Career Development Centre (CDC) > Discussion on Creative Problem Solving
Inflation-my point of view
(1/1)
bipasha:
অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতির ভয়াল থাবা
লেখক: মুনমুন শবনম বিপাশা | শনিবার, ১৬ জুন ২০১২, ২ আষাঢ় ১৪১৯
দেশের সাধারণ জনগণ বর্তমানে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয় তার মধ্যে প্রধান তিনটি সমস্যা হল যানজট, বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বা মূল্যস্ফীতি। তবে এ তিনটি সমস্যার মধ্যে সীমিত আয় এবং নির্দিষ্ট আয়ের জনগণের কাছে সবচেয়ে বেশি আলোচিত সমস্যা হলো মূল্যস্ফীতি। জিনিসপত্রের দাম এতটাই বেড়েছে যে, বর্তমানে সীমিত আয়ের লোকদের জীবনযাত্রার মান কমে যাচ্ছে। কারণ জনগণের আয় যে হারে বাড়ছে তার চেয়ে অধিক হারে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। প্রকৃত অর্থে রাজনৈতিক ক্ষমতাধর নেতা ও নেত্রীরা বুঝতে পারছেন না বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ কতটা কষ্টে আছে।
মুদ্রাস্ফীতির ভয়াল থাবা আমাদের দেশে কি প্রভাব ফেলেছে তার কয়েকটা উদাহরণ দিয়েই বুঝানো যায়। বাংলদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র তথ্য অনুযায়ী এপ্রিলে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৯.৯৩ শতাংশ। বেসরকারি হিসাবমতে সাড়ে ১০ শতাংশের উপরে। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর মতে, গত এক বছরের ব্যবধানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ১৩ শতাংশের মত।
আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যত্। এই শিশুদের খাদ্যও মূল্যস্ফীতির ভয়াল থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। প্রায় সব ধরনের শিশু খাদ্যের দাম বেড়েছে তিনগুণ। অবস্থা এমন হয়েছে যে তাদেরকে বাবা-মায়েরা পুষ্টিকর খাদ্যও ঠিকমত দিতে পারছে না। বাঁচার তাগিদে অধিকাংশ মানুষ আজ ভোগ্যপণ্যের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য আজ দেশের অনেক মানুষের পক্ষে মৌলিক চাহিদা পূরণ করাই অসম্ভব হয়ে পরেছে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিত্সা, শিক্ষা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যে দেশে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের দিকেই সরকার খেয়াল করে না, সেই দেশের কি করে অর্থনৈতিক অগ্রগতি চিন্তা করা সম্ভব। তা এক বিরাট প্রশ্ন। কারণ মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে না পারলে মানুষের উত্পাদনশীলতা কমে যায়।
ক্যাবের পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে খাদ্যদ্রব্যে মুদ্রাস্ফীতির হার প্রায় ১২.৭৭ শতাংশ। সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’ (টিসিবি) এবং বিপণন অধিদফতরের তালিকা বিবেচনা করলে দেখতে পাই যে গত বছর প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম ছিল ৯৮-৯৯ টাকা। এখন তা ১২২ থেকে ১২৬ টাকা। আর খোলা বাজারে এক কেজি সয়াবিনের দাম ১০০ টাকার বদলে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একবছর আগের ৫০৫ টাকার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হয় ৬৩০ টাকায়। আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। এছাড়া পামওয়েল ১০ শতাংশ, রুই-কাতলা মাছ ১২ শতাংশ, খাসির মাংস ১০ শতাংশ, গরুর মাংস ৪ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগিতে ২০ শতাংশ, চিনি ৬ শতাংশ, লবণ ২৫ শতাংশ, ডিম ১৯ শতাংশ, কাঁচা মরিচি ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে চলছে বাড়ি ভাড়া। ক্যাবের হিসাবে বলা হয়েছে ২০১১ সালে গড়ে শতকরা বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ১৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এর মধ্যে পাকা-বাড়িতে ১৩.২৭ শতাংশ এবং আধাপাকা বাড়ি ১৪.৭১ শতাংশ, মেসরুমে বেড়েছে ১৭.৩৯ শতাংশ, ও বস্তিতে বাড়ি ভাড়া বেড়েছে ১৭.৯৫ শতাংশ।
আর শিক্ষাক্ষেত্রের অবস্থা আজ এমন হয়েছে যে নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের সন্তানের জন্য সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করা অনেকক্ষেত্রে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে চিকিত্সাসেবার দামও বেড়ে চলেছে। এসব বিষয়ে সরকারের এখনই নজর দেয়া প্রয়োজন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক ব্যবসায়ী আবার ডলারের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে অযথা দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে চলে। এদিকে সরকারকে লক্ষ্য রাখতে হবে। মনিটরিং করতে হবে। আমাদের আয়ের চেয়ে বহুগুণে পণ্যসমূহের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের উচিত এই বিষয়ে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া। সেসাথে কৃষি বিপণন অধিদফতর ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কে লোকবল ও কারিগরি দিক থেকে উন্নত করা। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঙ্কোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু তারপারও মূল্যস্ফীতি খুব একটা কমছে না। এ অবস্থায় উত্পাদনের খরচ কমানোর জন্য জ্বালানির দাম নিম্নতর রাখার পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
mosharraf.xm:
বিগত ০৬ বছরে এই চিত্র খুব একটা উন্নত হয়নি বরং হয়েছে অবনতি। এখনো মূল্য স্ফিতী চরমে এবং বিশেষত গ্যাস, বিদ্যুত এবং জ্বালানীর দফায় দফায় দাম বাড়ানোটা সাধারন জনগনের নাভিশ্বাস উঠিয়ে দিচ্ছে। ব্যাপারটা খুবই পীড়াদায়ক। তার উপর গ্যাসের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। এসবের সমাধান আদৌ হবে কিনা জানা নেই। সবশেষে ভুক্তভোগী ওই সাধারন আম জনতাই।
Navigation
[0] Message Index
Go to full version