় সুখ, পাহাড়ের গায়ে গায়ে সবুজে গড়িয়ে থাকা শত শত লাল গোলাপি আপেলের বিস্ময়।

ইচ্ছে হচ্ছিল বাস থেকে ওখানেই নেমে যাই। পুরো একটি দিন মনের সাধ মিটিয়ে ওই পাহাড়ে বসে থাকি, সবুজে গড়াই, মেঘেতে ভাসি, কুয়াসায় জড়িয়ে থাকি, ইচ্ছে মত আপেল কুড়াই, কিছু খাই, কিছু দিয়ে খেলি, নদীর স্রোতের সাথে পাহাড়ের তলদেশে মিলিয়ে যাই না হয় কোন এক বরফের চূড়ায় উঠে স্বর্গীয় সুখ উপভোগ করি। কিন্তু আগে থেকেই ঠিক করে রাখা কিছু যায়গা আর ভালো করে দেরাদুন শহর ঘুরে ঘুরে দেখবো বলে আর নামা হলনা। কিছুতা আক্ষেপ, কিছুটা কষ্ট আর একটুখানি মন খারাপ নিয়েই ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলাম।

বাসে সেই আক্ষেপ নিয়ে যেতে যেতে শুনছিলাম হারশিলকে নাকি উত্তরখণ্ডের কাশ্মীর বলা হয়ে থাকে। এখানে শীতে খুব বরফ পড়ে নদী, পাহাড়, অরণ্য সবকিছু শুধু শুভ্রতায় ঘিরে থাকে। চারদিকে শুধু বরফে আচ্ছাদিত এক অন্যরকম হারশিলের দেখা মেলে তখন। যে কারনেই নাকি হারশিলকে উত্তরখণ্ডের কাশ্মীর বলা হয়ে থাকে।

আর তাই মনে মনে ঠিক, ঠিক করে রেখেছি। একবার, একটা ভ্রমণ বা এরপর ওইদিকে গেলে একদিন, পুরো একটি দিন শুধু হারশিলে থাকবো, পাহাড়ে গড়াবো, নদীতে ডুববো, আপেল কুড়াবো, কুয়াসার জড়াবো, যেখানে খুশি আর যা খুশি তাই করবো। এই আপেলের অরণ্য হারশিলে। হয় কোন আপেলের সময়ে নয়তো কোন বরফে জড়ানো হিম শীতল কোন এক সময়ে। হারশিলকে এতো এতো আর এতোই ভালো লেগেছে।

এই আপেলের অরণ্য হারশিল যাবার উপায়ঃ ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে কলকাতা। কলকাতা থেকে প্লেন বা ট্রেনে দেরাদুন। দেরাদুন থেকে মুশৌরি হয়ে উত্তরকাশী হয়ে হারশিল। বেশ অল্প খরচেই ঘুরে আসা যাবে হারশিলে।
তবে, এমন আপেলের অরণ্য পেতে হলে যেতে হবে অগাস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে।
Lecturer,
Department of CSE
azizul.cse@diu.edu.bd

Offline rayhanul.bba

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 219
  • Test
    • View Profile
Re: আপেলের অরণ্য হারশিল
« Reply #1 on: March 30, 2019, 02:22:05 AM »
Thanks for sharing.   
Md. Rayhanul Islam
Senior Lecturer
Department of Real Estate
Facuty of Business & Entrepreneurship
Daffodil International University

Offline Tapasy Rabeya

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 188
  • Always be happy and thankful to Allah with what yo
    • View Profile
    • TaRa_Profile
Re: আপেলের অরণ্য হারশিল
« Reply #2 on: December 04, 2019, 11:25:46 AM »
Informative :)
Tapasy Rabeya
Lecturer,
Department of Computer Science & Engineering.
Daffodil International University (DIU)

Offline drrana

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 325
  • Test
    • View Profile
Re: আপেলের অরণ্য হারশিল
« Reply #3 on: February 20, 2020, 07:52:15 PM »
informative

Offline Anhar Sharif

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 210
  • Test
    • View Profile
Re: আপেলের অরণ্য হারশিল
« Reply #4 on: February 22, 2020, 09:48:56 AM »
Thanks for sharing.
Md Anhar Sharif Mollah

Assistant Professor of Finance

Department of Business Administration

            &

Assistant Proctor

Daffodil International University

Cell: +8801758883609