Religion & Belief (Alor Pothay) > Various Sura & Dua

লাইলাতুল কদরে মহানবীর দোয়া

(1/1)

Khan Ehsanul Hoque:
লাইলাতুল কদরে মহানবীর দোয়া
পবিত্র মাহে রমজান প্রায় শেষপ্রান্তে। বসন্ত মৌসুমে ফুটন্ত ফুলের সমারোহ হতে মধু আহরণ করে মৌ-মক্ষিকা যেমন সেই মৌসুমকে সার্থক করে তেমনিভাবে একনিষ্ঠ চিত্তের খোদা প্রেমিকগণ রমজানে নিবেদিত ইবাদত গোজারের মাধ্যমে জীবনোদ্দেশ্যকে সার্থক করে এবং আবিষ্কার করে নেয় রমজানের সেই রাতটিকে যে রাতের ইবাদত হাজার মাস অর্থাৎ ক্রমাগত ৮০ বছর ইবাদতের চেয়েও অধিক মর্যাদাবান, আর এ রাতটির অস্তিত্য রমজানেরই শেষাংশের কোন এক বিজোড় রাত্রিতে। মহান এ রাত সম্পর্কে আল্লাহপাক তাঁর পবিত্র গ্রন্থ, আল কোরআনে বলেন, “এবং তোমাকে কিসে অবহিত করবে যে, ‘লাইলাতুল কদর’ কি? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। ঐ রাতে ফেরেশ্তাগণ এবং কামেল রূহ সকল তাদের প্রতিপালকের হুকুম অনুযায়ী যাবতীয় বিষয়সহ নাযেল হয়” (৯৭:৩-৫)।

এ রাত কখন আসে, কিভাবে আসে এবং কেমন আরাধ্য আত্মার কাছে মহিমান্বিত এ রজনী ধরা দেয়, সে বিষয়ে আমাদেরকে অবগত হতে হবে। হজরত রাসূল পাক (সা.) বলেছেন, “তোমাদের জীবনে আগত প্রতিটি রমজানের শেষ দশকের কোন এক বেজোড় রাত্রিতে এ সম্মানিত রজনীকে সন্ধান করো।” (বোখারি)

অর্থাৎ রমজানের ত্রিশটি দিবস অসম্ভব কঠোর সাধনায় অবিরাম আরাধনার পর এ মাসের প্রায় শেষ প্রান্তে এসেই কেবল একজন আরাধক তার কাংখিত রাতের সন্ধান লাভ করতে পারে। আর এটাই হলো রমজানের নিবিড় ইবাদতের মর্মকথা। নদীর জলের মাছগুলো যেমন জেলের ছড়ানো জলের শেষ প্রান্তে এসে জমা হয় তেমনিভাবে রমজানের যতসব কল্যাণ তার সবটুকুই সে মাসের শেষ দশকে এসে সঞ্চিত হয় আর সেই অংশের কোন বেজোড় রাত্রিতেই আত্মগোপন করে থাকে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম ঐ রজনী, ঐশী জগতে যার নাম ‘লাইলাতুল কদর’।

অতএব ঐশী পুণ্যে পরিপূর্ণ এ রাতের সন্ধান লাভ করা কোন সাধারণ বিষয় নয় এবং এটি কোন সাধারণ কাজও নয়। যে মহাজন বছরের প্রতিটি দিবস ও রাত সাতিশয় সাধনায় দ্বীনের ইবাদতে ব্রত থেকে পুণ্যতায় পূর্ণ হতে পারবেন কেবল তিনিই সন্ধান পাবেন সে রাতের সওগাত সম্ভার। মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেন, “স্মরণ রেখো, আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে” (১৩:২৯)। মুমিন মাত্রই মাহে রমজানের পবিত্রতায় আল্লাহ স্মরণের মাত্রাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেয়, ইবাদতের একাগ্রতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। এমন কোন পুণ্যের কাজ নেই যা কিনা সে হাতছাড়া করে। আল্লাহ প্রেমিকের অন্বেষণ মাত্র একটাই থাকে আর তা হলো, লাইলাতুল কদরকে লাভ করা। এ প্রাপ্যতার মাঝেই সে আত্মার শান্তি আর এ উপার্জনের মাঝেই সে জীবনের সার্থকতা খুজে পায়। প্রতিটি বছর রমজান তার সেই স্বর্গ-সুধা প্রদানের জন্যই আমাদের প্রত্যেককে আহ্বান করে। আধ্যাত্মিক বসন্ত নিজের চমক দেখিয়ে যখন বিদায় নেয়ার ক্ষণে পৌঁছে যেত তখন মহানবী (সা.) কোমর বেঁধে নিতেন আর রমজানের কল্যাণরাজিতে নিজ ডালি ভরে নিতে কোন ত্রুটি করতেন না। তার (সা.) শেষ দশকের ইবাদত সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণিত একটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি রমজানের শেষ দশকে প্রবেশ করলে তিনি (সা.) তার রাতগুলো ইবাদতের মাধ্যমে জীবিত করতেন। সাথে সাথে তার (সা.) পরিবার পরিজনকেও জাগাতেন (বোখারি, কিতাবুস্ সওম)। একান্তভাবে আল্লাহকে পাওয়ার জন্য শেষ দশকে হুজুর (সা.) ইতিকাফে বসতেন এবং লাইলাতুল কদরের অন্বেষণে রাতগুলো ইবাদতের মাধ্যমে জাগিয়ে রাখতেন।

যদি আমরা আমাদের প্রণান্ত প্রচেষ্টা ও খোদার দয়ায় ভাগ্যের সুপ্রসন্নতার ফলে খোদার সেই নেয়ামত পেয়েই যাই তখন আমাদের কি করা উচিত?

এক্ষেত্রে রাসূল করিম (সা.)এর উপদেশ বাণী হলো, তিনি (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা লাইলাতুল কদরের সন্ধান পাবে, তখন এ দোয়াটি পাঠ করবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি, হে আল্লাহ্ তুমি অবশ্যই ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমা করাকে পছন্দ কর, কাজেই তুমি আমাকে ক্ষমা কর’ (তিরমিজি)।

আল্লাহতায়ালা আমাদের রোজাগুলো গ্রহণ করে নিয়ে আমাদের ক্ষমা করে দিন, আমিন।

Source: https://www.jugantor.com/islam-life/546357/%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B2-%E0%A6%95%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE

Navigation

[0] Message Index

Go to full version