ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আলট্রাবুকগুলো, আর তার সাথে সাথে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে ইথারনেট পোর্ট। ল্যাপটপ এবং ডেস্কটপও হয়ে উঠেছে বেতার কেন্দ্রিক। তাহলে, ইথারনেট পোর্ট কি বিলুপ্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে? না, বরং উল্টোটাই সত্যি হয়ে উঠেছে। স্ট্রিমিং ভিডিও এবং সামাজিক নেটওয়ার্ক এর ব্যাপক ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে উচ্চ গতির নেটওয়ার্ক নির্ভর ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো এখনো তারের উপর নির্ভর করে। ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স (আইইইই) এর আশঙ্কা ২০২০ সালের মধ্যে শুধুমাত্র লগজ্যাম দূর করার জন্য এ ধরণের বিশাল আকৃতির নেটওয়ার্কগুলো ১০ টেরাবিট ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হবে। এক সমীক্ষার মাধ্যমে স্ট্যান্ডার্ড বডি জানতে পেরেছে প্রতি আঠারো মাসে কোর নেটওয়ার্ক ব্যবহার দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে এবং প্রতি দশ বছর পর পর ব্যান্ডউইথের পরিমাণ ১০০ গুণ বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হবে।
আইইইই'র (IEEE) প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিবছর নেটওয়ার্ক ডাটা ক্যাপাসিটি দ্বিগুণ পরিমাণে বৃদ্ধি পায়, যার ফলে ২০১৫ সালের মাঝে গ্রাহকের প্রয়োজন হবে প্রতি সেকেন্ডে এক টেরাবিট গতি এবং ২০২০ সালে প্রয়োজন হবে ১০ টেরাবিট
কনসেন্সাস গ্রুপের প্রধান জন ডি'অ্যামব্রোজিয়া বলেন, "২০১৫ সালের জন্য আমাদেরকে ২০১০ সাল অপেক্ষা দশ গুণ ব্যান্ডউইথ সমর্থন করতে হবে, এবং ২০২০ সালে ২০১০ সাল অপেক্ষা একশ গুণ।"
আর তাই ভবিষ্যৎ গতি কত হবে তা নির্ধারণ করার জন্য হাইয়ার-স্পিড ইথারনেট কনসেন্সাস গ্রুপ একটি মিটিংয়ের আয়োজন করেছে। এই মুহূর্তে দুটি দল কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে। একদল মনে করছে ভবিষ্যৎ স্ট্যান্ডার্ড সর্বোচ্চ ৪০০ গিগাবিট হতে পারে অন্যদল ১ টেরাবিট।
যদিও সকলের প্রচেষ্টা হবে সর্বোচ্চ গতিকেই স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে নির্ধারণ করা কিন্তু এক টেরাবিটের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বর্তমানে তথ্য কেন্দ্র এবং এন্টারপ্রাইজগুলো যে ১০০ গিগাবিট গতির কপার সংযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করে তা কয়েকটি ধীর গতির তার একত্রিত করে একক উচ্চ-গতির সংযোগ সৃষ্টি করে থাকে। পদ্ধতিতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে, যেমন ধরুন আকৃতি, এ দ্বৈত-চ্যানেল বিশিষ্ট টেরাবিট সংযোগের জন্য ৮০ টি তার একত্রিত করতে হবে (২৫ গিগাবিট সংযোগকে ১৬ টির একটি গ্রুপ তৈরি করলে পাওয়া যায় ৪০০ গিগাবিট, ৪০ টির গ্রুপ করলে পাবেন এক টেরাবিট আর উভয় দিকে তথ্য প্রেরণের জন্য ডাবল করলে প্রয়োজন হবে ৮০ টি সংযোগ); প্রতিটি তারের জন্য প্রয়োজন হবে আলাদা আলাদা যন্ত্রাংশ যার ফলে খরচ বৃদ্ধি পাবে। ধারণা করা হচ্ছে এক্ষেত্রে কপারের পরিবর্তে ফাইবার ব্যবহার করা হবে যার ফলে গতি তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি এবং ওজনও কমে আসবে।
সাধারণ পিসিতে আরজে-৪৫ সংযোগ এবং কপার তার ব্যবহার করা হলেও যে সকল ব্যবহারকারী ১০০ গিগাবিট/পিএস ইথারনেট ব্যবহার করেন তাদের সিস্টেমে ফাইবার-অপটিক এবং কপার প্রযুক্তি উভয় সংযোগ ব্যবস্থা থেকে থাকে। কপার ফাইবারের চাইতে সস্তা হলেও অনেক দূরবর্তী সংযোগের জন্য প্রয়োজন ফাইবার। আজকের ৪০ গিগাবিট এবং ১০০ গিগাবিট সংযোগ ব্যবস্থায় কপার তার সর্বোচ্চ পাঁচ মিটার লম্বা হতে পারে।
আগামী প্রজন্মের ইথারনেট গতি কত দ্রুত হবে সে সংক্রান্ত সম্মেলনটি আগামী মাসের শেষে জেনেভায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গিয়েছে।