ব্যবসায়িক চিন্তা নয়, খামারিদের জীবনমানও উন্নয়ন করছে প্রাণ ডেইরি

Author Topic: ব্যবসায়িক চিন্তা নয়, খামারিদের জীবনমানও উন্নয়ন করছে প্রাণ ডেইরি  (Read 1343 times)

Offline shafayet

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1024
  • Test
    • View Profile
গ্রামে খামারীদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ, এরপর প্রক্রিয়াজাতকরণ, সেখান থেকে কারখানায় এনে কীভাবে প্যাকেটজাত দুধ উৎপাদিত হয় তা দেখে তারকা ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, প্রাণ দুধ খাওয়ার উপযোগী। শুধু ব্যবসায়িক চিন্তা করে নয়, খামারিদের জীবনমান উন্নয়নেও কাজ করছে প্রাণ ডেইরি।

সম্প্রতি প্রাণ মিল্ক জার্নিতে অংশ নেয়া তারকা ও সমাজের নানা শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমনটি জানা গেছে।

প্যাকেটজাত দুধ কিভাবে উৎপাদিত হয়, তা অনেকের মনেই প্রশ্ন। আর এ প্রশ্নের উত্তর জানাতেই “PRAN Milk Journey” এর আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ দুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ ডেইরি।

এ জার্নিতে ঘুরে আসতে প্রতিষ্ঠানটি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে আহবান জানান। অনলাইন রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে Journey-তে অংশ নেয়ায় এ সুযোগ করে দেয়া হয়।

নির্বাচিত ভাগ্যবানদের প্রাণ ডেইরি তাদের অফিস থেকে সকালে এসি বাসে করে দর্শনার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয় PRAN Milk Journey-তে। এসময় ছিল ব্রেকফাস্ট এবং দুপুরের লাঞ্চ। পোঁছানোর পর প্রাণ ডেইরির বিভিন্ন প্রসেস দেখার পাশাপাশি খামারিদের সাথে করা হয় আলোচনা সভা। পরে সন্ধ্যায় নিয়ে যাওয়া হয় বিলাসবহুল রিসোর্টে। সেখানে আয়োজন করা হয় গান, আড্ডা, নানা ধরনের গেইম আর বার বি কিউ পার্টি।

পরদিন সকালে আবার রওনা করা হয় ডেইরি হাবের উদ্দেশ্যে। ব্রেকফাস্ট করে সেখান থেকে ভিলেজ মিল্ক কালেকশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। মূলত পাবনার চাটমোহর, নাটোরের গুরুদাসপুর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর ও বাঘাবাড়ি এবং রংপুরে প্রাণের হাব রয়েছে। এসব হাবের অধীনে থাকা দুগ্ধখামারিদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করা হয়।

পরে হাব থেকে দর্শনার্থীদের প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে প্রাণ ডেইরির মূল কর্মযজ্ঞ দেখানো হয়। নানা প্রক্রিয়াকরণের পর সেখানে কোনও প্রকার হাতের স্পর্শ ছাড়াই প্রস্তুত হয় প্যাকেটে মোড়ানো ইউএইচটি (আলট্রা হিট ট্রিটমেন্ট) ও পাস্তুরিত তরল দুধ তা দেখতে পারেন দর্শনার্থীরা। এসময় প্যাকেটজাত দুধের উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন তারা। প্রাণ ডেইরি কর্তৃপক্ষ তাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।

জার্নিতে ছিল ৬০ জন ভোক্তার পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিউটের কর্মকর্তারা, খামারি ও এনজিওকর্মীরা। এছাড়া অভিনেত্রী বাঁধন, স্বাগতা ও অভিনেতা ইমন ‘প্রাণ মিল্ক জার্নি’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রাণ ডেইরির দুগ্ধ সংগ্রহ প্রক্রিয়া দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

এ জার্নিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে প্রাণ ডেইরি কমপ্লেক্সে ‘প্রাণ ডেইরি হাব ও সম্ভাবনাময় দুগ্ধ শিল্প’ বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বৈঠকে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মাহবুব-ই-এলাহী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাদিরা সুলতানা, প্রাণ ডেইরি’র নির্বাহী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশরঞ্জন ভৌমিক বলেন, দেশের দুগ্ধশিল্প খাতের প্রসার হচ্ছে। ২০০৫ সালে দুধের উৎপাদন ছিল ১২ লাখ মেট্রিকটন। ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৯৪ লাখ মেট্রিকটনে দাঁড়িয়েছে। দুধের দাম না বাড়িয়ে উৎপাদন খরচ কমানো উচিত। উৎপাদন খরচ কমাতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে কৃষকরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাথুরাম সরকার বলেন, দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে খামারি পর্যায়ে নজর দিতে হবে এবং তারা যাতে লাভ করতে পারে সেজন্য দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ কমাতে হবে।

প্রাণ ডেইরি’র নির্বাহী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাণ ডেইরি সবসময় খামারিদেরকে দুগ্ধ উৎপাদনে উৎসাহ দিয়ে আসছে। শুধু ব্যবসায়িক চিন্তা করে নয়, খামারিদের জীবনমান উন্নয়নেও প্রাণ ডেইরি কাজ করছে।

তিনি বলেন, প্রাণ দুধ সংগ্রহের সময় এর গুণাগুণ, গন্ধ, রঙ ও ঘনত্ব জানতে বিভিন্ন টেস্ট করে। দুধে ফরেন পার্টিকেল, ময়লা রয়েছে কিনা বা দুধের স্বাদ ও গন্ধ অক্ষুণ্ন রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া দুধের ফ্যাট, সিএলআর, সিওবি, সোডা, অ্যালকোহলিক ও ফরমালিন টেস্ট করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে খামারিদের কাছে থেকে দুধ গ্রহণ করা হয়।

এদিকে প্রাণ ডেইরি বেকার ও অস্বচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে নানান মূখী কর্মকান্ড করছে। প্রশিক্ষক দিয়ে প্রশিক্ষণসহ আর্থিক সহায়তার জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।