অল্প বয়সিদের মধ্যে বাড়ছে হিংসা। ভার্চুয়াল জগতের মোহে তারা সরে যাচ্ছে বাস্তবতা থেকে। এই অভিযোগে এর আগেও বিশ্বের একাধিক দেশে নিষিদ্ধ হয়েছে পাবজি (PUBG)। এবার সেই দেশগুলোর তালিকায় নাম উঠল জর্ডানের। ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য নিষিদ্ধ করা হলো এই অনলাইন গেম।
জর্ডানের টেলিকম নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের দাবি, ব্যবহারকারীদের ওপর কুপ্রভাবের জেরেই সরকারিভাবে নিষিদ্ধ করা হলো এই গেম। এদিকে জর্ডানে যথেষ্ট জনপ্রিয় পাবজি। দেশের যুবসমাজের মধ্যে এই গেমের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। এ নিয়ে এর আগেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সেই দেশের টেলিকম কর্তৃপক্ষ।
জর্ডানের মনোবিদদের দাবি, খেলার সময় অন্য খেলোয়াড়দের নৃশংসভাবে হত্যা করাই এই গেমের নিয়ম। এ ধরনের গেম-প্লে অল্প বয়সিদের মধ্যে হিংসার জন্ম দিতে পারে। তার পরেই পাবজি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইতিপূর্বে ইরাক ও নেপালে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাবজি। ভারতের গুজরাটেও নিষিদ্ধ এই গেম। ইন্দোনেশিয়ার আচে-তে নিষিদ্ধ এই গেম।
প্লেয়ার আননোউন্স ব্যাটল গ্রাউন্ড (পাবজি) সারা বিশ্বেই তুমুল জনপ্রিয়। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ কোটি অ্যাকাউন্ট আছে এই গেমে। প্রতি মাসে বিশ্বের প্রায় ২৭ কোটি মানুষ নিয়মিত এই গেম খেলে।
স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় আরও জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই অনলাইন গেম। পেশা হিসেবেও অনেকে বেছে নিচ্ছেন পাবজি খেলা। ভারতসহ বিভিন্ন দেশেই পাবজি নির্মাতা বা অন্যান্য সংস্থা নিয়মিত টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। টুর্নামেন্টে জয়ী হলে থাকে মোটা অঙ্কের টাকা জেতার সুযোগ। সেই কারণে আরও বেশি করে এই গেমের দিকে ঝুঁকছে অল্প বয়সিরা।
পাবজি খেলতে খেলতে উত্তেজনায় কিশোরের মৃত্যু:
ভারতের মধ্য প্রদেশে পাবজি খেলতে খেলতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে এক কিশোর। ২৮ মে দুপুরের খাওয়া শেষ করেই মুঠোফোনে পাবজি খেলতে বসে ফুরখান কুরেশি। টানা ছয় ঘণ্টা একটানা খেলে হেরে যায় সে। এর পরেই উত্তেজিত হয়ে বাকি খেলোয়াড়দের ওপর চিত্কার করতে করতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পাবজি নামের এই অনলাইন গেম চালু হওয়ার পর থেকেই তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অচেনা একদল খেলোয়াড় মিলে একে অন্যের বিরুদ্ধে বা অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধে চলে যুদ্ধ। যে দল জেতে, তারা পায় চিকেন ডিনার ও লড়াই করার জন্য বিভিন্ন অস্ত্র। অত্যধিক আকর্ষণের জন্য খেলোয়াড়েরা দিন-রাত তাদের মোবাইলে মগ্ন থাকে, পারিপার্শ্বিক জগতের দিকে কোনো খেয়াল থাকে না।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, এই গেমের নেশা থেকে মুক্তি পেতে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ এই গেম ও মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকতে হবে।