ফলসিফিকেশন টেস্ট
কুরআন বলছে, তারা বুঝে শুনে বিশ্বাস করুক। আর আলহামদুলিল্লাহ, পশ্চিমের অধিকাংশ লোক বুঝে শুনে কাজ করে এবং তারা প্রশ্ন করে থাকে। প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত তারা সেটা মানবে না। কুরআনের মধ্যেও প্রশ্ন উত্তর আছে। আপনি কুরআন পড়লে দেখবেন, সেখানে ‘তায়ালু' বা ‘তারা প্রশ্ন করে' আছে ৩৩২ বার। আবার ৩৩২ বার বলা হয়েছে ‘কুল' বা বল। পাশ্চাত্যবাসীরা মদ আর জুয়া নিয়ে প্রশ্ন করে কুরআন তার উত্তর দিচ্ছে। কুরআন বুদ্ধিমান মানুষকে সন্তুষ্ট করে। আজকের দিনের মানুষ, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের মানুষ খুবই ব্যস্ত থাকে। সব সময় নতুন দার্শনিক তত্ত্ব আর নতুন জিনিস আসছে। সবকিছু পরীক্ষা করার সময় আমাদের হাতে নেই। এখন আপনি যদি নতুন কোন ফিলসফি কিংবা থিওরি নিয়ে আসেন, তাহলে তারা দেখবে যে, এটাকে ভুল প্রমাণ করা যায় কিনা।
এটাকে বলে “ফলসিফিকেশন টেস্ট।†পাশ্চাত্যবাসীরা ফলসিফিকেশন টেস্টে বিশ্বাস করে। প্রতিদিন মানুষ হাজার হাজার থিউরী আনছে। সবকিছু পরীক্ষা করার সময় কোথায়। যদি কোনভাবে থিওরীকে ভুল প্রমাণ করা যায়, তাহলে সেটাকে আমরা ভুল বলব। যদি ভুল প্রমাণ করতে না পারি তাহলে মেনে নেব। এ কারণেই আইনস্টাইন যখন “থিওরী অব রিলেটিভিট†বা আপেকিতা তত্ত্ব আবিষ্কার করলেন, তখন বলেছিলেন, আমার থিওরী ভুল প্রমাণ করতে পারলে মানতে হবে না। তাই ছয় বছর ধরে তারা পরীক্ষা করল এবং মেনে নিল। আর স্বাভাবিকভাবেই তিনি নোবেল পুরস্কার পেলেন। কুরআন একমাত্র ধর্মগ্রন্থ আর ইসলাম একমাত্র ধর্ম যেখানে “ফলসিফিকেশন টেস্ট†আছে। আর আমি অনেক ফলসিফিকেশন টেস্টের কথা বলেছি “কুরআন কি আল্লাহর বাণী†নামের ক্যাসেটে। আমি তার মধ্য থেকে একটি বলব যেটা পাশ্চাত্যবাসীকেও সন্তুষ্ট করবে। পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ৮২ নং আয়াতে বলা হয়েছে-
“তবে কি তারা কুরআন সম্বন্ধে অনুধাবন করে না? যদি কুরআন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসত, তাহলে সেখানে অনেক অসামঞ্জস্য থাকত। পরস্পর বিরোধী অনেক কিছু থাকত।â€
তাই কুরআনকে ভুল প্রমাণ করতে চাইলে শুধুমাত্র একটা অসামঞ্জস্য খুঁজে বের করুন। কুরআন ভুল প্রমাণিত হবে যদি বলেন, কুরআন আল্লাহর বাণী নয়। পরস্পর বিরোধী কিছু বের করুন, কুরআন ভুল প্রমাণিত হবে। কুরআনেই ফলসিফিকেশন টেস্ট আছে। বিভিন্ন সময়ে কুরআনের ফলসিফিকেশন টেস্ট হয়েছে। তবে আজকের দিনে এই টেস্টটা আরো যথার্থ। কারণ এটা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। আগের সময় ছিল সাহিত্য, কবিতার যুগ, সে সময় অন্যরকম ফলসিফিকেশন টেস্ট ছিল। ইসলাম সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ভুলের যে অভিযোগগুলো এসেছে সেগুলো মিথ্যা বৈ আর কিছুই নয়। আপনি যদি বিজ্ঞান সম্পর্কে জানেন, ফ্রান্সিস বেকন বলেছিলেন, “বিজ্ঞান সম্পর্কে অল্প জানলে আপনি হবেন নাস্তিক; কিন্তু বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক জানলে আপনি হবেন ঈশ্বরে বিশ্বাসী।†(চলবে)