ধন্যবাদ বিকেএসপি.

Author Topic: ধন্যবাদ বিকেএসপি.  (Read 1672 times)

Offline Mohammed Abu Faysal

  • Administrator
  • Full Member
  • *****
  • Posts: 230
    • View Profile
ধন্যবাদ বিকেএসপি.
« on: June 20, 2012, 11:22:41 AM »
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়। মারকুটে ওপেনিং ব্যাটসম্যান আল শাহরিয়ার রোকন, পেস বোলার নিয়ামুর রশীদ রাহুল_ তাদের সঙ্গে আবদুর রাজ্জাক, মুশফিক, সাকিব, নাসির প্রত্যেকেরই একটা ব্যাপারে মিল রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই জাতীয় দলের খেলোয়াড়। কেউ বর্তমানে জাতীয় দলে খেলছেন। কেউ আগে খেলেছেন। তাদের প্রত্যেকের আরেকটি ব্যাপারে কিন্তু মিল আছে। তারা সবাই বিকেএসপির প্রাক্তন ছাত্র। তাহলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের জাতীয় ক্রিকেট দলের জন্য বিকেএসপি একটি বিশেষ উৎস, যেখান থেকে মানসম্পন্ন ক্রিকেটার সরবরাহ পাওয়া যায় এবং এর জন্য বিসিবিকে না খরচ করতে হয় অর্থ, না দিতে হয় শ্রম। বিকেএসপি তাদের নিজেদের কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই ক্রিকেটার বাছাই করে ছয় বছর প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে, ঢাকা লীগে খেলিয়ে থাকে। এমনকি বিদেশেও দল পাঠিয়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করে, বিদেশ থেকে কোচও নিয়ে আসে আরও ভালো প্রশিক্ষণের জন্য। এভাবেই বিকেএসপি ক্রিকেটারদের মেধা শানিত করে থাকে। এ এক সুবিন্যস্ত কার্যক্রম। প্রকৃতপক্ষে ছয় বছর একটি বিশাল সময়। ফলে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারটা সুবিন্যস্ত করা সম্ভব হয়। আগে একটি লেখায় বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। হয়তো মনে আছে আপনাদের। বিকেএসপি এ প্রতিভা অন্বেষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতি বছর ৪০০ ছেলেকে ৩০ দিনের ও তাদের থেকে বাছাই করা ২০০ জনকে ৬০ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
অতএব দেখা যাচ্ছে, বিকেএসপি শুধু গুটিকয়েক প্রতিভাবান ক্রিকেটারকেই দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দেয় না বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ক্রিকেটের প্রতিভাগুলোকে বাছাই করে, চিহ্নিত করে স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকে। বিকেএসপির একটি সুবিধা হলো ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি বা প্রশিক্ষণ সুবিধাদি। বিকেএসপির চারটি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিটিতে ক্রিকেট মাঠ, ইনডোর, হোস্টেল, একাডেমিক ভবন ইত্যাদি রয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, অদ্যাবধি বিসিবির প্রশিক্ষণ সুবিধা বলতে সে রকম কিছু নেই। আর বাংলাদেশ ওডিআই ও টেস্ট মর্যাদা লাভের আগে বিসিবির প্রশিক্ষণ সুবিধাদি হিসেবে দেখানো হয়েছিল বিকেএসপিকেই। যেখানে একাধিক ক্রিকেট মাঠ, ক্রিকেট ইনডোর, জিম, সুইমিং পুল, হোস্টেল, অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক এগুলো ছিল। সে তো টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আগের কথা। এখন থেকে অন্তত ১২ বছর আগের ব্যাপার। এখন প্রশ্ন, এই ১২-১৪ বছরে কয়েকশ' কোটি টাকার মালিক বিসিবি ট্রেনিং ফ্যাসিলিটির কী কী উন্নয়ন সাধন করেছে? ২০১২ ওয়ার্ল্ড কাপের আগে একাডেমী মাঠটি তৈরি করা হয়, যা নাকি লম্বায় ক্রিকেট মাঠের চেয়ে বেশ ছোট। ফলে এখনও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, প্রতিযোগিতা এগুলো ঠিকমতো সম্পন্ন করার জন্য বিসিবিকে বিকেএসপির দরজার কড়াটি নাড়া দিতে হয়। দেখুন পাঠক, দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে বিকেএসপি কীভাবে নীরবে-নিভৃতে কাজ করে চলেছে।
