কোলাজ :
শিল্পকলায় কোলাজ হলো কোনো কিছু যেমন কাগজ বা কাপড়ের টুকরো ক্যাননভাস বা অন্যকোনোধারকে লাগানোর মাধ্যমে কোনো ছবি বা শিল্পকর্মকে প্রকাশ করা। এই শব্দটির অর্থ হলো কোনো কিছু আটা দিয়ে লাগানো (pasting বা gluing)। বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে এটি চিত্র শিল্পে একটি বিপ্লবের মতো ছিলো। কোলাজে একজন শিল্পী তার আশপাশের সাধারণ বস্তু যেগুলো সহজেই পাওয়া যায় যেমন -খবরের কাগজের ক্লিপিং, রিবন, রঙিন কাগজের টুকরা, ছবি, তার, কাপড়ের টুকরা ইত্যাদি আটা দিয়ে কোনো সমতল অবলম্বনে যেমন ক্যানভাস, বোর্ড, কাঠ ইত্যাদিতে লাগিয়ে থাকেন।
কোলাজের কৌশলগুলো ২০০ খ্রিস্টপূর্বে চীনে কাগজ আবিস্কারের সময় প্রথম ব্যবহৃত হয়। কোলাজের ব্যবহার ১০ শতাব্দী পর্যন্ত জাপানে খুব সীমিত পর্যায়ে বিশেষ করে হস্তলিপি শিল্পীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো।
ত্রয়োদশ শতাব্দীততে ইউরোপে কোলাজের প্রচলন শুরু হয়। তখন কোলাজের কাজে বিশেষ করে ধর্মীয় ছবি, প্রতিমা, অস্ত্র ইত্যাদিতে মূল্যবান ধাতু ও পাথর ব্যবহার করা হতো।
কোলাজ শব্দটি বিংশ শতাব্দীতে র্জজ ব্রাক (George Braque) এবং পাবলো পিকাসো উদ্ভাবন করেন যখন কোলাজ আধুনিক শিল্পকলায় একটি স্বতন্ত্র ধারা হিসেবে বিকাশ লাভ করে এসেছে। কোলাজ একটি শিল্প উৎপাদন কৌশল, প্রাথমিকভাবে চাক্ষুষ কলা, যেখানে আর্টওয়ার্ক এর বিভিন্ন ফর্ম একটি সমাবেশ থেকে তৈরি করা হয়, এইভাবে একটি নতুন শিল্প তৈরি।
প্রথম উদাহরণ, ছোট ছোট পত্রপত্রিকা, ম্যাচ বক্স, থ্রেড, নখ (নখ), ফটোগ্রাফ এবং অনুরূপ পোষাক দ্বারা কাজটি আকৃতির আকার ধারণ করার চেষ্টা করছে। দাদা এবং অতিরিওবাদ উপন্যাস সংগঠন, প্রতীক এবং রূপক প্রভাব তৈরি করতে বিভ্রান্তিকর চিত্রগুলিকে একত্রিত করার জন্য একত্রিত হয়েছে। আর্নস্টের "এক শত মাথাটি" একটি সাধারণ উদাহরণ। এছাড়াও, কোলাজ শব্দটি ত্রিমাত্রিক ত্রিভুজসংক্রান্ত কাজগুলিতে প্রয়োগ করা হয়েছিল ।
কোলাজের শৈলীটি বাস্তবানুগ, মাধ্যমটিতে দক্ষতার গুণে ছবিকে সহজেই রসোত্তীর্ণ করা যায়। ছবিতে রঙের বিন্যাস, আলোছায়ার খেলা, সর্বোপরি বিষয়ের উপস্থাপনা চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়। ছবিতে ইলাস্ট্রেশনধর্মীতার মাধ্যমে গ্রাম্য ল্যান্ডস্কেকে স্বতঃস্ফূর্ত, কোথাও কোনও কৃত্রিমতা ছাড়াই বিচিত্রবর্ণের আকাশ, জলের বুকে তার টলমলে ছায়া, কর্মরত মানুষ, কোথাও মুরগি-লড়াইয়ের দৃশ্য, কোনও ছবিতে সাঁওতালি নাচের উন্মাদনা, গাছের ডালে ফুলের বাহার অত্যন্ত মনোরম ভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়।
মোঃ সামাউন হাসান (Samaun Hasan)
প্রভাষক
মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি (এমসিটি) বিভাগ
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি