বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমবেশি সবারই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে কারও যদি পরিবার-পরিজন, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কারও স্ট্রোক হয়ে থাকে, তাহলে এই সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে সে সম্পর্কে যদি আগে থেকে জানা যায় তাহলে প্রতিরোধ করা সহজ হবে। স্ট্রোক এড়াতে যে বিষয়গুলো মেনে চলা জরুরি-
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন: উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এখনই সাবধান হন। সঠিক সময়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে স্ট্রোকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য খাবারে কম পরিমাণে লবণ ব্যবহার করা উচিত। সেই সঙ্গে উচ্চ কোলেস্টরল যুক্ত খাবার যেমন -বার্গার, চিজ এবং আইসক্রিম ইত্যাদি বর্জন করুন। এছাড়া প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। সেই সঙ্গে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় ফলমূল ও শাকসবজি রাখুন। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন, ধূমপান বর্জন করুন।
ওজন কমান: স্থূলতা শুধু অসময়ে স্ট্রোক নয়, বিভিন্ন ধরণের অসুখ-বিসুখও তৈরি করে। এ কারণে ওজন বেশি থাকলে অবশ্যই বাড়তি মেদ ঝরিয়ে ফেলুন। এতে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যাবে।
বেশি করে শরীর-চর্চা করুন: নিয়মিত শরীর-চর্চা এবং ব্যায়াম করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কাও অনেকাংশে হ্রাস পায়।অল্প সময়ের জন্য হলেও সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন শরীর-চর্চা করুন।
অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন : ধূমপানের মতো অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানের কারণেও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
আর্টারিয়াল ফাইব্রিলেশন: হৃৎপিণ্ড যদি অনিয়মিত গতিতে হয়, হৃৎপিণ্ডে ক্লট তৈরি হতে পারে। এই ক্লট মস্তিষ্কে পৌঁছে গেলে, স্ট্রোক ডেকে আনে। এক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারও যদি অল্পতেই বুক ধড়ফড় করে বা শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন : ডায়াবেটিস থাকলে সতর্ক থাকুন। নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তের শর্করা পরীক্ষা করুন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন ওষুধ খান, খাদ্যতালিকার দিকে নজর দিন।
ধূমপান বন্ধ করুন: একাধিকভাবে ধূমপান শরীরের ক্ষতি করে। এতে রক্ত গাঢ় হয়ে যায়, যার ফলে ধমনীতে প্লাক বিল্ড—আপ বেড়ে যায়, যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ কারণে ধুমপান পরিহারে নজর দিন।
সাধারণত স্ট্রোক হলে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন-
১. শরীরের এক অংশ হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়ে
২. মুখ অসাড় হয়ে যায়
৩. অস্বাভাবিক এবং প্রচণ্ড মাথাব্যথা হয়
৪. দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসে
৫. দেহের অঙ্গ—প্রত্যঙ্গ অসাড় হয়ে যায়, কথা জড়িয়ে যায়
৬ .হাঁটার প্রকৃতি বদলে যায়।
শরীরে এসবে লক্ষণের কোনটি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
সূত্রঃ সমকাল