লিভার ক্যান্সার: কারণ লক্ষণ ও চিকিৎসা

Author Topic: লিভার ক্যান্সার: কারণ লক্ষণ ও চিকিৎসা  (Read 1683 times)

Offline sharifa

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 434
    • View Profile
লিভার ক্যান্সার এর লক্ষণ সমূহ
যে কোন বয়সের লোকই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। লিভার ক্যান্সারের ঝুকি পুরুষদের ক্ষেত্রে মহিলাদের চেয়ে ৪ থেকে ৬ গুণ বেশী। সাধারণতঃ ক্যান্সার হওয়ার আগে লিভারে সিরোসিস দেখা দেয়, তবে এর ব্যতিক্রম হওয়াটাও অস্বাভাবিক না। লিভার ক্যান্সারের রোগীরা প্রায়ই পেটের ডান পাশে উপরের দিকে অথবা বুকের ঠিক নীচে মাঝ বরাবর ব্যথা অনুভব করেন যার তীব্রতা রোগী ভেদে বিভিন্ন রকম। সহজেই ক্লান্ত হয়ে পরা, পেট ফাপা, ওজন কমে যাওয়া আর হালকা জ্বর জ্বর ভাব এ রোগের অন্যতম লক্ষণ। লিভার ক্যান্সার রোগীদের প্রায়ই জন্ডিস থাকে না, আর থাকলেও তা খুবই অল্প। রোগীদের খাওয়ায় অরুচি, অতিরিক্ত গ্যাস কিংবা কষা পায়খানার উপসর্গ থাকতে পারে- আবার কখনো দেখা দেয় ডায়রিয়া। পেটে পানি থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। অন্য ক্যান্সারের মতোই লিভার ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায়না। ক্যান্সার কোষ ক্রমশ বড় হতে থাকলে বা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়লে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়।

জন্ডিস
যদিও জন্ডিসে আক্রান্ত হলেই তা লিভার ক্যান্সারের জন্য হবেতা কিন্তু একদমই নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি লিভার ড্যামেজের প্রাথমিক লক্ষণ প্রকাশ করে। যা পরবর্তীতে লিভার ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। ত্বক ও চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া, ফ্যাকাসে মল ও  প্রস্রাব এ কোনো সমস্যা বা অস্বাভাবিক কিছু বুঝে থাকলে অবহেলা করা উচিৎ নয় বরং দ্রুত নিরাময়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। এর ক্ষেত্রে একদমই দেরি না করে সরাসরি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা দরকার।

জ্বর
জ্বরকে লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ হিসেবে গণ্য করাটা কঠিন। কারণ অনেক রোগের বা ইনফেকশনের সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। বা তাছাড়াও নানান কারণে আমাদের জ্বর হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে জ্বরকেই এর প্রধান লক্ষণ বলে গণ্য করা টা ঠিক নয়। তবে জ্বর বলা হচ্ছে তার কারণটা হল যে এই লিভার ক্যান্সার এর ক্ষেত্রেও জ্বর হয়ে থাকে। আর  পেট ফুলে যাওয়া বা পেটে ব্যথা হওয়ার সাথে যদি নিম্ন মাত্রার জ্বরে ভুগে থাকেন তাহলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।

পেটে ব্যথা
যদি আপনার পেটে ব্যথা অনুভব করেন, বিশেষ করে পেটের ডান পাশে নিয়মিত  ব্যথা হলে তা হতে পারে লিভার ক্যান্সারের জন্য। একজন অনকোলজিস্ট বা লিভার বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন সঠিক কারণ জানার জন্য এবং নিরাময়ের জন্য।

পেটে কোন ফোলা বা পিন্ড দেখা গেলে
উপরের বা নীচের পেটে ফোলা বা পিন্ডের মত অংশ দেখা দিলে তা হতে পারে লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ। এর পাশাপাশি পেট ভরা থাকার অনুভূতি থাকলে তা লিভার ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ হতে পারে।

অবসাদ
অবসাদ অনুভব করা লিভার ক্যান্সারের তেমন কোন তীব্র লক্ষণ প্রকাশ করেনা। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশ্রাম নেয়ার পরেও অনেক বেশি ক্লান্ত অনুভব করা অথবা দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজ করলেই পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লে অবহেলা করা উচিৎ নয়। এগুলোর পাশাপাশি যদি পেটে ব্যথা ও জ্বর থাকে তাহলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

