শামসুদ্দিন মিয়ার কাছ থেকে ৮ শতাংশ জমি কিনেছেন কামরুল ইসলাম। আর তাই অনলাইনে নামজারি আবেদন করতে গাজীপুরের গাছা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কয়েক দিন আগে এসেছিলেন তিনি। শামসুদ্দিন বলেন, ‘জমির নামজারি আবেদন অনলাইনে করার পদ্ধতি বেশ সহজ। আগে কাজটি জটিল ও সময়সাপেক্ষ ছিল।’
জমিসম্পর্কিত সাধারণ কিছু তথ্য জানা থাকলে বিষয়টি তত জটিল মনে হবে না। জমিতে মৌজা হিসাবে খতিয়ান নম্বর দেওয়া হয়। মৌজা হচ্ছে একটি জেলার অধীন ছোট আকারের এলাকা। খতিয়ানের মধ্যে মালিকানার তথ্য (মালিকের নাম, জমির পরিমাণ ইত্যাদি) লেখা থাকে। গত ১০০ বছরে সরকার বিভিন্ন সময়ে জরিপের (সিএস, এসএ, আরএস, সিটি বা মহানগর, দিয়ারা ইত্যাদি) মাধ্যমে জমির মালিকানার রেকর্ড তৈরি করেছে। একটি রেকর্ড থেকে হাতবদলের মাধ্যমে মালিকানার সর্বশেষ অবস্থা জানতে প্রতিটি পর্যায়ের খতিয়ান মিলিয়ে দেখতে হয়। খতিয়ান পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করলে ডাকঘরের মাধ্যমে তা আবেদনকারীর ঘরে পৌঁছে দেয় ভূমি মন্ত্রণালয়।
ভূমি মন্ত্রণালয় ই-নামজারি ব্যবস্থা চালু করেছে। সফটওয়্যারভিত্তিক এ ব্যবস্থায় উন্নয়নের পাশাপাশি এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান বিজনেস অটোমেশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদুল হাসান জানান, নামজারি সিস্টেম নিয়মিত হালনাগাদ করা হচ্ছে। জনগণের কাছ থেকে পাওয়া মতামত পর্যালোচনা করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় সফটওয়্যারে নতুন নতুন সংশোধন ও সংযোজন করা হচ্ছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানালেন, ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে সারা দেশে একযোগে শতভাগ ই-নামজারি বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু হয়। এখন তিনটি পার্বত্য জেলা ছাড়া বাকি ৬১ জেলার সব উপজেলা ভূমি ও সার্কেল অফিস এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু রয়েছে। অনলাইনে আবেদনের সময় ১ হাজার ১৭০ টাকা অনলাইন পেমেন্ট করলেই ২৮ দিনের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করা যায়। এ জন্য আগে গড়ে ৭৭ দিন সময় লাগলেও এ বছর থেকে মাত্র ২৮ দিনেই নামজারি করা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এই সময় আরও কমবে।
শিগগিরই ক্রয়সূত্রে নামজারির জন্য একটি সহজ ফরম ও তথ্যবহুল পোর্টাল চালু করা হবে। নামজারিতে নির্ভুল নাম লেখার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে আন্তসংযোগ করা হয়েছে। প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্টে ডেটাবেস ও প্রতিষ্ঠানের জন্য আরজেএসসি ডেটাবেসের সঙ্গে আন্তসংযোগ স্থাপনেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চালু করা হয়েছে কল সেন্টার (১৬১২২)।
নামজারি যেভাবে করবেন
উত্তরাধিকার, ক্রয়সূত্রে বা অন্য কোনো উপায়ে জমির কোনো মালিক নতুন হলে তাঁর নাম খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারি বলে। উত্তরাধিকারসূত্রে মালিকানার ক্ষেত্রে আপস বণ্টননামা করে নিজ নামে জমির খতিয়ান করে রাখা প্রয়োজন।
ই-নামজারি করতে হলে ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর ই-নামজারি আইকনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে। আবেদন ফি বাবদ ৭০ টাকা (কোর্ট ফি ২০ টাকা, নোটিশ জারি ফি ৫০ টাকা) অনলাইনে (একপে, উপায়, রকেট, বিকাশ, নগদ, ব্যাংকের কার্ড) পরিশোধ করতে হবে।
নামজারির হালনাগাদ তথ্য মুঠোফোনে বার্তার মাধ্যমে জানা যাবে। অনলাইনে শুনানি করতে চাইলে ওয়েবসাইটে অনুরাধ জানাতে পারবেন। আবেদন অনুমোদিত হলে নাগরিক ডিসিআর ফি ১ হাজার ১০০ টাকা জমা দিলেই নির্দিষ্ট মুঠোফোন নম্বরে বার্তা আসবে। এরপর নিজেই থেকে অনলাইন ডিসিআর এবং নামজারি খতিয়ান সংগ্রহ করতে পারবেন।
অনিয়ম হলে
ই-নামজারি বিষয়ে যেকোনো অনিয়ম হলে কল সেন্টারে (১৬১২২) ফোন করে এবং ঠিকানার ওয়েবসাইটে অভিযোগ করা যাবে।
https://land.gov.bd/en/http://oh.lams.gov.bd/https://mutation.land.gov.bd/Source:
https://www.prothomalo.com/technology/%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%9C%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF