পরিশ্রম ও বিশ্রামের যথাযথ সমন্বয়ই সুস্থ-সুন্দর জীবনের চাবিকাঠি। জানা এ তথ্যের সঙ্গে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জুড়ে দিয়েছেন আরো কয়েকটি বিষয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে সাত ঘণ্টা বা এর চেয়ে বেশি সময়ের ঘুম সুস্থ হৃৎপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর মাধ্যমে হৃদরোগ বা স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্যায়াম, সুষম খাবার এবং মদ্যপান বা ধূমপান কমানো হৃদরোগ বা মৃত্যু হ্রাসে যতটা উপকারী, এর চেয়েও বেশি কাজে দেয় রাতের পর্যাপ্ত ঘুম। নেদারল্যান্ডসের একদল গবেষক এক দশকেরও বেশি সময় ধরে হৃদরোগ ও স্ট্রোকে আক্রান্ত ১৪ হাজারের বেশি নারী-পুরুষকে নিয়ে কাজ করেন। গবেষণা শেষে দেখা যায়, তাঁদের মধ্যে ৬০০ জন হৃদরোগে ভুগছেন। আর মারা গেছেন ১২৯ জন বাকিরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
গবেষক দল জানান, যাঁরা চিকিৎসকদের নির্দেশনা অনুসারে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের চারটি শর্ত নিয়ম করে পালন করেছেন অর্থাৎ নিয়মিত ব্যায়াম করেছেন, স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখে সামান্য মদ্যপান করেছেন বা ধূমপান একেবারেই করেননি, তাঁদের মধ্যে অল্প কজনের মৃত্যু হয়েছে। গবেষকরা জানান, এ চারটি আচরণে অভ্যস্তদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ কম এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ৬৭ শতাংশ কমে যায়। তবে এ জীবনযাত্রার সঙ্গে যখন পর্যাপ্ত ঘুম যুক্ত হয় তখন হৃদরোগের ঝুঁকি ৬৫ শতাংশ এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি ৮৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
নেদারল্যান্ডসের বিলথোভেন প্রদেশে অবস্থিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ও ওয়েগেনিনজেন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলেন, 'সব অংশগ্রহণকারীরই যদি এ পাঁচটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস থকত, তাহলে তাদের ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত হৃদরোগ এবং ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যেত।' তাঁরা আরো বলেন, এ গবেষণার মূল বার্তা হচ্ছে, সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি ইউরোপীয় সাময়িকী 'প্রিভেন্টিং জার্নাল'-এ বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সূত্র : বিবিসি.