ক্ষুধা কমে যাওয়া
কিছু ক্ষেত্রে পেট ভরা অনুভব করা বা ক্ষুধা কমে যাওয়া লিভার ড্যামেজের বা লিভার ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। ক্ষুধা কমে গেলে শরীরের ওজন কমে যায়। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের না হয়ে লিভারের কাজে বাঁধা সৃষ্টি করে বলে এমন হয়।

ফ্যাটি লিভার
লিভার কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে যা তার গাঠনিক উপাদানের ৫ থেকে ১০ শতাংশ তাকে ফ্যাটি লিভার বলে। যখন কোনো মানুষ তার দেহের প্রয়োজনের অতিরিক্ত চর্বি খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করে, তখন এ চর্বি ধীরে ধীরে তার কলা বা টিসুতে জমতে থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা মদ্যপানের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু যাঁরা মদ্যপানের সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁদেরও এই রোগ হতে পারে। সাধারণত মধ্যবয়সী মহিলাদের দেখা দেয়। স্থূলতা ফ্যাটি লিভারের একটি প্রধান কারণ। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির মাত্রা বেশি (হাইপার লিপিডেমিয়া), বংশগত, ওষুধ এবং বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য যেমন, মদ বা অ্যালকোহল, স্টেরয়েড, টেট্রাসাইক্লিন এবং কার্বন টেট্রাক্লোরাইড ইত্যাদি কারণে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। যাদের ওজন আদর্শ ওজনের ১০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি, তাদের ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকি বেশি। মুটিয়ে গেলে শিশুদেরও এ রোগ হতে পারে।

শেষ কথা
লিভারের ৮টি সেগমেন্ট আছে। যদি একসঙ্গে ৪টি ফেলে দেয়া যায় তাতেও ফল ভালো পাওয়া যায়। অপারেশন চলাকালে আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা দ্বারা বিশ্বে সার্জেন ক্যান্সার নির্ণয় করে সার্জারির মাধ্যমে তা নির্মূল করে থাকেন। লিভার ট্রান্সপ্লান্ট এখন আধুনিক বিশ্বে প্রায় হচ্ছে। ছোট টিউমারগুলো ইথানল ইনজেকশ দিয়ে ধ্বংস করা যায়। কেমোথেরাপিও ভালো ফল দেয় তবে তা প্রথম অবস্থায়।টিউমারের লক্ষণ দেখা দিলে তখন আর চিকিৎসার উপযোগী থাকে না। তাই শুরুতেই রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা করা দরকার। লিভার ক্যান্সার হতে পারে-এমন ব্যক্তিকে আলাদা করে তালিকাভুক্ত করা দরকার।  পরে নিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকারে। যাতে তাদের রোগ শুরু হওয়া মাত্রই ধরা পড়ে এবং সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়। রোগের প্রাথমিক অবস্থাই প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ভাল হয়।যেরকম  অবস্থই হোক না কেন কোনো রকম সূচনা পেলেই সবার আগে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন আর আপনার সন্দেহ ও সমস্ত অসুবিধে গুলো বা শারীরিক ক্ষয় ও ক্ষতির কথা ভালো করে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন। এই রজার ক্ষেত্রে একদম কোনো মোটেই ঢিলা দেবেন না তাতে বাড়তে পারে ভয়ঙ্কর ক্ষতি। ভালো থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন আর ভালো রাখার চেষ্টা করবেন।  ধন্যবাদ।
Dr. Sharifa Sultana
Assistant Professor
Department of Pharmacy,
Faculty of Allied Health Sciences,
Daffodil International University

Offline Anuz

  • Faculty
  • Hero Member
  • *
  • Posts: 1988
  • জীবনে আনন্দের সময় বড় কম, তাই সুযোগ পেলেই আনন্দ কর
    • View Profile
Informative..........
Anuz Kumar Chakrabarty
Assistant Professor
Department of General Educational Development
Faculty of Science and Information Technology
Daffodil International University