বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে ব্যয় বাড়ছে। চলতি বছর এ খাতে ব্যয় গত বছরের চেয়ে ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৩ লাখ ৭৯ হাজার কোটি ডলারে (৩ দশমিক ৭৯ ট্রিলিয়ন ডলার) পৌঁছবে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এমনটাই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।
বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ঘটছে দ্রুত। সংশ্লিষ্ট খাত এখন ডিজিটাল ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এমন এক পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা ধারাবাহিকভাবে সংযুক্ত বিশ্বের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় চলতি বছর খাতটির যেমন প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশা করা হয়েছিল, বাস্তবে তেমনটা হবে না।
গার্টনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর ডাটা সেন্টার সিস্টেম বাজারে ব্যয়ে সবচেয়ে বেশি পতন দেখা যাবে। বাজারটিতে গত বছরের চেয়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যয় কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ডাটা সেন্টার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কম্পোনেন্টের সর্বনিম্ন গড় মূল্যের পতনের কারণে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
বিবৃতিতে গার্টনারের রিসার্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট জন-ডেভিড লাভলক বলেন, মুদ্রা অস্থিরতা ও সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দার কারণে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। যে কারণে গত প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) চেয়ে চলতি প্রান্তিকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যয় কিছুটা কমতে পারে। তবে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবেন। কারণ তারা প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আয় বাড়াতে আগ্রহী। তবে ব্যয়ের ধরন কিছুটা পাল্টে যাবে।
তিনি বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যয় বাড়ছে। আগামী কয়েক বছরেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে ব্যয় প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা শ্লথগতি দেখা যাবে। ভবিষ্যতে ডিজিটাল ব্যবসা, ব্লকচেইন, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), মেশিন লার্নিং (এমএন) ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
বৈশ্বিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যয় প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ক্লাউড প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদা। ক্লাউড বাজার এতটাই ক্রমবর্ধমান যে চলতি বছর ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে এর আকার ২১ হাজার ৪৩০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। গত বছর এ বাজারের আকার ছিল ১৮ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। সাধারণ ব্যবহারকারী কিংবা বিভিন্ন খাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন ও স্টোরেজের মতো সেবার চাহিদা বেড়েছে।
ক্লাউড প্রযুক্তি বাজারে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি আসবে সিস্টেম অবকাঠামো সেবা খাত থেকে। চলতি বছর সিস্টেম অবকাঠামো সেবা খাতে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। ক্লাউড সিস্টেম অবকাঠামো সেবা খাতে ব্যয় গত বছরের ৩ হাজার ৫০ কোটি ডলারের চেয়ে বেড়ে ৩ হাজার ৮৯০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। এখন ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশন অবকাঠামো সেবা খাত বৈশ্বিক ক্লাউড বাজারের বড় একটি অংশ দখল করে আছে। চলতি বছর এ খাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে। চলতি বছর ক্লাউড অ্যাপ্লিকেশন অবকাঠামো সেবা খাতে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।
জন-ড্যাভিড লাভলক বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান তথ্য কর্মকর্তাদের (সিআইও) জন্য প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল ব্যবসা খাতে সফলতার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। বিশেষ করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠান পাবলিক কিংবা প্রাইভেট খাতের হোক না কেন, এআইয়ের সহায়তায় ব্যবসা মডেল ঢেলে সাজানোর কোনো বিকল্প নেই। এআই তথ্যপ্রযুক্তি ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। যদিও বিভিন্ন ব্যবসা ও উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এআই ব্যবহারের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার বাজার বেড়েছে। এন্টারপ্রাইজ পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যয় এখন নির্দিষ্ট অনুষঙ্গে সীমাবদ্ধ নেই। ব্যয়সংকোচন ও উদ্ভাবন বাড়াতে ক্লাউড সেবায় আপগ্রেড এন্টারপ্রাইজ সফটওয়্যার বাজারের প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।
সূত্রঃ
http://bonikbarta.net/bangla/news/2019-04-20/194252/%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%A4%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%9F-%E0%A7%A9.%E0%A7%AD%E0%A7%AF-%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%A8-%E0%A6%A1%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%AA%E0%A7%8C%E0%A6%81%E0%A6%9B%E0%A6%AC%E0%A7%87/