আমি লোকমানকে প্রজ্ঞা দান করেছি এই মর্মে যে,আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হও। যে কৃতজ্ঞ হয়, সে তো কেবল নিজ কল্যাণের জন্যেই কৃতজ্ঞ হয়। আর যে অকৃতজ্ঞ হয়, আল্লাহ অভাবমুক্ত প্রশংসিত। যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বত্স, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু'বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে। পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে সে বিষয়ে তোমাদেরকে আমি জ্ঞাত করবো। হে বত্স, কোন বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় অতঃপর তা যদি থাকে প্রস্তর গর্ভে অথবা আকাশে অথবা ভূ-গর্ভে , তবে আল্লাহ তাও উপস্থিত করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ গোপন ভেদ জানেন, সবকিছুর খবর রাখেন। হে বত্স, নামায কায়েম কর, সত্কাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ। অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কন্ঠস্বর নিচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর ।
(সুরা লোকমান, আয়াত ১২-১৯)
যে ব্যক্তি সত্কর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমুখী করে সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে। সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। পৃথিবীতে যত বৃক্ষ আছে, সবই যদি কলম হয় এবং সমুদ্রের সাথেও সাত সমুদ্র যুক্ত হয়ে কালি হয়, তবুও তার বাক্যাবলী লিখে শেষ করাযাবে না। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(লোকমান, আয়াত ২২ ও ২৭)
[সূরা লোকমানের এই গুরুত্বপূর্ণ উপদেশগুলো মেনে চললে আমাদের ব্যাক্তি, পারিবারিক, সামাজিক জীবন অনেক সুন্দর হয়ে উঠবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে তাঁর কালামে পাক বুঝার এবং পুংখানুপুংরুপে আমল করার তাওফীক দান করুন। ]