আমাদের সহ আমার চারপাশের বাবা মায়েদের দেখি আর ভাবতেছি। একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানো ও তাদের ভাল ভাবে যেন পড়াশোনা হয় তার জন্য় তাদের কত আপ্রান চেষ্টা। ছোট ছোট ছেলে মেয়েদেরও কত অমানুষিক কষ্ট করতে হয় তাদের নিজেদের শিক্ষার জন্য।
যখন দেখি মায়েদের সারাদিনের অন্যতম কাজ হচ্ছে সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া ও আনা। তাদের লেখাপড়ার খবর নেয়া। তাদের পড়ানো। এইটাই একজনের ফুল টাইম জবের সমান। সন্তানকে স্কুলে দিয়ে স্কুল ছুটি হওয়া পর্যন্ত স্কুলের বাইরে গার্জিয়ানরা বসে থাকে। কি ঝড় কি বৃষ্টি কি শৈত্যপ্রবাহ!! শুধু স্কুল হলে কথা ছিল। স্কুলের পরে কোচিঙয়ের জন্য ও রাত আটটা নয়টা পর্যন্ত তারা কোচিঙয়ের সামনের রাস্তায় অপেক্ষা করে চলে। ফুটপাথে বসে থাকে। সন্তানদেরও দিন শুরু হয় ভোর সকালে আর শেষ হয় রাত আটটা নয়টায়। তারা খেলার সময় পায় না। দুপুরের বিরতি তো কবেই শেষ হয়ে গেছে।
কাউকে কাউকে দেখি সন্তানকে অনেক দামি স্কুলে ভর্তি করিয়ে হিমশিম খান। কিন্তু সব কষ্টই স্বীকার করে যান শুধু সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চিন্তা করে।
আমাদের দেশে সন্তানের পরীক্ষার থেকে বাবা মায়ের পরীক্ষাই বেশী হয়।
আমাদের দেশের ঘরে ঘরে উকি দিলে এই একই চিত্র পাওয়া যাবে। তাদের সন্তানেরাও তাদের সাধ্য মত চেষ্টা করে যায় ভাল ফলাফল লাভের জন্য।
প্রতি বছর যে কোন পাবলিক পরীক্ষার ফল বের হলে পেপারে আসে কত পরিবারের কত হাসি কান্নার গল্প।
ভাবতেছি শিক্ষা মানে কি এই ধরনের কষ্ট? বাবা মা সহ পুরো পরিবার শিক্ষা লাভ করে চলা? এতে কি সহস্র কর্ম ঘন্টা নষ্ট হয় না? সামাজিক ব্যালেন্স নষ্ট হয় না?
আমরা জ্যামে বসে থাকি - কখন জ্যাম কাটবে? স্কুলে বসে থাকি কখন ছুটি হবে?
এই অস্বাভাবিক ঘটনা গুলোই আমাদের কাছে স্বাভাবিক ব্যাপার। আমরা সময়ই পাই না এইগুলো নিয়ে ভাবার।
সন্তানের কথা বাবা মা ভাবে। কিন্তু বাবা মাদের ভোগান্তি নিয়ে কাদের ভাবার কথা? তবে এই ক্ষেত্রে সব বাবা মায়েরাই এতিম বলে মনে হয়।