এত কিছুর পরও কোনো স্বীকৃতি কি বিকেএসপির প্রাপ্য নয়? বিসিবি কি এই স্বীকৃতিটা কখনও বিকেএসপিকে দিয়েছে? বিসিবি আর্থিক হয়তো কিছু সহায়তা করে থাকে। ভালো। কিন্তু এটাই কি যথেষ্ট? যারা আমাদের দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে এত কিছু করে যাচ্ছে, বিসিবির উচিত হবে তাদের দেখভাল করার, তাদের পরিচর্যা করার, তাদের সহযোগিতা করার সুযোগ সাদরে গ্রহণ করা। যেমন_ বিসিবি যেভাবে বিকেএসপির ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি ব্যবহার করে, একইভাবে বিকেএসপির প্রয়োজনে বিসিবির ফ্যাসিলিটি ব্যবহার করার সুবিধা পাবে। হতে পারে প্রশিক্ষণের ইনডোর বা ম্যাচ খেলার জন্য মাঠ বা অন্য কিছু। আবার যেমন_ পিচের মাটি, পিচ রোলার, পিচের ঘাস কাটা মেশিন ইত্যাদি দিয়ে সহযোগিতা করা যায়। একইভাবে ট্রেনিংয়ের অত্যাধুনিক সরঞ্জাম বিকেএসপিকে দেওয়া যায়।
বিসিবি কোচদের মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে বিকেএসপিকে বিশেষ সহযোগিতা দিতে পারে। এরই অংশ হিসেবে বিসিবির বিভিন্ন কোচিং কোর্সে বিকেএসপির কোচরা আমন্ত্রিত হয়েছেন। এসব কার্যক্রমে বিকেএসপির কোচদের আরও নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত করলে দেশের ক্রিকেটের জন্য মঙ্গলকর হবে। বিসিবি অনেক বিদেশি কোচ নিয়ে আসে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। বিকেএসপির কোচদের তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। তাতে তাদের জ্ঞানের ব্যাপকতা বাড়বে। এটা সত্যিই পরিতাপের বিষয়, আমাদের দেশের একটিসহ এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল দুটি লেভেল থ্রি কোর্স পরিচালনা করল। দেশের ১০-১২ জন কোচ অংশ নিলেন অথচ বিকেএসপির কাউকে এ কোর্স করানো গেল না। এটা কি দুঃখজনক নয়? যারা কোর্সের জন্য নাম মনোনয়ন করেছেন, তাদের বিভিন্ন যুক্তি থাকতে পারে, যেমন_ বিসিবির সব কোচকে লেভেল থ্রি করানো হলে তারপর লেভেল থ্রি কোর্সটা এলিট ক্রিকেটারদের কোচিং করানো প্রয়োজন। বিকেএসপিতে ক্রিকেটাররা ঊধর্ে্ব গেলে অনূর্ধ্ব-১৯ বছর বয়সের। আমার কাছে এ যুক্তির একটিও খাটে না। বিকেএসপির চিফ কোচকে সাদরে আমন্ত্রণ জানিয়ে লেভেল থ্রি কোর্সটা করানো দরকার ছিল। এতে তার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বাড়ত, উপকৃত হতেন বিকেএসপির ক্রিকেটাররা। তাতে সরাসরি লাভবান হবে বিসিবি। মনে রাখা দরকার, বিকেএসপির কোচকে উপেক্ষা করার অর্থ কিন্তু পরোক্ষভাবে বিকেএসপির ক্রিকেটারদের উপেক্ষা করা। আর বিকেএসপির ক্রিকেটারদের উপেক্ষা করাটা হবে একটা আত্মঘাতী কাজ। আজকের বিকেএসপির ছাত্রটি কয়েক দিন পর জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করবে। তাদের জন্যই কোচদের পরিচর্যা করা। বিসিবি টেকনোলজির দিক থেকে বিকেএসপিকে সহায়তা দিতে পারে। কোচিং সম্পর্কিত সফটওয়্যার যেমন_ সিলিকন কোচ ইত্যাদি প্রদান করতে পারে। তাতে বিকেএসপির কোচিংয়ের মান বৃদ্ধি পাবে। এগুলো নিয়ে বিকেএসপির সঙ্গে একটা চুক্তি হতে পারে যে, বিসিবি এই সুবিধাদি বিকেএসপিকে দিতে যাচ্ছে। বিকেএসপির এ ব্যাপারগুলো দেখাশোনার জন্য একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও একজন পরিচালকের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করাটা খুব কার্যকর হবে। ফলে সুনির্দিষ্টভাবে বিকেএসপিকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায় তারা তা করতে পারবেন।
পরিশেষে বলা যায়, বিকেএসপির অবদান ও সহযোগিতাগুলোর স্বীকৃতির মাধ্যমে বিকেএসপিকে অভিনন্দিত করা যায়, সেই সঙ্গে বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্কটার উষ্ণতা বৃদ্ধি করা যায়। যেহেতু বিকেএসপির কার্যক্রমের দ্বারা বিসিবি পরোক্ষভাবে উপকৃত হচ্ছে, সে জন্যই এ উদ্যোগ। এর মাধ্যমে দুই সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের সৃষ্টি হবে। ফলাফল হিসেবে দেশে ক্রিকেটের উন্নয়নের গতি দ্রুততর হবে।

Offline sumon_acce

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 359
    • View Profile
Re: ধন্যবাদ বিকেএসপি.
« Reply #1 on: June 20, 2012, 12:27:01 PM »
Thanks for sharing this.