ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ও কাদিরডাঙ্গা গ্রামের ডি কে প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ভরাট করেছেন এলাকার ছয় শতাধিক মানুষ।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চার বন্ধু ও স্থানীয় কোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঝুড়ি-কোদাল হাতে নিয়ে গতকাল রোববার সকাল আটটার মধ্যে স্কুলের মাঠে হাজির হয়েছেন ছয় শতাধিক মানুষ। তাঁরা দিনভর মাটি কেটে বিদ্যালয়ের মাঠের বিশাল গর্ত ভরাট করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজনিন নাহার বলেন, ‘বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে ১৮৫ জন ছেলেমেয়ে ভর্তি হয়। এরপর শিক্ষার্থী বেড়েছে, কমেনি। বর্তমানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। বাঁশের চাটাই দিয়ে ঘেরা তিনটি কক্ষে ক্লাস নেওয়া হয়। একটি কক্ষ শিক্ষকেরা ব্যবহার করেন। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ও পড়ালেখার মান ভালো। কিন্তু বড় সমস্যা হলো, বিদ্যালয়টি নিচু জায়গায় হওয়ায় বর্ষার সময় পানি জমে থাকে। শিশুরা পানি পাড়ি দিয়ে আসতে পারে না। এ অবস্থার কথা প্রতিষ্ঠাতাদের জানিয়েছিলাম।’
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন দৌলতপুর গ্রামের কাজী এমদাদুল হক জানান, তাঁর গ্রাম ও পাশের কাদিরডাঙ্গা গ্রামে বিদ্যালয় ছিল না। ২০০৯ সালে অপর তিন বন্ধু একই গ্রামের ইসাহাক আলী ও মিকাইল হোসেন এবং কাদিরডাঙ্গা গ্রামের আতাউর রহমানের সঙ্গে মিলে দুই গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের পাশে তাঁরা জমি কেনেন। তাঁরা সেখানে প্রতিষ্ঠা করেন একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নাম দেন ডি কে প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি এখনো রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হয়নি। সরকারি কোনো সহযোগিতাও পায়নি। এ কারণে এলাকাবাসীকে নিয়ে মাঠে মাটি ভরাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল আজিম ও ভাইস চেয়ারম্যান তিথি রানী ভদ্র তাঁদের সঙ্গে মাটি কাটেন। এ সময় স্থানীয় সাংসদ আবদুল মান্নান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনজুমান আরা, উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু সরকার বেশ কিছু বিদ্যালয় জাতীয়করণ করবে, যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। এই বিদ্যালয়টি সেই তালিকায় রয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে এখানে ভবন হবে।’
Source:
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-12-12/news/208119